কারখানা ছিল তিন জনের। দু’জন নির্দিষ্ট অর্থের বিনিময়ে অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন। তার পরেও আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ (এডিডিএ) ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র না দেওয়ায় ব্যাঙ্ক ঋণ আটকে গিয়েছে বলে অভিযোগ দুর্গাপুরের এক শিল্পপতির। কারখানা চালাতে প্রশাসনের প্রয়োজনীয় সহযোগিতাও মিলছে না বলেও অভিযোগ সৌমিত্রকুমার সেন নামে ওই শিল্পপতির। দ্রুত সমস্যা না মিটলে কারখানা গুটিয়ে নিতে হবে, দাবি তাঁর।
সৌমিত্রবাবু জানান, দুর্গাপুরে এনএন বসু রোডে এডিডিএ-র ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পতালুকে ‘ফেব্রিকেশন’-এর কারখানা রয়েছে তাঁর। অংশীদার ছিলেন আরও দু’জন। পরে তাঁরা অংশীদারিত্ব ছেড়ে দেন। কিন্তু ১৯৯৫ সালে তাঁদের এক জন ফের অংশীদারিত্বের দাবিতে আদালতে মামলা করেন। ১৯৯৭ সালে সেই মামলা খারিজ হয়ে যায়। পরে তিনি আর একটি মামলা করেন। তাঁর অভিযোগ ছিল, যে জমিতে কারখানা সেটির লিজ চুক্তিতে তাঁরও নাম রয়েছে। মামলার নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত জমির চরিত্র বদল না করার আর্জি জানান তিনি। আদালত স্থিতাবস্থা বজায় রাখার নির্দেশ দেয়।
গত মার্চে সৌমিত্রবাবু এক সংস্থার কাছ থেকে কাজের বরাত পান। ১৬ জন কর্মী কাজ করেন সেখানে। অভিযোগ, মামলাকারী হঠাৎ কয়েক জনকে নিয়ে এসে হুমকি দেন। সহযোগিতা না করায় সময়ে কাজ শেষ করতে পারবেন কি না সে নিয়ে সংশয় রয়েছে জানিয়ে প্রশাসনকে চিঠি দেন তিনি। সৌমিত্রবাবু জানান, সময়ে কাজ শেষ করতে না পারলে ৩৫ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ঋণের কিস্তি শোধ করতে পারবেন না তিনি। এ দিকে ব্যবসার ট্রেড লাইসেন্স, বিদ্যুৎ সংযোগ, ট্যাক্স— সবই তাঁর নামেই। অথচ, এডিডিএ কারখানার মালিকানা তাঁর নামে দিচ্ছে না বলে অভিযোগ সৌমিত্রবাবুর। ফলে, ৮৬ লক্ষ টাকার ব্যাঙ্ক ঋণ আটকে গিয়েছে। সৌমিত্রবাবু বলেন, ‘‘কারখানা বন্ধ হলে প্রায় ৩০টি পরিবার রোজগারহীন হবে।’’
এডিডিএ-র যদিও দাবি, কারখানাটি শুরুতে মালিকানাধীন ছিল। পরে তা অংশীদার ফার্মে পরিবর্তিত হয়। বিষয়টি নিয়ে চলা মামলার নিষ্পত্তি এখনও হয়নি। কারখানার বিদ্যুৎ, ট্রেড লাইসেন্স সৌমিত্রবাবুর নামে থাকলেও তাঁর নামে কারখানার মালিকানা দেওয়া সম্ভব নয়। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক শঙ্খ সাঁতরা বলেন, ‘‘ওই শিল্পপতি সরাসরি যোগাযোগ করে কী সহযোগিতা দরকার জানালে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে।’’