Advertisement
E-Paper

সেতুর হাল খারাপ দু’দশকেই

কুড়ি বছরেই পিচ উঠে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে সেতুর। তার সঙ্গে জুড়েছে জল জমার সমস্যা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। গত কয়েকদিনে মঙ্গলকোটের নতুনহাটের লোচন দাস সেতু পারাপার করতে গিয়ে বারবার কলকাতার মাঝেরহাটের সেতু ভাঙার ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে, জানাচ্ছেন যাত্রীরা।

সুচন্দ্রা দে

শেষ আপডেট: ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০০:৩০
উঠে গিয়েছে পিচ। ফাটল কংক্রিটে। মঙ্গলকোটে লোচন দাস সেতুতে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

উঠে গিয়েছে পিচ। ফাটল কংক্রিটে। মঙ্গলকোটে লোচন দাস সেতুতে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়

কুড়ি বছরেই পিচ উঠে কঙ্কাল বেরিয়ে পড়েছে সেতুর। তার সঙ্গে জুড়েছে জল জমার সমস্যা, রক্ষণাবেক্ষণের অভাব। গত কয়েকদিনে মঙ্গলকোটের নতুনহাটের লোচন দাস সেতু পারাপার করতে গিয়ে বারবার কলকাতার মাঝেরহাটের সেতু ভাঙার ঘটনা মনে পড়ে যাচ্ছে, জানাচ্ছেন যাত্রীরা। বিপদ এড়াতে সেতুটির দ্রুত সংস্কারের দাবি জানিয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা।

১৯৯৮ সালের ১৮ জুলাই অজয়ের উপরে বাদশাহি সড়ক লাগোয়া এই সেতুর উদ্বোধন হয়। ৫৫৪ মিটার দীর্ঘ সেতুটি বীরভূম, মুর্শিদাবাদের সঙ্গে বর্ধমানের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম। জানা গিয়েছে, রোজ প্রায় হাজার দুয়েক গাড়ি চলাচল করে এই সেতু দিয়ে। ফরাক্কা, মালদহ, শিলিগুড়ির মতো উত্তরবঙ্গের নানা জায়গায় যাওয়ার বাস চলে। অথচ, দু’দশকেই জরুরি এই সেতুর অবস্থা দেখে আতঙ্কে ভুগছেন পারাপারকারীরা।

সেতুর উপরে জায়গায়-জায়গায় পিচ উঠে বালি, পাথর বেরিয়ে পড়েছে। কোথাও আবার তা-ও উঠে গিয়ে লোহার শিক দেখা যাচ্ছে। লোহার খাঁচার খাঁজে জমেছে বৃষ্টির জল। ফলে, বাস অথবা দশ, বারো চাকার লরির চাকা যখন ওই ভাঙা অংশে পড়ছে তখনই ঝাঁকুনিতে কঁকিয়ে উঠছেন যাত্রীরা। গাড়ির যন্ত্রাংশ খারাপ হওয়ার অভিযোগও করেছেন বাস চালকেরা। স্থানীয় ব্যবসায়ী লালন শেখ, সঞ্জয় সাধুদের অভিযোগ, ‘‘লোহার শিকগুলিতে দীর্ঘদিন ধরে জল জমে মরচে পড়ে যাচ্ছে। তাতে সেতুর গাঁথনি দুর্বল হয়ে যাবে।’’

বীরভূমের বাসাপাড়া থেকে কর্মসূত্রে লোচন দাস সেতু পেরিয়ে নিত্যদিন কাটোয়ায় যান মোজাম্মেল হক, সুতপা গুঁইরা। তাঁরা বলেন, ‘‘বাসে চেপে গেলে যখন সেতুর খন্দে চাকা পড়ে, ভয়ে কেঁপে উঠি। মনে হয়, এই সেতুও যদি ভেঙে পড়ে! আগে থেকে সংস্কার করা প্রয়োজন।’’ সেতুতে গিয়ে দেখা যায়, সিমেন্টের স্ল্যাবের পাশে জল নিকাশের জন্য যে গর্ত থাকে, সেগুলি প্রায় বুজে গিয়েছে। দীর্ঘদিন রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে সেতুর ধার ঘেঁষে ঘাস গজিয়েছে। ঘাস ও ধুলোয় ঢেকেছে বৃষ্টির জল বেরনোর গর্ত। সেতুর দু’দিকের ফুটপাতের রেলিংও কয়েক জায়গায় ভেঙে গিয়েছে। রেলিংয়ের শিকও বেরিয়ে এসেছে কয়েক জায়গায়।

সেতুটির দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে পূর্ত দফতরের ভাতার হাইওয়ে ডিভিশন। এই ডিভিশনের অ্যাসিস্ট্যান্ট ইঞ্জিনিয়ার দিব্যেন্দু চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বছর দুয়েক আগে ফুটিসাঁকো থেকে নতুনহাট পর্যন্ত রাস্তার মেরামত করেছে যে সংস্থা তারাই লোচন দাস সেতুতে পিচ দেওয়ার (ম্যাটিক অ্যাসল্ট) কাজ করে। ওই ঠিকাদারকে ওইটুকু সংস্কার করে দিতে বলা হয়েছে।’’

তিনি আরও জানান, সেতুর তলার ক্ষয় নির্ধারণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে সেতুর নকশা দেখা জরুরি। সেতুর নীচের ঝুলন্ত ‘প্যান’ এক দিকে কাত হয়ে রয়েছে বলেই প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে অনুমান ওই দফতরের। সেতুর নীচের স্ল্যাব পরীক্ষার জন্য ‘মোবাইল ব্রিজ ইনস্পেকশন ইউনিট’ প্রয়োজন। সেটি আনার জন্য দফতরের মুখ্য ইঞ্জিনিয়ারের কাছে আবেদন করা হয়েছে বলে জানান তিনি।

Bridge Murshidabad Birbhum
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy