Advertisement
E-Paper

কাউন্সিলরেরা স্বার্থে কাজ করেন, তোপ বিধায়কের

কাউন্সিলরদের গোলমালে পুর পরিষেবা শিকেয়— গুসকরার বাসিন্দাদের এ অভিযোগ পুরনো। মাঝখানে প্রশাসন, আদালতের হস্তক্ষেপে থিতু হওয়ার একটা চেষ্টা হয়েছিল, তাও ধোপে টেকেনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৫৩

কাউন্সিলরদের গোলমালে পুর পরিষেবা শিকেয়— গুসকরার বাসিন্দাদের এ অভিযোগ পুরনো। মাঝখানে প্রশাসন, আদালতের হস্তক্ষেপে থিতু হওয়ার একটা চেষ্টা হয়েছিল, তাও ধোপে টেকেনি। এ বার এক সপ্তাহের মধ্যে না শুধরোলে খোদ মুখ্যমন্ত্রী বোর্ড ভেঙে দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিলেন। আপাতত, হাল ধরার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে বীরভূমের জেলা তৃণমূল সভাপতি তথা আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, কেতুগ্রামের পর্যবেক্ষক অনুব্রত মণ্ডলকে।

গত মঙ্গলবারই আট কাউন্সিলরকে নিয়ে বসেছিলেন আউশ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্ডার। সেখানেও চরম বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। কাউন্সিলরেরা বৈঠকে এক হয়ে পুর পরিষেবা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছিলেন। কিন্তু তা যে আশ্বাসই তার প্রমাণ এ দিন বিধায়কের কথায়। অভেদানন্দবাবু শুক্রবার বলেন, “ওই সব কাউন্সিলরদের বিশ্বাস করা কঠিন। তাঁরা দলের কিংবা পুরসভার হয়ে কাজ করেন না। সবটাই করেন নিজেদের স্বার্থে। ফলে শহরের বেশিরভাগ মানুষ তাঁদের উপর চরম ক্ষিপ্ত।” তাঁর দাবি, “আমি নিজে শহরের বিশিষ্টজন থেকে সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলে দেখেছি, পুরসভার কাজে কেউ সন্তুষ্ট নয়। এতে দলেরই বদনাম হচ্ছে।”

প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, কয়েক দিন আগে পুর এলাকায় সুশীলা গ্রামে একটি ব্যক্তিগত জায়গা দখল করে দলীয় অফিস গড়ার অভিযোগ উঠেছিল। গ্রামবাসীরা বাধা দেওয়ায় য় ঘটনার রাতে পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় ও প্রবীণ কাউন্সিলর নিত্যানন্দ চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মোটরবাইক-বাহিনী গিয়ে সেখানে বোমাবাজি করে বলে অভিযোগ। এই ঘটনায় স্থানীয় কাউন্সিলর সনাতন বেসরারও নাম জড়িয়ে যায়। পরের দিন মুখ্যমন্ত্রী নিজে প্রশাসনের এক কর্তার কাছে বিষয়টি খোঁজ নেন। অনুব্রতবাবুও প্রশাসনের কাছে ব্যবস্থা নিতে বলেন। পুলিশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করে।

তার আগে এক শিশু-মৃত্যুকে ঘিরে হাতুড়েকে দশ লক্ষ টাকা জরিমানার অভিযোগ উঠেছে দলেরই এক মহিলা কাউন্সিলরের বিরুদ্ধে। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থাকে ঘিরে একের পর এক কাউন্সিলরদের কান্ডকারখানায় দল যথেষ্ট অস্বস্তি পড়েছিল। পর্যবেক্ষক সতর্ক করার পরেও কাজ হয়নি। প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘অনাস্থা প্রস্তাবের দিন মহকুমাশাসকের সামনে পুরপ্রধান ও কাউন্সিলররা গোলমালে জড়িয়ে পড়েন। মারধর থেকে মহকুমাশাসককে ঘেরাও, বোমাবাজির ঘটনা ঘটে। মুখ্যমন্ত্রীর কাছে জেলাশাসক ও পুলিশ সুপার বিস্তারিত রিপোর্ট দিয়েছিলেন।” তারও আগে পুরসভার ভিতর দু্‌ই কাউন্সিলরের একে অপরকে চড় মারা, চুলোচুলির নির্দশনও রয়েছে। বিধায়ক বলেন, “গুসকরা নিয়ে ভবিষ্যৎবাণী করা খুবই কঠিন। পুরপ্রধানকে সরানোর জন্য মুখ দেখাদেখি না হওয়া দুই নেতা এক হয়েছিলেন। অনাস্থার পর দেখা গেল, তাঁদেরই এক জন পুরপ্রধানের সঙ্গে রয়েছেন।’’

তৃণমূলের রাজ্য স্তরের এক নেতা বলেন, “গুসকরা নিয়ে প্রথম থেকেই বিরক্ত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তার উপর কাউন্সিলররা নিজেদের মধ্যে বারেবারে গোলমাল করায় মুখ্যমন্ত্রী চরম সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য হন।” পুরসভার ১৬ জনের মধ্যে ৫ জন সিপিএমের। তাঁদের দলনেতা মনোজ সাউ বলেন, “পুর পরিষেবা বলতে কিছুই নেই। কাউন্সিলররা গোলমাল করতেই ব্যস্ত।’’ এ দিকে, পুরপ্রধান বুর্ধেন্দু রায় থেকে প্রাক্তন পুরপ্রধান চঞ্চল গড়াই সবাই বলেছেন, “দল যা সিদ্ধান্ত নেবে, সেটাই চূড়ান্ত।”

MLA benefit
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy