বৈঠকের আগে। নিজস্ব চিত্র
দলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন কাটোয়ার ১৪ জন তৃণমূল কাউন্সিলর। মাস দেড়েক আগেই পুরপ্রধানকে অপসারণের দাবিতে চিঠি দিয়েছিলেন তাঁরা। মঙ্গলবার ওই ১৪ জনই অনাস্থা প্রস্তাব আনলেন। পুরপ্রধান অমর রাম এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।
এ দিন সকাল ১০টা নাগাদ ১৩ জন কাউন্সিলরকে নিয়ে পুরসভায় হাজির হন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায়। পুরসভার হলঘরে বিশেষ সাধারণ সভা ডেকেছিলেন তিন কাউন্সিলর সঞ্জীব মুখোপাধ্যায়, শুভ্রা রায় ও মাসুদা খাতুন। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর সুদীপ্তময় ঘোষকে সভাপতি করে সভা শুরু হয়। ১৪ জন কাউন্সিলরই অমরবাবুকে অপসারণের পক্ষে হাত তোলেন। পুরসভায় অমরবাবুর অনুগামী কোনও কাউন্সিলরকে দেখা যায়নি। সঞ্জীববাবুরা জানান, অনাস্থার চিঠি জেলাশাসককে পাঠানো হচ্ছে।
অগস্টের শেষে পুরপ্রধানকে সরাতে চেয়ে চিঠি দেন বিধায়ক রবীন্দ্রনাথবাবুর অনুগামী কাউন্সিলররা। উন্নয়নের প্রশ্নে কাউন্সিলরদের দাবিদাওয়া লিপিবদ্ধ ও কার্যকর না করার অভিযোগ তোলা হয় অমরবাবুর বিরুদ্ধে। এ দিন রবীন্দ্রনাথবাবু বলেন, ‘‘কাউন্সিলররা যোগ্য সম্মান পাচ্ছিলেন না। সর্বোপরি পুর পরিষেবা ব্যাহত হচ্ছিল।’’ শহরবাসীকে স্বচ্ছ পুর পরিষেবা দিতেই এমন সিদ্ধান্ত বলে তাঁর দাবি।
এ দিন এই সভা উপলক্ষে শহর জুড়ে ছিল কড়া পুলিশি পাহারা। সকাল থেকে পুরসভার ২০০ মিটারের মধ্যে ১৪৪ ধারা জারি ছিল। স্টেশনবাজার, ফেরিঘাট, বাসস্ট্যান্ড, জাজিগ্রাম, পালটিা রোড, ঘুটকপাড়ার মতো শহরের ছ’টি মোড়ে নাকাবন্দি করা হয়। পুরসভা মোড়ে র্যাফ নামানো হয়। শান্তিপূর্ণ ভাবে বৈঠক মেটার পরে দুপুরে ১৪৪ ধারা উঠে যায়।
কাটোয়া পুরসভায় উপ-পুরপ্রধান নেই। পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে কাউন্সিলররা অনাস্থা প্রস্তাব আনার পরে পুরসভার কাজকর্ম চলবে কী ভাবে? জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, ‘‘কাটোয়ার পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা এসেছে। এই পরিস্থিতিতে ওখানে কোনও কাউন্সিলরকে দায়িত্ব দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকারকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। বাকি বিষয়টি নিয়ে আইন অনুযায়ী পদক্ষেপ করা হবে।’’
দলের পুরপ্রধানের বিরুদ্ধে দলেরই কিছু কাউন্সিলরের অনাস্থা প্রস্তাব আনার বিষয়ে তৃণমূলের জেলা সভাপতি স্বপন দেবনাথ বলেন, ‘‘দলের নির্দেশ মেনেই যা হওয়ার তা হচ্ছে। তবে অমর দলের সক্রিয় কর্মী হিসেবে থাকবে বলেই আমার বিশ্বাস।’’ অমরবাবু তৃণমূলের কাটোয়া শহর সভাপতির পদেও রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে বিধায়কের গোষ্ঠীর দ্বন্দ্ব মেটাতে একাধিক বার বৈঠকও ডাকা হয়েছে দলীয় নেতৃত্বের তরফে। এ দিন অমরবাবু বলেন, ‘‘দলের সঙ্গে সব সময় আছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy