Advertisement
E-Paper

দেওরকে খুন করেই কি আত্মঘাতী বধূ, ধন্দে পুলিশ

দেওরের বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে বলেই কী তাঁকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন মেমারির ওই গৃহবধূ? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের মনে এই সম্ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও ওই বধূর পরিবার তা মানতে চাননি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৮ নভেম্বর ২০১৬ ০০:২৯

দেওরের বিয়ে ঠিক হয়ে যাচ্ছে বলেই কী তাঁকে খুন করে আত্মঘাতী হয়েছেন মেমারির ওই গৃহবধূ? প্রাথমিক তদন্তের পরে পুলিশের মনে এই সম্ভাবনাই ঘুরপাক খাচ্ছে। যদিও ওই বধূর পরিবার তা মানতে চাননি।

রবিবার বিকেলে সাতগেছিয়ার একটি গ্রামে গিয়ে লগ্নপত্র করার কথা ছিল প্রবীর ধারার (২৭) বাড়ির লোকজনের। কিন্তু তার আগেই গ্রাম থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ধানখেতের জমিতে রক্তাক্ত প্রবীরের দেহ মেলে। তারও কিছুক্ষণ পরে মেমারি থানার পুলিশ গিয়ে সেচখালের ধার থেকে প্রবীরের জেঠতুতো বৌদি সাগরিকার (২৪) দেহ উদ্ধার করে। পুলিশের অনুমান, দেওর ও বৌদির মধ্যে বেশ কয়েক বছর ধরে বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক রয়েছে। সেই সম্পর্ক ছেড়ে প্রবীর বিয়েতে মত দেওয়া হয়তো মানতে পারেননি সাগরিকাদেবী। সে কারণেই তাঁকে খুন করে নিজেও আত্মঘাতী হয়েছেন সাগরিকাদেবী। আপাতত পুলিশের পর্যবেক্ষণ এটুকুই।

সাগরিকাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজনের অবশ্য দাবি, তাঁদের মেয়ে ও ওই যুবকের মধ্যে কোনও বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল না। তাঁদের প্রশ্ন, ভরদুপুরে এক মহিলার পক্ষে কী যুবককে ধানখেতের ভিতরে খুন করা সম্ভব? সঠিক তদন্তের দাবিতে মেমারি থানায় চিঠি দেবেন বলে জানান।

সোমবার দুপুরে মেমারি গিয়েছিলেন বর্ধমানের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (হেডকোয়ার্টার) দ্যুতিমান ভট্টাচার্য। সেখান থেকে ফেরার পথে তিনি বলেন, “এখনও অনেক প্রশ্নের উত্তর সামনে আসেনি। আমাদের ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’’ মেমারি থানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন খেত জমির মধ্যে থেকে ধান কাটার একটি কাস্তে উদ্ধার হয়েছে। তাতে রক্তের দাগ ছিল।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রবীর রবিবার মাঠে ঘাস কাটতে গিয়েছিল। দুপুর বারোটার মধ্যেই বাড়ি ফিরার কথা ছিল। কিন্তু দুপুর দু’টোর পরেও বাড়ি ফেরেনি দেখে খোঁজ শুরু হয়। সেই সময় দেখা যায়, বাড়ি থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার দূরে ধান খেতের জমিতে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে প্রবীরের দেহ। এ দিন বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃতের বাবা নিমাইবাবু বলেন, “ছেলের বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল। হবু বৌমার সঙ্গে মোবাইলে কথা বলতো। রবিবার বিকেলে গ্রামের পাঁচ জনকে নিয়ে মেয়ে বাড়িতে লগ্নপত্র হওয়ার কথা ছিল। তার আগেই কোথা থেকে কী যে হয়ে গেল!” সাগরিকার স্বামী কার্তিকবাবুর অবশ্য দাবি, “প্রবীরের সঙ্গে সাগরিকার সম্পর্ক ছিল, এটা বিশ্বাস করতে পারছি না। তেমনটা হলে আমি কি কিছুই বুঝতে পারতাম না!’’ এগারো বছর আগে ওই দম্পতির বিয়ে হয়েছে। দুটি সন্তানও রয়েছে। কার্তিকবাবু বলেন, “মাকে দেখতে না পেয়ে ছোট ছেলে জ্বর বাধিয়ে বসে রয়েছে।” নিমাইবাবুও জানাচ্ছেন, বিয়ে ঠিক হওয়ার পর থেকে ছেলে বেশ আনন্দেই ছিল।

এই দাবির সঙ্গে এক মত নন জামালপুরের সাগরিকাদেবীর বাপের বাড়ির লোকজনেরা। সাগরিকার কাকা উত্তম বাগ, কৃষ্ণচন্দ্র বাগদের কথায়, “পুরো বিষয়টিতে ধোঁয়াশা রেখে দিয়েছে দুই পরিবার। দুটি মৃত্যুর পরে ওদের সম্পর্কের কথা জানা যাচ্ছে, এটা কী সম্ভব?’’ তাঁদের কৌতূহলী প্রশ্ন, ‘‘প্রবীরকে যে ভাবে গলায় পোচ দিয়ে খুন করা হয়েছে, তাতে অন্য কেউ ছিল বলেই মনে হচ্ছে।’’

Suicide Memari
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy