Advertisement
২৪ এপ্রিল ২০২৪

বন্ধ বাড়িতে পড়ে নিয়তির রক্তাক্ত দেহ

তদন্তকারীরা জানান, বুধবার সকাল থেকে ওই বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখেছেন পড়শিরা। ওই দিন বিকেলেই বড় ছেলে অশোকবাবু মায়ের খোঁজ নিতে আসেন। কিন্তু বাড়িতে তালা দেখে তিনি প়়ড়শিদের কাছে মায়ের খোঁজখবর করেন। কিন্তু পড়শিদের দাবি, তাঁরা বৃদ্ধাকে কোথাও দেখেননি।

ঘটনাস্থল: এই বাড়িতেই থাকতেন বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল: এই বাড়িতেই থাকতেন বৃদ্ধা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
সালানপুর শেষ আপডেট: ০৩ অগস্ট ২০১৮ ০৩:১২
Share: Save:

তালাবন্ধ ঘর থেকে উদ্ধার হল বৃদ্ধার রক্তাক্ত দেহ। বৃহস্পতিবার সালানপুর থানার সুকান্তপল্লির গ্রিনপার্কের ঘটনা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, বৃদ্ধাকে খুন করে বাইরে থেকে বাড়ির দরজায় তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। রূপনারায়ণপুর ফাঁড়ির পুলিশ জানায়, নিহতের নাম নিয়তি সাহা (৬৮)।

মৃতার বড় ছেলে, পেশায় রানিগঞ্জের একটি বেসরকারি আইটিআই কলেজের কর্মী অশোকবাবু জানিয়েছেন, চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার প্রাক্তন কর্মী ছিলেন তাঁর বাবা আদিত্য সাহা। ২০০৪-এ অবসরের পরে ওই বাড়িতে দুই ছেলে ও স্ত্রী নিয়তিকে নিয়ে বসবাস শুরু করেন অদিত্যবাবু। এর পরের বছরই মৃত্যু হয় আদিত্যবাবুর। তদন্তকারীরা জানান, বিয়ের কিছু দিন পরে ছোট ছেলে, পেশায় একটি বেসরকারি লগ্নি সংস্থার কর্মী বিশ্বনাথবাবু চিত্তরঞ্জনে ও অশোকবাবু আসানসোলে ভাড়া বাড়িতে চলে যান। পড়শিরা জানান, গত ছ’মাস ধরে নিয়তিদেবী বাড়িতে একাই থাকতেন। বাড়ির বাইরে খুব একটা তাঁকে দেখা যেত না। কোথাও যেতে হলে ছেলেদের ডেকে নিতেন।

কী ভাবে খুনের কথা জানা গেল? তদন্তকারীরা জানান, বুধবার সকাল থেকে ওই বাড়িতে তালা ঝুলতে দেখেছেন পড়শিরা। ওই দিন বিকেলেই বড় ছেলে অশোকবাবু মায়ের খোঁজ নিতে আসেন। কিন্তু বাড়িতে তালা দেখে তিনি প়়ড়শিদের কাছে মায়ের খোঁজখবর করেন। কিন্তু পড়শিদের দাবি, তাঁরা বৃদ্ধাকে কোথাও দেখেননি।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, অশোকবাবু জানিয়েছেন, বাড়িতে তালা দেখে তিনি ভেবেছিলেন, ভাইয়ের সঙ্গে মা কোথাও গিয়েছেন। সেই মতো বাড়ির সামনে থেকেই তিনি ভাই বিশ্বনাথবাবুকে ফোন করেন। কিন্তু তিনিও জানান, মা তাঁর কাছে আসেননি। এর পরেই রূপনারায়ণপুর ফাঁড়িতে নিখোঁজ ডায়েরি দায়ের করেন অশোকবাবু।

বৃহস্পতিবার ফের মায়ের সন্ধানে এলাকায় এসে অশোকবাবু দেখেন, বাড়ি তালাবন্ধই। ফের তিনি যোগাযোগ করেন পুলিশের সঙ্গে। শেষমেশ পুলিশের উপস্থিতিতে ঘরের তালা ভাঙা হয়। দেখা যায়, সিঁড়ি ঘরের নীচে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে নিয়তিদেবীর দেহ।

পুলিশ দেহটি উদ্ধার করে ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠিয়েছে। বাড়িটি আপাতত ‘সিল’ করে দেওয়া হয়েছে। পুলিশ জানায়, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুই ছেলেকেই থানায় নিয়ে যাওয়া হয়। তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক অনুমানে মনে হচ্ছে, ২৪ ঘণ্টা আগে খুন করা হয়েছে। সম্ভবত, শাবল দিয়ে মাথা থেঁতলে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া বৃদ্ধার গলাতেও কাটা দাগ পাওয়া গিয়েছে বলে জানা গিয়েছে। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘এটা খুনের ঘটনা। খুনের মামলা দায়ের করে আমরা তদন্ত চালাচ্ছি। কিছু সূত্রও হাতে এসেছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Dead body Salanpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE