এলাকায় পরপর গড়ে উঠেছে বিভিন্ন কল-কারখানা। কারিগরি শিক্ষায় প্রশিক্ষিত অনেকে বাইরে থেকে এসে সেখানে কাজ করছেন। অথচ এলাকার পড়ুয়া বা কর্মপ্রার্থীরা সেখানে কাজের সুযোগ পান না। কারণ, কাঁকসা ও লাগোয়া গলসি এলাকায় একটিও সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই। বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ার মতো আর্থিক সামর্থ্যও নেই তাদের। এর জেরে কাজের সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অচিরেই তা হারাচ্ছেন বলে দাবি স্থানীয় বাসিন্দাদের।
বাসিন্দারা জানিয়েছেন, কাঁকসা ব্লকে একশোরও বেশি প্রাথমিক স্কুল, প্রায় ২০টি মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে। কিন্তু কোনও কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান নেই ব্লকে। বেশ কয়েকটি বেসরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলেও অর্থের অভাবে সেগুলিতে ভর্তি হওয়া সম্ভব হয় না। এই অবস্থায় ভরসা একমাত্র দুর্গাপুরের সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। কিন্তু সেখানেও সব পড়ুয়ার ভর্তি হওয়ার সুযোগ মেলে না। তা ছাড়া যোগাযোগ ব্যবস্থার কারণেও দুর্গাপুরের কলেজে গিয়ে পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়া বেশ অসুবিধার বলে জানান পড়ুয়ারা। এর জেরে মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করে ইচ্ছা থাকলেও কারগরি শিক্ষা নেওয়া যাচ্ছে ওই দু’টি এলাকার পড়ুয়াদের। কাঁকসার বাসিন্দা প্রদীপ মুর্মু এ বার উচ্চ মাধ্যমিকে বিজ্ঞান বিভাগে ৮২ শতাংশ নম্বর নিয়ে পাশ করেছে। বাবা কৃষিজীবী। প্রদীপ বলে, ‘‘দুর্গাপুর ও বর্ধমানের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে ফর্ম তুলেছি। কিন্তু কাঁকসাতেই সরকারি কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থাকলে পড়াশোনা চালানোর খরচ নিয়ে চিন্তা করতে হতো না।’’
পড়ুয়ারা জানান, এলাকায় তৈরি হওয়া বিভিন্ন কারখানায় কারিগরি প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরাই চাকরি পাচ্ছেন। পড়ুয়াদের কথার সমর্থন মিলল কাঁকসার বামুনাড়া শিল্পতালুকের একটি বেসরকারি কারখানার আধিকারিকের কথাতেও। তিনি জানান, চাকরিতে নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবেই দরকার হয় দক্ষ শ্রমিকের। সে জন্যই কারিগরি উপযুক্ত প্রশিক্ষণপ্রাপ্তদেরই নিয়োগে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়।
এই অবস্থায় পড়ুয়া, শিক্ষক ও অভিভাবক— সকলেই চাইছেন অবিলম্বে যেন কাঁকসা বা গলসি ব্লকে একটি সরকারি কারিগরি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হয়। কাঁকসা ব্লকের সিলামপুর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল বলেন, ‘‘বিভিন্ন বেসরকারি কারখানা এবং রেল-সহ সরকারি প্রতিষ্ঠানগুলিতে চাকরি পেতে গেলে কারিগরি শিক্ষা থাকাটা অত্যন্ত দরকারি। ব্লক এলাকায় সরকারি উদ্যোগে একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠলে লাভবান হবেন পড়ুয়ারা।’’
এলাকার বিধায়ক, পেশায় স্কুল শিক্ষক গৌর মণ্ডলও সমস্যার কথা মেনে নিয়েছেন। তবে তাঁর আশ্বাস, ‘‘সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করে সমস্যা সমাধানের জন্য আর্জি জানানো হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy