E-Paper

কয়েক মুহূর্তে দুঃখের গল্প বলে পুরস্কৃত দীপ্তাংশু

চার দিনের এই সম্মেলনে দেশ বিদেশ থেকে গেমস, অ্যানিমেশন, বিভিন্ন ডিজিটাল কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন যোগ দেন।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ০৬ মে ২০২৫ ০৮:১৪
দীপ্তাংশু দেবনাথ। 

দীপ্তাংশু দেবনাথ।  Stock Photographer

ছোট থেকেই তাঁর নেশা নতুন কিছু করার। কখনও বাড়িতে কাঠকয়লা দিয়ে ছবি আঁকা, কখনও মাটি-পাট কাঠি দিয়ে শিল্প সৃষ্টি। আবার ডাক পেলে নিজের হাতে সাজিয়ে দিয়ে আসেন বন্ধুদের ক্যাফেও। এ বার দেশের মাটিতেও নজর কাড়লেন কালনার রামেশ্বরপুরের বছর চব্বিশের দীপ্তাংশু দেবনাথ। কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক আয়োজিত, মুম্বইয়ে অনুষ্ঠিত ‘ওয়ার্ল্ড অডিয়ো ভিজ়ুয়াল এন্টারটেনমেন্ট সামিটে’র ‘আনরিয়েল সিনেমাটিক চ্যালেঞ্জে’ রানার্স হয়েছেন তিনি।

চার দিনের এই সম্মেলনে দেশ বিদেশ থেকে গেমস, অ্যানিমেশন, বিভিন্ন ডিজিটাল কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত মানুষজন যোগ দেন। এর উপদেষ্টা পর্ষদের সদস্য হিসাবে রয়েছেন অভিনেতা শাহরুখ খান, অমিতাভ বচ্চন, আমির খান, মিঠুন চক্রবর্তী, রজনীকান্ত, অনুপম খের থেকে সুরকার, গায়ক এ আর রহমান, আশা ভোঁসলে, গুগুলের সিইও সুন্দর পিচাই, শিল্পপতি অনিল অম্বানির মতো বহু বিখ্যাত মানুষ। এখানে পৌঁছনোর আগে এপ্রিলে তেলঙ্গনা সরকারের একটি সংস্থার বিজ্ঞপ্তি দেখে একটি প্রতিযোগিতায় যোগ দেন দীপ্তাংশু। দেশ বিদেশের ১১ হাজার প্রতিযোগীর মধ্যে ছ’সেকেন্ডের ভিডিয়োয় এক দম্পতির দুঃখের কাহিনি তুলে ধরে ন’শো জনের মধ্যে উঠে আসেন তিনি। আরও নানা ধাপ পেরিয়ে জায়গা করে নেন ১১ জনের মধ্যে। তাঁদের দুটি দলে ভাগ করে সরকারি খরচেই ওই সম্মেলনে পাঠানো হয়।

দীপ্তাংশু জানান, তাঁর গল্পে ছিল বিয়ের পরে অসুস্থ স্ত্রীকে বাঁচাতে স্বামী যাবতীয় জিনিসপত্র বিক্রি করে দিচ্ছেন। হতাশায় ডুবে টাকা চুরি করতেও যান। সেখানেও লাভ হয় না। ফিরতি পথে নিজেদের পুরনো, আনন্দের দিনের কথা ভাবতে ভাবতে দুর্ঘটনায় পড়েন ওই যুবক। তখনই ফোন মেসেজ আসে, ‘তাড়তাড়ি বাড়ি ফেরো, সময় বেশি নেই’। দু’দিন পড়ে থাকে নিথর দু’টি দেহ। আসলে সচরাচর যে সব লড়াই সামনে আসে না, সেই গল্পই বলতে চেয়েছিলেন তিনি।

মুম্বই পৌঁছে ওই ভিডিয়োটিই দু’মিনিটের কমে উপস্থাপনা করতে বলা হয়। জুরিদের বিচারে প্রথম হন মুম্বইয়ের এক যুবক। দীপ্তাংশু হন রানার্স। ডিজিটাল ইন্ডিয়ায় জোর দেওয়ায় এই সম্মেলনের উদ্দেশেয ছিল। সোমবার বাড়ি ফেরার পথে দীপ্তাংশু বলেন, ‘‘অনেক বিখ্যাত মানুষের সংস্পর্শে এসেছি। অনুষ্ঠানের প্রথম দিনে যাঁরা পুরষ্কার পান, তাঁদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলাদা করে কথা বলেন। আমার চেহারা দেখে হেসে ভাল করে খাওয়া দাওয়ারও পরামর্শ দেন।’’ দীপ্তাংশুর দাবি, ‘‘ছেলেবেলা থেকে খুব বেশি প্রতিযোগিতায় যোগ দিইনি। নিজেকে জানতে কিছুটা হাল্কা ভাবেই তেলঙ্গানায় গিয়েছিলাম। বাকিটা স্বপ্নের মতো।’’

দীপ্তাংশুর বাবা দিলীপ দেবনাথ পেশায় অঙ্কন শিল্পী। তিনি বলেন, ‘‘ছোট থেকেই নতুন কিছু করার চেষ্টা করে। টালিগঞ্জের একটি কলেজ থেকে অ্যানিমেশন নিয়ে তিন বছরের ডিগ্রি কোর্স করেছে। ভাল চাকরিও পায়। কিন্তু নতুন কিছু করব বলে চাকরি ছেড়ে দেয়। ওর জন্য আমরা গর্বিত।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Bardhaman

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy