Advertisement
০২ মে ২০২৪

কার্তিক পুজোর আকাশে নিম্নচাপের ভ্রুকুটি

শিল্পী হাবল পাল, গুপী পালেরা  বলেন, ‘‘প্রতিমা তৈরিতে যে রঙ ব্যবহার হয় তা বৃষ্টিতে সহজই ধুয়ে যায়। ছোট প্রতিমাগুলি ছাউনিতে রাখা গেলেও বড়গুলি কোনও রকমে ত্রিপল জড়িয়ে  রাখতে হয়েছে।’’

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

সুচন্দ্রা দে ও দীপঙ্কর চক্রবর্তী
কাটোয়া ও পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ১৬ নভেম্বর ২০১৭ ০২:২৮
Share: Save:

কাজ প্রায় শেষ হয়ে এসেছিল। কিন্তু অন্তিম লগ্নে গোল বাধাল বৃষ্টি। কার্তিক পুজোর ঠিক আগে তাই চিন্তায় পড়েছেন উদ্যোক্তারা। দুর্গাপুজো, কালীপুজোর পরে এ বার কার্তিক পুজোও বৃষ্টিতে ভন্ডুল হবে কি না, আশঙ্কায় কাটোয়া ও পূর্বস্থলীর বাসিন্দারা।

কাটোয়ার সার্কাস মদানের ইউনিক ক্লাবের এ বারের থিম কোচবিহারের রাজবাড়ি। দিন পনেরো ধরে বেত, বাঁশ দিয়ে মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। মঙ্গলবার গভীর রাত থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টিতে কাজে বাধা পড়ছে বলে জানান পুজো কমিটির সম্পাদক পিন্টু সেন। মণ্ডপ তৈরি শেষ হলেও বৃষ্টির জন্য মণ্ডপে প্রতিমা আনা নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন পানুহাটের নিউ আপনজন ক্লাবের কর্তারা। এ বার তাঁরা তৈরি করছেন প্যারিসের ‘অপেরা হাউস’। ক্লাবের সম্পাদক উত্তম দেবনাথ বলেন, ‘‘শুধু মণ্ডপ তৈরিতেই খরচ সাড়ে ছ’লক্ষ টাকা। প্লাস্টার অফ প্যারিস, বেত, প্লাইউড দিয়ে এক মাসের চেষ্টায় মণ্ডপ তৈরি হয়েছে। শেষ মুহূর্তে এমন ঝিরঝিরে বৃষ্টিতে মণ্ডপের ক্ষতি হবে কি না, চিন্তায় রয়েছি।’’ বুধবার মণ্ডপে প্রতিমা আসার কথা ছিল। তবে বৃষ্টি না কমলে প্রতিমা আনতে অসুবিধা হবে, জানান তিনি।

পাশে ইয়ংস্টাফ ক্লাবেও বেত, ঝুড়ি দিয়ে তৈরি মণ্ডপে বৃষ্টির জন্য প্রতিমা আনা যায়নি এ দিন, জানান উদ্যোক্তারা। ক্লাবের ভিতরে প্রতিমা তৈরি হলেও বৃষ্টিতে মণ্ডপ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার আশঙ্কায় কাছারিপাড়ার ঝঙ্কার ক্লাবের সদস্যেরা। সম্পাদক কালী চট্টরাজ বলেন, ‘‘থাকার মাধ্যমে এ বছর ‘নবগ্রহ পরিচয়’ দেখানো হবে। তবে বৃষ্টির জন্য মণ্ডপে শেষ মুহূর্তের কাজ বাধা পেল।’’ এমন বৃষ্টি চলতে থাকলে আলোকসজ্জা নিয়ে শোভাযাত্রা কী ভাবে বেরোবে, চিন্তায় উদ্যোক্তারা।

চিন্তায় পড়েছেন বাসিন্দারাও। স্কুল পড়ুয়া অনীক ধর, বৈশাখী গোস্বামীদের আশঙ্কা, ‘‘দুর্গা ও কালীপুজো বৃষ্টির জন্য মাটি হয়ে গেল। কার্তিক পুজোর অপেক্ষায় ছিলাম। সেটাও না মাটি হয়!’’ কুমোরপাড়ায় ত্রিপলের নীচে প্রতিমা রেখে চলছে শেষ লগ্নের কাজ। শিল্পী হাবল পাল, গুপী পালেরা বলেন, ‘‘প্রতিমা তৈরিতে যে রঙ ব্যবহার হয় তা বৃষ্টিতে সহজই ধুয়ে যায়। ছোট প্রতিমাগুলি ছাউনিতে রাখা গেলেও বড়গুলি কোনও রকমে ত্রিপল জড়িয়ে রাখতে হয়েছে।’’

পূর্বস্থলীর মেড়তলা, কালেখাঁতলা ২, মাজিদার নানা জায়গায় কার্তিক পুজোর তোড়জোড় চলছে। কিন্তু সেখানেও এখনও নানা মণ্ডপের কাজ শেষ হয়নি। প্রতিমার কাজও বাকি। পূর্বস্থলী সমাজ কল্যাণ ক্লাবের সুদীপ বিশ্বাস, গোস্বামীপাড়ার মিঠুন ঘোষ, চুপির হাফিজুর রহমান, কাষ্ঠশালীর অরূপ হালদারেরা জানান, এ ভাবে বৃষ্টি চললে পুজোর আনন্দ মাটি হয়ে যাবে। পূর্বস্থলীর পালপাড়া, জাহান্নগর, পাটুলি, সুলন্টু-সহ নানা এলাকায় কার্তিক পুজোর প্রতিমা তৈরি হয়। ছাউনি দিলেও প্রতিমা ভিজে যাচ্ছে বলে জানান শিল্পীরা।

প্রতিমার সাজসজ্জায় ব্যস্ত কাটোয়ার শিল্পী তিনকড়ি পাল, খোকন পালেরা বলেন, ‘‘আর যেন বৃষ্টি না হয়, সেটুকুই প্রার্থনা।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Weather Rain Depression নিম্নচাপ
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE