Advertisement
E-Paper

নেতানেত্রীর ঝগড়ায় বন্ধ হচ্ছে পুজো

দেবু গুহ হলেন ওই ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি। এবং স্থানীয় রাজনীতিতে কাকলিদেবীর ঘোর বিরোধী। বর্তমানে বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবুবাবু অবশ্য বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার বিধায়ক বলবেন।”

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৭ ০১:২২
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

শাসক দলের গোষ্ঠী-রাজনীতির আঁচ গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজোতেও! এতটাই তীব্র সেই কোন্দল যে, বর্ধমান শহর লাগোয়া নাড়ি গ্রামের দাসপাড়া ও বাগপাড়ার ৫০ জন বাসিন্দা সই করে মহকুমাশাসকের (বর্ধমান সদর) কাছে চিঠি দিয়ে নালিশ করেছেন, তৃণমূলের বর্ধমান ১ ব্লক সভানেত্রী কাকলি তা-এর হুমকি ও মারধরের জন্য গ্রামে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে। তাই ২৪ তম দুর্গাপুজো বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।

এর আগে, ওই গ্রামের পঞ্চায়েত সদস্য জীবন পালের বাবা দেবু পালকে মারধর করার অভিযোগ রয়েছে কাকলিদেবী ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে। ওই ঘটনায় সোমবার কাকলিদেবীর আগাম জামিনের আর্জি নাকচ করে দিয়েছে বর্ধমান আদালত। এ দিন কাকলীদেবী বলেন, “একের পর এক মিথ্যা অভিযোগ করা হচ্ছে। গত দু’বছর ধরে ওই পুজোর উদ্বোধক আমি ছিলাম। আমার এত ক্ষমতা, যে সেই পুজো আমি বন্ধ করে দেব! যত সব অপপ্রচার।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘গ্রামের দেবু গুহদের নোংরা রাজনীতির সঙ্গে পেরে উঠছি না।”

দেবু গুহ হলেন ওই ব্লকের প্রাক্তন সভাপতি। এবং স্থানীয় রাজনীতিতে কাকলিদেবীর ঘোর বিরোধী। বর্তমানে বর্ধমান ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি দেবুবাবু অবশ্য বলেন, “এ বিষয়ে যা বলার বিধায়ক বলবেন।” বর্ধমান উত্তরের বিধায়ক নিশীথ মালিক বিষয়টি এড়িয়ে গিয়েছেন। দলের জেলা সভাপতি তথা মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ বলেন, “ঘটনাটি আমি জানিনা। খোঁজ নিয়ে দেখব।” একই কথা জানিয়েছেন মহকুমাশাসক পুষ্পেন্দু সরকার।

ঘটনার সূত্রপাত প্রায় তিন সপ্তাহ আগে। দেবু-গোষ্ঠীর অভিযোগ, গত ৪ সেপ্টেম্বর সন্ধেয় কাকলিদেবী-সহ তিরিশ জনের একটি ‘বাইক বাহিনী’ নাড়ি গ্রামের দাসপাড়ায় ঢুকে ‘পুজো বন্ধ’ করার নির্দেশ দেয়। ওই ঘটনাকে ঘিরে স্থানীয় পঞ্চায়েত সদস্যের বাবাকে মারধর করা হয়। তাঁকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে স্থানান্তরিত করে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা করানো হয়। মহকুমাশাসককে দেওয়া চিঠিতে বাসিন্দারা লিখেছেন, ‘৬ সেপ্টেম্বর কাকলি গুপ্তরা দুষ্কৃতীদের সঙ্গে করে গ্রামে নিয়ে আসেন। তাঁরা পুজোর প্যান্ডেল খুলতে বাধ্য করেন।’

গ্রামের একটি ক্লাব প্রতি বছর এই পুজো করে। পুজোর অন্যতম উদ্যোক্তা জীবনবাবুর দাবি, মণ্ডপ ও প্রতিমা তৈরির বরাত দেওয়া হয়ে গিয়েছিল। গ্রাম থেকে প্রাথমিক ভাবে সাত হাজার টাকা চাঁদাও উঠেছিল। কিন্তু, কাকলিদেবীর হুমকির জেরে সব ভেস্তে গেল। আর এক পুজো কর্তা বীরু সরকার বলেন, “এখন বাড়ি বাড়ি গিয়ে চাঁদা ফেরত দেওয়ার ভাবনাচিন্তা চলছে।’’ প্যান্ডেল খুলে দেওয়ার অভিযোগ মানতে চাননি কাকলিদেবী। তাঁর শিবিরের লোকেদের আবার দাবি, দেবু-গোষ্ঠীর ‘মিথ্যা’ অভিযোগের জেরে পুলিশের গ্রেফতারি এড়াতে গ্রামের বেশির ভাগ যুবক বাইরে রয়েছেন। এই অবস্থায় পুজো করবে কে?

রাজনীতির কাজিয়ায় তেমন আগ্রহ নেই গ্রামের সাধারণ বাসিন্দাদের। তাঁরা চান পুজো হোক। বুলা রাজবংশী, রাখী পাল, শম্পা চক্রবর্তীদের ক্ষোভ, “রাজনীতির কারণে আমাদের ২৪ বছরের পুজো বন্ধ হয়ে গেল। এক কিলোমিটার দূরে গিয়ে এ বার পুজো দিতে হবে।”

Durga Puja Bardhaman Politics TMC তৃণমূল বর্ধমান
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy