Advertisement
২০ এপ্রিল ২০২৪
Durgapur Barrage

তিন বছরের মধ্যে ফের ভাঙল গেট

এ দিকে, ব্যারাজের গেট ভেঙেছে শুনে ২০১৭-র মতো এ বারেও ভিড় জমাতে শুরু করেন বাসিন্দারা।

নীচে, ব্যারাজ পরিদর্শনে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

নীচে, ব্যারাজ পরিদর্শনে জেলাশাসক। নিজস্ব চিত্র

সুব্রত সীট
দুর্গাপুর শেষ আপডেট: ০১ নভেম্বর ২০২০ ০২:৪৮
Share: Save:

২০১৭-র পরে ২০২০। তিন বছরের মধ্যে ফের গেট ভেঙে বিপত্তি দুর্গাপুর ব্যারাজে। সেই সঙ্গে ব্যারাজকে কেন্দ্র করে জনতার উৎসাহ, রাজনৈতিক চাপানউতোর, সবই ফিরে এল শহরে।

এ দিন ভোর সাড়ে ৫টায় ব্যারাজ লাগোয়া পার্কের কর্মী, নদিয়ার নবদ্বীপের বাসিন্দা কমল ওঁরাও ব্যারাজের কাছাকাছি দামোদরের চরে গিয়েছিলেন। আচমকা বিকট শব্দ শোনেন। দেখেন, হু-হু করে জল বেরোচ্ছে ৩১ নম্বর গেট দিয়ে। ওই এলাকায় প্রতিদিন মাছ ধরেন জেলেরা। তেমনই দু’জন বাঁকুড়ার শালগাড়ার বাসিন্দা মঙ্গল বাগদি, খগেন বাগদি। তাঁরা বলেন, ‘‘ভোরে চা খাচ্ছিলাম লাগোয়া দোকানে। আচমকা দেখি, জলের তোড়ে নৌকা, জাল ভেসে যাচ্ছে। সাতটি নৌকা ও পাঁচটি জাল ভেসে গিয়েছে।’’

খবর জানাজানি হতেই ব্যারাজে যান দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তি, দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল, ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ। বরো চেয়ারম্যান বলেন, ‘‘ঘটনার খবর পেয়েই দফতরের মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারীকে বিষয়টি জানানো হয়। দ্রুত পরবর্তী পদক্ষেপ করে সেচ দফতর।’’ কিছুক্ষণ পরে আসেন জেলাশাসক (পশ্চিম বর্ধমান) পূর্ণেন্দু মাজি। তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাজের জল বার করতে কয়েকটি গেট খুলে দেওয়া হয়েছে।’’ সেচ দফতর জানিয়েছে, মোট পাঁচটি গেট খুলে ব্যারাজের জল বার করে দেওয়া হচ্ছে। জল পুরোপুরি বেরিয়ে গেলে শুরু হবে গেট মেরামতের

সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, যে গেটটি বিকল হয়েছে সেটি লম্বায় ১৮.৬৬ মিটার ও উচ্চতায় ৫.৮৫ মিটার। ব্যারাজে ‘স্ট্যান্ডবাই’ হিসেবে থাকা নতুন গেটের মাপ নিয়ে দেখা হচ্ছে। যদি মাপ মিলে যায় তবে নতুন গেট লাগিয়ে দেওয়া হবে। তা না হলে ঝালাই করতে হবে। ঝালাইয়ের কাজ হয়ে গেলে দরকার হলে জলের চাপ কমাতে সামনে ‘ফ্লোটিং গেট’ লাগিয়ে দেওয়া হবে। কিন্তু ফ্লোটিং গেট ব্যারাজে থাকতেও তা কেন বিকল গেটে লাগানোর ব্যবস্থা করা হল না? সেচ দফতরের সুপারিন্টেন্ডিং ইঞ্জিনিয়ার (দামোদর ইরিগেশন সার্কেল) দেবাশিস পড়ুয়া বলেন, ‘‘ওই গেটের সামনে জলের যা বেগ তাতে ফ্লোটিং গেট লাগানো সম্ভব ছিল না।’’ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিকেল পর্যন্ত ব্যারাজের জলাধারের অধিকাংশ এলাকায় চর জেগে ওঠে। তার মধ্যে মাছ ধরতে নেমে পড়েন স্থানীয় জেলেরা। রাতের দিকে ব্যারাজ শুকিয়ে যায়।

এ দিকে, ব্যারাজের গেট ভেঙেছে শুনে ২০১৭-র মতো এ বারেও ভিড় জমাতে শুরু করেন বাসিন্দারা। ফলে, যান চলাচলের পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে সমস্যায় পড়ে বাঁকুড়ার বড়জোড়া থানার পুলিশ। বেনাচিতি থেকে এসেছিলেন শ্যামল সূত্রধর। তিনি বলেন, ‘‘২০১৭ সালেও এসেছিলাম। ব্যারাজের জল বেরিয়ে যাওয়ার পরে শুকনো দামোদরে নেমে ভেবেছিলাম, জীবনে আর কখনও এমন অভিজ্ঞতা হবে না। পরিস্থিতি যা দেখছি, রবিবার সকালে ফের শুকনো ব্যারাজে নামতে পারব!’’ বিধাননগর থেকে এসেছিলেন দেবাশিস আচার্য। তিনি বলেন, ‘‘এক বন্ধু সোশ্যাল মিডিয়ায় জানাল, ফের গেট ভেঙেছে ব্যারাজে। দুশ্চিন্তায় পড়ে গিয়েছি। তাই কী ঘটেছে, তা নিজের চোখে দেখতে এলাম।’’ তবে, ব্যারাজ কর্তৃপক্ষ, পুলিশ-প্রশাসন অযথা ভিড় না করার আবেদন জানিয়েছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Durgapur Barrage Durgapur Adminitration
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE