E-Paper

ঠিকাকর্মীদের জন্যই কি বার বার বিড়ম্বনা

বার বার ঠিকাকর্মীদের নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে। কয়েক বছর ধরেই চলছে এই প্রবণতা। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু বাস্তবে পরিস্থিতি বদলাচ্ছে কি কিছু?

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ১৭ নভেম্বর ২০২৫ ০৮:৩৬
বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ।

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ। ফাইল চিত্র।

এক, ঠিকাকর্মীর বিরুদ্ধে হাসপাতালের মধ্যে মহিলার সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ। দুই, আয়াদের বিরুদ্ধে ক্রিটিক্যাল কেয়ার ইউনিটে রোগী ভর্তির জন্য টাকা নেওয়ার অভিযোগ।

দুই ঘটনাই খুব সাম্প্রতিক সময়ে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের। কর্তৃপক্ষেপ দাবি, বার বার ঠিকাকর্মীদের জন্যই বিড়ম্বনায় পড়ছে হাসপাতাল। করোনা-পরবর্তী সময়ে যথাযথ দায়িত্ব পালন না করা থেকে শুরু করে রোগীদের ট্রলি দেওয়া নিয়ে সমস্যা, সবেতেই নাম জড়িয়েছিল এই ঠিকাকর্মীদের একাংশের। এ বার রোগীর সঙ্গে থাকা আত্মীয়ের সঙ্গে অশালীন আচরণের জন্য গ্রেফতারও হয়েছেন এক ঠিকাকর্মী। প্রশ্ন উঠছে, এই চুক্তিভিত্তিক বা ঠিকাকর্মীদের উপরে নিয়ন্ত্রণ রাখবে কে? কী ভাবেই বা যাচাই করা হবে তাঁদের?

বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে বর্তমানে প্রায় সাড়ে সাতশো ঠিকাকর্মী রয়েছেন। তাঁরা বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ, হাসপাতাল, অনাময় হাসপাতাল, হস্টেল এবং ডেন্টাল কলেজে কাজ করেন। মাসে সাত-সাড়ে সাত হাজারের কাছাকাছি রোজগার হয়। বিভিন্ন এজেন্সি এই কর্মীদের সরবরাহ করে। কর্মীদের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ ট্রলি না দেওয়ার। রোগীর পরিজনেদের দাবি, জরুরি বিভাগ থেকে ট্রলি নিয়ে অন্য ওয়ার্ডে যাওয়ার জন্য কোনও ওয়ার্ড বয় পাওয়া যায় না। ট্রলি পেতে গেলে বিস্তর অনুরোধ, এমনকি টাকাও দিতে হয়। ওয়ার্ডে নিরাপত্তা রক্ষী নিয়েও মাঝেমধ্যে সমস্যা হয়। বছরকয়েক আগে, হাসপাতালের রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে এই নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ। তারপরে ট্রলির সংখ্যা কিছুটা বাড়ানো হয়। চাকা ভাঙা ট্রলির বদলে ভাল ট্রলি দেওয়া হয়। তার পরেও সমস্যা পুরোপুরি মেটেনি।

রোগীর আত্মীয়দের একটা বড় অংশের দাবি, জরুরি বিভাগ থেকে এক্স-রে, ইসিজি, ইউএসজি বা এমআরআই করাতে নিয়ে যাওয়ার সময়ে ঠিকাকর্মীদের পাওয়া যায় না। রোগীর সঙ্গে থাকা লোকজনদেরই এই কাজ করতে হয়। রোগীর সঙ্গে একা মহিলা থাকলে সমস্যাটা আরও মারাত্মক হয় বলেই ভুক্তভোগীদের দাবি। রোগী কল্যাণ সমিতির একাধিক বৈঠকেও হাসপাতালের ঠিকাকর্মীদের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা, রোগীর আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার, মারধর সহ একাধিক অভিযোগ সামনে এসেছে। রাতবিরেতে সিসিইউয়ে ভর্তি করাতে গেলেও টাকা না দিলে শয্যা দেওয়া হবে না বলে দাবি করেছেন আয়ারা, এমনই অভিযোগ রোগীর পরিজনেদের। দিন প্রতি চারশো টাকা করে দিতে হয়েছে বলেও দাবি ওই পরিবারের।

হাসপাতালের এক কর্তার দাবি, বর্ধমান মেডিক্যালের পরিষেবা আগের থেকে অনেক উন্নত হয়েছে। নতুন নতুন বিভাগ থেকে শুরু করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা সবই হচ্ছে। টেলিমেডিসিনে রাজ্যের মধ্যে তারা মডেল। তবে এই ধরনের কিছু বিক্ষিপ্ত ঘটনা হাসপাতালের মর্যাদা নষ্ট করছে। তাহলে উপায়? কী ভাবছেহাসপাতাল? (চলবে)

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Burdwan Nanny Contractors

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy