Advertisement
১৭ এপ্রিল ২০২৪
Examinees

উত্তরপত্র জমা দিতে হিমশিম

পরীক্ষার্থীদের অনেকের অভিযোগ, নানা এলাকায় দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্টফোন না থাকা-সহ বিভিন্ন সমস্যায় অনলাইনে পরীক্ষা শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তরপত্র পিডিএফ পদ্ধতিতে জমা দেওয়া সমস্যার। তা জানার পরে, বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থায় কলেজে খাতা জমা নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বর্ধমান শেষ আপডেট: ০২ অক্টোবর ২০২০ ০৩:২৯
Share: Save:

কেউ কলেজের মূল গেটের অদূরে বসে। কেউ আবার গাছতলায়। অনেকে পঞ্চায়েত দফতর বা চেনা-পরিচিত দোকানে। বৃহস্পতিবার বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক স্তরের ষষ্ঠ তথা চূড়ান্ত সিমেস্টারের পরীক্ষার প্রথম দিনে দেখা গেল এমনই নানা ছবি।

পরীক্ষার্থীদের অনেকের অভিযোগ, নানা এলাকায় দুর্বল ইন্টারনেট সংযোগ, স্মার্টফোন না থাকা-সহ বিভিন্ন সমস্যায় অনলাইনে পরীক্ষা শেষে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে উত্তরপত্র পিডিএফ পদ্ধতিতে জমা দেওয়া সমস্যার। তা জানার পরে, বিভিন্ন কলেজ কর্তৃপক্ষ বিকল্প ব্যবস্থায় কলেজে খাতা জমা নেওয়ার বন্দোবস্ত করেছেন। এ দিন পানাগড় থেকে মানকর কলেজে খাতা জমা দিতে যাওয়ার পথে মোটরবাইক দুর্ঘটনায় জখম হয়ে কাঁকসার এক হাসপাতালে ভর্তি হন এক ছাত্রী। তিনি খাতা জমা দিতে পারেননি বলে রিপোর্ট করে কলেজ কর্তৃপক্ষ ছাত্রীর প্রতি ‘মানবিক’ হওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করেছেন।

চূড়ান্ত সিমেস্টার শুরু হয়ে গেলেও বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে এখনও পঞ্চম ও তৃতীয় সিমেস্টারের ফল বেরোয়নি। সেপ্টেম্বরের মধ্যে ফল প্রকাশের আশ্বাস দিয়েছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা। বিষয়টি নিয়ে সরব হয়েছে নানা ছাত্র সংগঠনগুলি। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তারা এর জন্য কলেজগুলিকে ‘দায়ী’ করছেন। তাঁদের দাবি, নির্দিষ্ট সময়ে নানা কলেজ ‘আন্তঃমূল্যায়ন’ নম্বর পাঠায়নি। বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য আশিস পাণিগ্রাহীর বক্তব্য, ‘‘কোন কোন কলেজ পরীক্ষার্থীদের আন্তঃমূল্যায়ন নম্বর জমা দেয়নি, তার তালিকা রয়েছে। তাদের চিঠি দেওয়া হবে।’’

পানাগড়ের কাছে দামোদরের চরমানা গ্রামের কয়েকজন পরীক্ষার্থী অনলাইনে খাতা জমা দিতে অসুবিধায় পড়ার কথা জানিয়েছিলেন। মানকর কলেজের অধ্যক্ষ সুকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘আমরা বিকল্প ব্যবস্থা করে ওই পরীক্ষার্থীদের খাতা জমা নেওয়ার ব্যবস্থা করেছি।’’ কাটোয়ার চন্দ্রপুর কলেজ সূত্রে জানা যায়, সব পড়ুয়া পরীক্ষা দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৬০% অনলাইনে, বাকিরা কলেজে এসে খাতা জমা দিয়েছেন। জামালপুর কলেজের অধ্যক্ষ কার্তিকচন্দ্র মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘আমাদের বেশিরভাগ পড়ুয়া প্রত্যন্ত গ্রামের বাসিন্দা। বলা হয়েছিল, যাঁরা অনলাইনের সুবিধা নিতে পারবেন না, তাঁরা যেন কলেজের কাছাকাছি এসে পরীক্ষা দেন, যাতে আধ ঘণ্টার মধ্যে কলেজে খাতা জমা দিতে পারেন।’’ শ্যামসুন্দর কলেজের অধ্যক্ষ গৌরীশঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের দাবি, “পড়ুয়ারা রাস্তার ধারে, গাছতলায় পরীক্ষা দিচ্ছেন। পরিকাঠামো থাকা সত্ত্বেও জায়গা দিতে পারছি না। দেখে খারাপ লাগছিল।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্দেশ অনুযায়ী, সব পড়ুয়াকে মুচলেকা দিয়ে জানাতে হয়েছে, তাঁরা নিজের বাড়ি বা পরিজনের বাড়ি থেকে পরীক্ষা দিচ্ছেন। ‘বহিরাগত’ কারও সাহায্য নিচ্ছেন না। পরীক্ষা শেষ হওয়ার আধ ঘণ্টার মধ্যে খাতা অনলাইনে জমা দিতে হবে। সহ-উপাচার্য বলেন, ‘‘কলেজে গিয়ে যে সব পরীক্ষার্থী খাতা জমা দিয়েছেন, তাঁরা অনলাইনে খাতা জমা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন, সে প্রমাণ রাখতে হবে।’’

পড়ুয়াদের একাংশের দাবি, ই-মেলে খাতা জমা দিলেও, তা জমা পড়েছে কি না জানার উপায় থাকছে না। তাই তাঁরা কলেজ কর্তৃপক্ষের কাছে ‘ডেলিভারি রিপোর্ট’ দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। অনেক কলেজ কর্তৃপক্ষের আশ্বাস, আজ, শুক্রবার থেকে সেই ব্যবস্থা হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Examinees Answersheets Exam
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE