Advertisement
১৯ মে ২০২৪

টাকার সন্ধানে দিনভর ঘুরল ব্যাঙ্ক

এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রাম, দিনভর চক্কর কাটলেন তাঁরা। শেষমেশ ‘নিখোঁজ’ টাকার সন্ধান পেয়ে হাঁফ ছাড়লেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী-আধিকারিকেরা!

নিজস্ব সংবাদদাতা
গলসি শেষ আপডেট: ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৭ ০১:৩২
Share: Save:

এক গ্রাম থেকে আর এক গ্রাম, দিনভর চক্কর কাটলেন তাঁরা। শেষমেশ ‘নিখোঁজ’ টাকার সন্ধান পেয়ে হাঁফ ছাড়লেন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের কর্মী-আধিকারিকেরা!

শুক্রবার সন্ধেয় গলসির বাজার এলাকায় ওই ব্যাঙ্কের এটিএম থেকে নির্দিষ্ট অঙ্কের পাঁচ গুণ বেশি টাকা তুলতে পারছিলেন গ্রাহকেরা। সে কথা জানাজানি হতেই টাকা তুলতে ভিড় জমে যায় এটিএমে। ব্যাঙ্কের হিসেবে, ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই অতিরিক্ত ১ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা গ্রাহকদের হাতে চলে যায়। ওই অতিরিক্ত টাকা কার কার কাছে গিয়েছে, সেই তথ্য হাতে নিয়ে শনিবার গলসি থানা এলাকার একটার পর একটা গ্রামে গিয়ে হানা দেন ব্যাঙ্কের লোকজন। উপভোক্তাদের সঙ্গে দেখা করে টাকা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন গলসির শাখা ও বর্ধমান শাখার ম্যানেজারেরা। ব্যাঙ্কের গলসি শাখার ম্যানেজার আতিফ চৌধুরী পরে বলেন, “উপভোক্তাদের সহযোগিতায় আমরা সব টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি। ব্যাঙ্কের অভ্যন্তরীণ বিষয় থাকায় সব কিছু বলতে পারছি না।”

এ দিন যেমন স্থানীয় পুরসা গ্রামের সাজু শেখকে ৫২ হাজার টাকা এবং মিলন শেখকে ৩২ হাজার টাকা ফিরিয়ে দিতে দেখা গেল। ব্যাঙ্ক কর্তাদের কাছে তাঁরা দাবি করেন, “কীভাবে ওই টাকা ফেরত দেব, তা নিয়ে খুবই চিন্তায় ছিলাম। ভাবছিলাম ব্যাঙ্কে গিয়ে দিয়ে আসব। কিন্তু আপনারা গ্রামে এসে নিয়ে যাওয়ায় ভালই হল।” এ দিন পুরসা, গলসি ছাড়াও আরও ৮-১০টি গ্রামে গিয়ে ওই বাড়তি টাকা সংগ্রহ করে নিয়ে আসেন ব্যাঙ্কের কর্তারা।

আবার পারাজ গ্রামের বসিরুদ্দিন শেখ এবং দিঘিরপাড় হাইমাদ্রাসার মজনু আনসারির মতো কোনও কোনও গ্রাহক বাড়তি টাকা পুলিশকে ফেরত দিয়ে দেন। বসিরুদ্দিন বলেন, “আমরাই প্রথম ঘটনার কথা এটিএমের রক্ষীকে জানাই। তিনি শাটার নামিয়ে দেন। কিছু পরে গলসি থানায় বিষয়টি জানালে ওসি রাকেশ সিংহ এসে বন্ধ শাটারে তালা মেরে দেন।” গলসি শাখার ম্যানেজারকে ঘটনার খবর দেন ওসি। একই সঙ্গে বসিরুদ্দিনদের বাড়তি টাকা থানায় জমা করে নেন। এ দিন ওসি-ই ওই টাকা ম্যানেজারের হাতে তুলে দেন। কেন এমন গোলমাল হল? ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এটিএম মেশিনে যান্ত্রিক গন্ডগোলের জন্যই সমস্যা দেখা দিয়েছিল। কী সেই ত্রুটি? ঘটনার দিন বিকেলে ওই এটিএমে টাকা ভরা হয়েছিল। ১০০, ৫০০ ও ২০০০ টাকার নোটের পৃথক ‘ট্রে’ থাকে। ১০০ টাকার ট্রে-তে ভুল করে ৫০০ টাকার নোট রেখে দেওয়া হয়েছিল। ব্যাঙ্কের এক কর্মীর কথায়, ‘‘ধরুন, আপনি ৪০০ টাকা বের করার নির্দেশ দিলেন। এটিএমের স্বয়ংক্রিয় যন্ত্র তখন নির্দিষ্ট ১০০ টাকার ট্রে থেকে নির্ধারিত নোট বের করে। এ ক্ষেত্রে সেখানে ৫০০ টাকার নোট থাকায় ৪০০ টাকার বদলে চারটি ৫০০ টাকার নোট বের হয়েছে। তার ফলে গ্রাহক দু’হাজার টাকা পেয়ে গিয়েছেন।’’

স্থানীয় এক বাসিন্দার টিপ্পনী, “টাকা হারালে কী হয় তা হাড়ে হাড়ে টের পেল ব্যাঙ্কের কর্তারা!”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

ATM
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE