Advertisement
E-Paper

‘অমিল’ ধান বিক্রির সুযোগ, ক্ষোভ চাষিদের

ব্লক অফিস থেকেও এ বিষয়ে কোনও দিশা না মেলায় সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন, অভিযোগ করেন চাষিরা।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২১ ০৩:২৯
সচেতনতা প্রচারে কান দিচ্ছেন না চাষিদের একাংশ। চলছেই নাড়া পোড়ানো। খণ্ডঘোষে। ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী।

সচেতনতা প্রচারে কান দিচ্ছেন না চাষিদের একাংশ। চলছেই নাড়া পোড়ানো। খণ্ডঘোষে। ছবি: সুপ্রকাশ চৌধুরী।

গত বছর সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রির জন্য রেজিস্ট্রেশন করিয়েছিলেন চাষিরা। সরকারের নতুন নিয়ম অনুযায়ী, গত বছরের রেজিস্ট্রেশনেই এ বার ধান বিক্রি করা যাবে, এ বার আর রেজিস্ট্রেশন করানোর প্রয়োজন নেই। অথচ, দু’মাস কেটে যাওয়ার পরেও সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে পারছেন না বলে অভিযোগ মেমারি ২ ব্লকের সাতগেছিয়া ও বিজুরের কয়েকশো চাষির। তাঁদের দাবি, প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরে জানালেও শুকনো আশ্বাস ছাড়া কিছু মেলেনি। ওই ব্লকেরই বড়পলাশন ১ পঞ্চায়েতে ধান কেনার শিবির হয়েছিল। তা আচমকা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চাষিরা বিপাকে পড়েছেন বলে জানান চাষিরা। সমস্যাগুলি নিয়ে মেমারি ২ ব্লকে প্রশাসনিক বৈঠক হওয়ার কথা বলে ব্লক সূত্রে জানা যায়।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সাতগেছিয়া সমবায় কৃষি উন্নয়ন সমিতির মাধ্যমে সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি করে থাকেন চাষিরা। গত বছর কয়েকশো চাষি ওই সমবায় সমিতিতে রেজিস্ট্রেশন করিয়ে ধান বিক্রি করেছিলেন। করোনা পরিস্থিতির জন্য এ বার আর নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করার প্রয়োজন নেই বলে ঘোষণা করে সরকার। কিন্তু গত বছরের রেজিস্ট্রেশনে ধান বিক্রি করতে গিয়ে বিপাকে পড়েছেন বলে দাবি চাষিদের। তাঁদের অভিযোগ, ওই সমবায় সমিতি এ বার ধান কেনা শুরু করেনি। তারা ধান আদৌ কিনবে কি না, সে নিয়েও ধোঁয়াশা আছে। সে জন্য চাষিরা দল বেঁধে কৃষক বাজারে খাদ্য দফতরের পারচেজ় অফিসারের সঙ্গে দেখা করে জানতে চান, ওই সমিতি ধান না কিনলে তাঁরা গত বছরের রেজিস্ট্রেশনে ধান বিক্রি করতে পারবেন কি না? চাষিদের দাবি, সদুত্তর দিতে পারেননি খাদ্য দফতরের ওই কর্তা। ব্লক অফিস থেকেও এ বিষয়ে কোনও দিশা না মেলায় সরকারের কাছে ধান বিক্রি করতে তাঁরা বিপাকে পড়েছেন, অভিযোগ করেন চাষিরা।

ওই এলাকার চাষি অশোক ঘোষের কথায়, ‘‘সরকারের কাছে ৮০ বস্তা ধান বিক্রি করব ভেবেছিলাম। কিন্তু সাতগেছিয়ার সমবায় সমিতি ধান কিনছে না। কৃষক বাজারে নতুন করে রেজিস্ট্রেশন করে ধান বিক্রি করব বলে গিয়েছিলাম। সেখানেও জানানো হয়েছে, নতুন করে রেজিস্ট্রেশন হবে না।’’ আর এক চাষি পরেশ ঘোষের দাবি, ‘‘বিডিও-কে ফোন করা হয়েছিল। তিনি বিষয়টি দেখার আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পরে বেশ কিছু দিন কেটে গেল! ধান বিক্রির বিজ্ঞাপন দেখছি, কিন্তু বিক্রি করার সুযোগ পাচ্ছি না আমরা।’’

সাতগেছিয়া সমবায় সমিতির ম্যানেজার সোমনাথ দে দাবি করেন, ‘‘আমরা ধান কিনব বলে বসে রয়েছি। খাদ্য দফতর থেকে বলা হয়েছে, চালকল জোগাড় করে দিলে তবেই ধান কেনার অনুমতি দেবে। যে কাজ খাদ্য দফতরের করার কথা, তা করার জন্য আমাদের দৌড়তে হচ্ছে। চালকল জোগাড় হচ্ছে না।’’ বিজেপি যুব মোর্চার জেলা (কাটোয়া) সাংগঠনিক সাধারণ সম্পাদক পলাশ মণ্ডলের অভিযোগ, ‘‘ধান বিক্রির কোনও সুষ্ঠু ব্যবস্থা করতে পারেনি তৃণমূলের সরকার। সে জন্যই চাষিদের হয়রান হতে হচ্ছে।’’

যদিও এই অভিযোগ মানতে চাননি জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ তথা মেমারি ২ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মহম্মদ ইসমাইল। তিনি বলেন, ‘‘রবিবারই সাতগেছিয়া ও বড়পলাশনের মণ্ডলগ্রামে চাষিদের সমস্যার কথা শুনেছি। প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে সোমবার সকাল ১১টা নাগাদ বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।’’ ওই ব্লকের সমবায়-পরিদর্শক সমীর মুখোপাধ্যায় জানান, দু’এক দিনের মধ্যে বিষয়টি মিটে যাবে। বিডিও (‌মেমারি ২)-র সঙ্গে বারবার চেষ্টা করেও ফোনে যোগাযোগ করা যায়নি। জবাব মেলেনি মেসেজেরও।

paddy Farmers Rage MSP
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy