Advertisement
E-Paper

জলের বিকল্প ব্যবস্থা নেই, ক্ষুব্ধ চাষিরা

লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন চলছে গ্রামে-গ্রামে। তারই মধ্যে জলের অভাবে ফসল শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা। দুর্গাপুজোর আগে জেলা প্রশাসন বৈঠক করে ‘বিকল্প’ উপায়ে জলের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিল।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:২৩
শুকনো জমি। নিজস্ব চিত্র

শুকনো জমি। নিজস্ব চিত্র

লক্ষ্মীপুজোর আয়োজন চলছে গ্রামে-গ্রামে। তারই মধ্যে জলের অভাবে ফসল শুকিয়ে যাওয়ার আশঙ্কায় চাষিরা। দুর্গাপুজোর আগে জেলা প্রশাসন বৈঠক করে ‘বিকল্প’ উপায়ে জলের ব্যবস্থা করার আশ্বাস দিয়েছিল। তার দু’সপ্তাহ পরেও তেমন ব্যবস্থার সুবিধা তাঁদের কাছে পৌঁছয়নি বলে দাবি চাষিদের। জল নিয়ে কোনও আশার কথা শোনাতে পারছেন না প্রশাসনের কর্তারাও।

পুজোর আগে জলের দাবিতে দফায়-দফায় পথ অবরোধ শুরু করেন আউশগ্রাম, ভাতার, মঙ্গলকোট ও মন্তেশ্বরের চাষিরা। ক্ষোভের আঁচ এসে পড়ে জেলা শহরেও। জেলা প্রশাসন তড়িঘড়ি বৈঠক করে। সেখানে জানা যায়, মাইথন-পাঞ্চেত জলাধারে চাষের জন্য দেওয়ার মতো জল নেই। সেচখালের জলের বদলে ‘বিকল্প’ হিসেবে ক্ষুদ্র সেচ দফতরকে পাম্পের ব্যবস্থা করে জল দেওয়ার ব্যবস্থা করতে বলা হয়। অভিযোগ, ওই বৈঠকের পরে ক্ষুদ্র সেচ দফতরকে মাঠে নামতেই দেখা যায়নি। বৈঠকে ঠিক হয়েছিল, বিদ্যুতের বিল বাকি থাকায় যে সব সাবমার্সিবলের সংযোগ কাটা হয়েছে, সেগুলিতে ফের সংযোগ জুড়ে দেওয়া হবে। সেখানেও বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বাড়তি তৎপরতা দেখা যাচ্ছে না বলে অভিযোগ তুলেছেন চাষিরা।

কৃষি দফতরের হিসেবে, জেলায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে এ বার খরিফ চাষ হয়েছে। এর মধ্যে ৩০ শতাংশ জমির ফসল জলের অভাবে ভুগছে। সেচ কবলিত ওই সব জমির ফসল বাঁচানোর জন্য আবহওয়ার উপরে ভরসা করা ছাড়া কোনও উপায় নেই। বিকল্প উপায়ে ২-৫ শতাংশ জমির ফসল বাঁচানো যেতে পারে। একই বক্তব্য চাষিদেরও। ভাতারের রাধানগর গ্রামের জয়নাল আবেদিনের কথায়, ‘‘এই সময়ে মাঠ জল থইথই করার কথা। সেখানে মাঠ শুকিয়ে গিয়েছে। সেচখালের জলের বদলে সাবমার্সিবল পাম্পের ভূগর্ভস্থ জলে কাজ চালানো যেত। কিন্তু পাম্পের বিদ্যুৎ সংযোগও বিচ্ছিন্ন!’’

রায়নার দু’টি ব্লকে বিস্তীর্ণ জমিতে সুগন্ধী ধানের চাষ হয়। জলের অভাবে ধান শুকিয়ে যাচ্ছে বলে সেখানকার চাষিদের অভিযোগ। তাঁরা জানান, এই সময় মাঠে নানা রকম পোকার প্রাদুর্ভাব হয়। সে জন্য নানা ওষুধ ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হবে। কিন্তু জলের অভাবে তা করা যাচ্ছে না। চাষিদের দাবি, জলের অভাবে ধান গাছে রোগের প্রকোপ দেখা দিচ্ছে। মঙ্গলকোটের কানাইডাঙার ঝুলন গোস্বামী থেকে ভাতারের লালচাঁদ শেখদের কথায়, ‘‘ধানগাছ শুকিয়ে খড় হয়ে যাচ্ছে। সবুজের বদলে লাল রঙ দেখা দিচ্ছে গাছে। গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’’

সেচ দফতরের কর্তারা অবশ্য সাফ জানাচ্ছেন, জলাধারে জল না থাকলে জল দেওয়া সম্ভব নয়। সে কারণে গলসি, বর্ধমান ও মেমারির একাংশ ছাড়া আর কোনও ব্লকেই সেচখালের মাধ্যমে জল পৌঁছচ্ছে না। বিকল্প ব্যবস্থার কী হাল? প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, ‘‘ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে তা সিন্ধুতে বিন্দু। আকাশের উপরেই ভরসা করা ছাড়া আর কোনও উপায় দেখছি না!’’

ফসল নিয়ে আশঙ্কার মধ্যেই কাল, বুধবার ‘লক্ষ্মীলাভে’র প্রার্থনা করবেন চাষিরা।

Farmer Fumin Water Source Alternative
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy