Advertisement
২৫ এপ্রিল ২০২৪

নিশ্চিত লাভের আশায় বাড়ছে ব্রকোলির চাষ

ধান চাষই করতেন ওঁরা। কিন্তু মাঝেসাঝেই বন্যায় সেই ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া বা উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়ায় লাভ নিয়ে তৈরি হতো অনিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচতেই মঙ্গলকোটের দু’জন চাষি শুরু করেন ব্রকোলির চাষ।

চলছে চাষ। নিজস্ব চিত্র।

চলছে চাষ। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
মঙ্গলকোট শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:০৬
Share: Save:

ধান চাষই করতেন ওঁরা। কিন্তু মাঝেসাঝেই বন্যায় সেই ধান নষ্ট হয়ে যাওয়া বা উৎপাদন আশানুরূপ না হওয়ায় লাভ নিয়ে তৈরি হতো অনিশ্চয়তা। এই অনিশ্চয়তা থেকে বাঁচতেই মঙ্গলকোটের দু’জন চাষি শুরু করেন ব্রকোলির চাষ। লাভও হচ্ছে ভালই। বাসিন্দাদের দাবি, ওই দু’জনকে দেখে অনেকেই ঠিক করেছেন, আগামী মরসুম থেকে তাঁরাও এই চাষ করবেন।

তবে গতানুগতিক চাষ ছাড়ার পরিকল্পনাটা এক দিনে হয়নি। কী রকম? গোতিষ্ঠার দ্বারসিনী গ্রামের রামকৃষ্ণ মণ্ডল ও লাখুরিয়ার বংশ মণ্ডলেরা জানান, ২০১৫ সালে ‘খাতিয়ার নার্সারি’র তরফে তাঁদেরকে বিনামূল্যে দশটি করে ব্রকোলির চারা দেওয়া হয়। তা পরীক্ষামূলক ভাবে জমিতে দেখা যায়, ব্রকোলির ফলন ভাল হচ্ছে। খোঁজ নিয়ে তাঁরা দেখেন, বাজারেও এই সব্জির ভাল কদর রয়েছে। তখনই ব্রকোলি চাষ করবেন বলে ঠিক করেন দু’জনেই। রামকৃষ্ণবাবু জানান, ২০১৬-র মরসুমে প্রায় ১০ কাঠা জমিতে ব্রকোলি চাষ করেছেন। বংশবাবু জানান, জমিতে মাচা তৈরি করে ব্রকোলি ও উচ্ছের চাষ করেছেন। দু’জনেরই কথায়, ‘‘লাভ নিয়ে আর ভাবতে হচ্ছে না।’’

এই চাষে কী রকম লাভ? বংশবাবুরা জানান, ব্রকোলির চাষের জন্য সামান্য খোল আর কিছু রাসায়নিক অথবা জৈব সার প্রয়োগ করলেই চলে। দরকার পড়ে না খেতমজুরদেরও। চাষিদের হিসেবে ১০ কাঠা জমিতে ব্রকোলি চাষ করতে খরচ হয় তিন থেকে চার হাজার টাকা। অথচ লাভ প্রায় ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা। গুসকরা, কাটোয়া, দুর্গাপুর প্রভৃতি এলাকায় ব্রকোলির ভাল চাহিদা রয়েছে বলে চাষিদের দাবি।

কৃষি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, রামকৃষ্ণবাবুদের দেখে আউশগ্রাম, মঙ্গলকোট, নানুর প্রভৃতি এলাকার প্রায় ৩০ জন চাষিও ব্রকোলি চাষ করেছেন। যাঁর উদ্যোগে এলাকায় চাষের শুরু, সেই খাতিয়ার নার্সারির মালিক শিশির মণ্ডলও বেশ খুশি। তাঁর কথায়, ‘‘আসানসোলে গিয়ে প্রথম এই চাষ সম্পর্কে জানতে পারি। এলাকার চাষিরাও ব্রকোলির চাষ করে সুফল পেয়েছেন দেখে ভাল লাগছে। এ বার ৫০ গ্রাম বীজ এনে প্রায় ছ’হাজার চারা তৈরি করেছি। তা বিক্রিও হয়েছে।’’

মঙ্গলকোটের ব্লক কৃষি আধিকারিক উৎপল খেয়ারু বলেন, ‘‘ক্যানসার, সুগার প্রতিরোধে ব্রকোলি খুব উপকারি। এই চাষে উৎসাহ দিতে দু’-এক জন চাষিকে পুরস্কৃত করার কথাও ভাবা হচ্ছে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Broccoli farming
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE