E-Paper

জুনেও নেই পর্যাপ্ত বৃষ্টি, চিন্তা কাটছে না চাষির

মন্তেশ্বরের চাষি গোপাল ঘোষ বলেন, “মাটির তলার জল কিনে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৯:৩২
—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

—প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রায় সারা দিনই মেঘলা আকাশ, তবে বৃষ্টি মিলছে না তেমন। চিন্তা কাটছে না জেলার চাষিদের। এত দিন তীব্র গরমের কারণে আমন ধানের বীজতলা, পাট, আনাজ নিয়ে এক রকম দুশ্চিন্তাতেই কেটেছে তাঁদের। সকলেই তাকিয়ে ছিলেন বর্ষার দিকে। জুন পেরিয়ে গেলেও জেলায় বৃষ্টির পরিমান বেশ কম। অথচ এ সময়েই ধান, পাট, আনাজ চাষে ভাল বৃষ্টি প্রয়োজন বলে জানাচ্ছেন চাষিরা।

রাজ্যের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে পরিচিত পূর্ব বর্ধমান জেলা। প্রায় ৩ লক্ষ ৮০ হাজার হেক্টর জমিতে আমন ধানের চাষ হয় এখানে। জানা গিয়েছে, আমন চাষ বৃষ্টি নির্ভর হলেও বেশ কয়েক বছর ধরে বৃষ্টির পরিমান কমে আসায়, চাষিরা মাটির তলার জল ব্যবহার করছেন। জেলার কৃষি কর্তাদের দাবি, পূর্ব বর্ধমানে বছরে বৃষ্টির প্রয়োজন ১২০০-১৪০০ মিলিমিটার। জুন থেকে সেপ্টম্বরে আমন ধানের বীজতলা, রোপন, ধান গাছের বৃদ্ধি, পাট গাছ পচানো-সহ চাষের নানা কাজের জন্য অন্তত ৭০০ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে ভাল। এর মধ্যে শুধু জুন মাসে ২২৫-২৫০ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি প্রয়োজন। সেখানে এ বছর জুনে বৃষ্টি হয়েছে ৭০ মিলিমিটার।

রবিবার জেলা জুড়ে কিছুটা বৃষ্টি মিলেছে। কৃষি দফতরের তথ্য অনুযায়ী, সোমবার আউশগ্রাম ২ ব্লকে ১২, আউশগ্রাম ১ ব্লকে ৭, গলসি ১ ৩০.৪, মেমারি ১ ২৮.৬, জামালপুরে ৯.৪, মেমারি ২ ৪.৬, রায়নায় ২, ভাতার ৮, কেতুগ্রাম ১ ১০, কেতুগ্রাম ২ ২২, কালনায় ৩৪.৮, পূর্বস্থলী ১ ১৭.৪, পূর্বস্থলী ২ ৫২.৫, মন্তেশ্বরে ৪.২ এবং বর্ধমানে ২.৪ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। অর্থাৎ বৃষ্টির পরিমান চারটি ব্লক ছাড়া বেশির ভাগ এলাকাতেই এতটাই কম যে তাতে চাষের প্রয়োজন তেমন মিটবে না বলে দাবি চাষিদের।

মন্তেশ্বরের চাষি গোপাল ঘোষ বলেন, “মাটির তলার জল কিনে আমন ধানের বীজতলা তৈরি করেছি। জুলাই মাসের শুরুতেই জমিতে আমন ধান পোতার কাজ করতে হবে। ভাল বৃষ্টি না হলে আরও জল কিনতে হবে। চাষের খরচ অনেকটাই বেড়ে যাবে। তবে যেখানে বিকল্প সেচের ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি, সেখানে ভাল বৃষ্টি না হলে আমন চাষ পিছিয়ে যাবে।” পূর্বস্থলী ২ ব্লকের পাট চাষি বসির মোল্লার বক্তব্য, “কিছু দিনের মধ্যেই জমি থেকে পাট কাটা শুরু হবে। অনেকেই পাট কেটে ওই জমিতে ধান চাষ করবেন। কিন্তু জলাশয়গুলিতে জল না থাকায় কী ভাবে পাট পচানো হবে, চিন্তায় আছি।” আনাজ চাষিদের দাবি, “তীব্র রোদে বেশির ভাগ গাছ নষ্ট হয়েছে। কয়েক দফায় ভাল বৃষ্টি মিললে আনাজের জোগান বাড়বে।”

জেলার কৃষি দফতরের এক আধিকারিক কিশোর গোপাল দত্ত বলেন, “জুন মাসে অনেকটাই বৃষ্টির ঘাটতি রয়েছে। অতীতে দেখা গিয়েছে জুন মাসের বৃষ্টির ঘাটতি জুলাই মাসে মিটে যায়। আশা করছি এ বারও তাই হবে।” জেলার এক সহ কৃষি অধিকর্তা পার্থ ঘোষ বলেন, “জুন-জুলাইয়ে চাষের জন্য ভাল বৃষ্টির প্রয়োজন। ১৫ আগস্ট পর্যন্ত আমন রোপন করা যায়। আশা করা যাচ্ছে দ্রুত কিছুটা বৃষ্টি মিললে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।”

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Kalna

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy