১ মার্চ থেকে খুলে গিয়েছে হিমঘরগুলি। মাঠ থেকে চাষিরা আলু তুলতে শুরু করেছেন। সরকারি দরে আলু কেনার ব্যাপারেও শুরু হয়েছে প্রশাসনিক প্রস্তুতি। কিন্তু এখন মাঠে যা দর মিলছে সরকারি দরও সেটাই, দাবি চাষিদের। ফলে অনেকেই আলু নিয়ে যাওয়ার ঝক্কিটা এখনই নিতে চাইছেন না বলে জানা যাচ্ছে। যখন মাঠে দর মিলবে না, তখন সরকার জায়গায় আলু নিয়ে যাবেন বলে দাবি অনেকেরই।
পূর্ব বর্ধমানে ৭০ হাজার হেক্টরের বেশি জমিতে আলু চাষ হয়। বেশির ভাগ চাষি জ্যোতি আলুর চাষ করেন। চাষিরা জানিয়েছেন, এ বার তিন হাজার থেকে বত্রিশশো টাকা বস্তা পিছু দরে ভিন্ রাজ্যের আলু চাষ করতে হয়েছে।ফলে খরচও বেশি হয়েছে। সম্প্রতি জমি থেকে আলু তোলা শুরু হয়েছে। চাষিরা জানিয়েছেন, বিঘা প্রতি জমিতে ৮০ থেকে ১০০ বস্তা ফলন হচ্ছে। প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির সদস্য আনন্দ সাঁতরা জানান, সোমবার জমি থেকে তোলার পরে চাষিরা জ্যোতি আলুর দর পেয়েছেন বস্তা পিছু ৪৫০ টাকা। হিমঘরে মজুত করার পরে বস্তা পিছু আলুর দর ছিল ৪৮০ থেকে ৪৯০ টাকা। কয়েক দিনের মধ্যে আরও বেশি পরিমাণ আলু তোলা শুরু হবে। উত্তরবঙ্গে আলুর ফলন কেমন তাও স্পষ্ট হয়ে যাবে। ফলে এই দর বাড়বে না কমবে তা এখনই বলা শক্ত।
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে চাষিদের কাছ থেকে কেজি প্রতি ৯ টাকা দরে আলু কেনার কথা ঘোষণা করেছে। জেলায় এখনও পর্যন্ত ২৬টি হিমঘর সরকারি দরে আলু কেনার ব্যাপারে সম্মতি দিয়েছে।যার মধ্যে রয়েছে কালনা ১ ব্লকের চারটি এবং কালনা ২ ব্লকের পাঁচটি হিমঘর। সোমবার কালনা ২ ব্লক প্রশাসনের তরফে নোটিশ দিয়ে জানানো হয়েছে, চাষিদের এর জন্য ব্লকের নির্দিষ্ট শিবিরে আবেদন জানাতে হবে। এক জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি সর্বাধিক ৩৫ কুইন্টাল আলু সংরক্ষণের আবেদন জানাতে পারবেন। চাষিদের আবেদনপত্রের সঙ্গে আধার কার্ড, ভোটার কার্ডের প্রতিলিপি, কৃষকবন্ধু প্রকল্পের আইডি জমা দিতে হবে। ২০২৫ সালের ২৫ মার্চ পর্যন্ত চাষিদের স্লিপ দেওয়া হবে।
কালনার চাষি প্রবীর ঘোষ বলেন, ‘‘বর্তমান মাঠ থেকে কেজি প্রতি ন’ টাকা দরে আলু বিক্রি হচ্ছে।বাজার দর কমলে তবে সরকারি দরে আলু বিক্রির কথা ভাবব।’’ সরকারি দর বাড়ানোর জন্য জেলার নানা জায়গায় বিক্ষোভ, অবরোধেও নেমেছে কৃষক সংগঠনগুলি।
জেলার এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখনও পর্যন্ত জেলার ২৬টি হিমঘর চাষিদের আলু নিতে আগ্রহ দেখিয়েছে। হিমঘরের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। নিয়ম অনুযায়ী চাষিরা হিমঘর কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে তাঁদের নিজস্ব অ্যাকাউন্টে টাকা পাবেন। হিমঘরগুলি এর জন্য ব্যাঙ্ক ঋণের সহায়তা পাবে। জুলাই মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহ থেকে মজুত আলু প্রতি সপ্তাহে ৫ শতাংশ হারে বেরোতে শুরু করবে।’’
ওই সময় হিমঘরগুলির আর্থিক ক্ষতি হলে সরকার তা পূরণ করবে বলেও জানান তিনি। তাঁর দাবি, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে এ বছর আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। কালনার মহকুমাশাসক শুভম আগরওয়াল জানান, কারা চাষিতা দেখবেন ব্লক কৃষি আধিকারিকেরা (এডিও)।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)