E-Paper

ঘাসফুলের জায়গায় কাস্তে-হাতুড়ি, দেওয়ালে উলট-পুরাণ

বিধানসভা ভোটের আগে জামালপুরের তৃণমূল প্রার্থী অলোক মাঝির সমর্থনে একাধিক জায়গায় দেওয়াল লিখেছিলেন শাসক দলের কর্মীরা।

সৌমেন দত্ত

শেষ আপডেট: ২৫ এপ্রিল ২০২৩ ১০:০২
দেওয়াল ‘দখল’ সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র

দেওয়াল ‘দখল’ সিপিএমের। নিজস্ব চিত্র

বিরোধীদের ‘দখল’ করা দেওয়াল ‘কেড়ে নিচ্ছে’ শাসক দল— এমন অভিযোগ বারবার ওঠে বঙ্গ-রাজনীতির আঙিনায়। পঞ্চায়েত ভোটের আগে পূর্ব বর্ধমানের জামালপুরে ধরা পড়েছে উল্টো ছবি। সেখানে এ বার তৃণমূলের ‘দখলে’ থাকা দেওয়ালে চুন-রং করে তাতে ভোটের প্রচার শুরু করেছে বিধানসভা ভোটে আসনের নিরিখে শূন্য হয়ে যাওয়া সিপিএম।

বিধানসভা ভোটের আগে জামালপুরের তৃণমূল প্রার্থী অলোক মাঝির সমর্থনে একাধিক জায়গায় দেওয়াল লিখেছিলেন শাসক দলের কর্মীরা। গত কয়েক দিনে সেই সব দেওয়ালগুলির বেশ কয়েকটিতে তৃণমূলের প্রতীক ও প্রার্থীর নামের পাশে লাল কালি দিয়ে লেখা হয়েছে ‘এডব্লুএফ (সিপিআইএম) ২০২৩-২০২৬’, যার অর্থ— ২০২৩-২০২৬ সাল পর্যন্ত ওই দেওয়ালে প্রচারের হকদার সিপিএম। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল— একের পর এক দেওয়াল হাতছাড়া হলেও কার্যত নীরব তৃণমূল নেতৃত্ব। বঙ্গ রাজনীতিতে ‘দেওয়াল দখল’ অতি পরিচিত শব্দবন্ধ। ভোট এগোলেই দেওয়াল দখলের হিড়িক পড়ে।

সিপিএম সূত্রে খবর, দলীয় সংগঠন চাঙ্গা করতে জামালপুরে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। তৃণমূলের হাতে থাকা দেওয়াল ‘ফিরিয়ে’ আনা সেই কর্মসূচিরই অঙ্গ বলে দাবি সিপিএম নেতৃত্বের। তাঁরা জানান, জামালপুর ২ পঞ্চায়েতের জামালপুর শিবতলা থেকে হুসুমপুর পর্যন্ত চারটি বুথ এলাকায় ওই কর্মসূচি চলছে। দেওয়াল দখলের পরে, সেখানে দলীয় প্রতীক আঁকা হচ্ছে। পাশাপাশি, পঞ্চায়েত নির্বাচনে বামেদের ভোট দেওয়ার আবেদনও জানানো হচ্ছে দেওয়াল লিখনের মাধ্যমে।

নির্বাচন কমিশনের বিধি মোতাবেক—বাড়ির মালিক যে রাজনৈতিক দলকে দেওয়াল লেখার অনুমতি দেবেন, সেই দলই দেওয়ালে লেখার হকদার হবে। তবে কি শাসক দলকে আর তাঁদের দেওয়ালে লেখার অনুমতি দিচ্ছেন না বাড়ি মালিকদের একাংশ? নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েক জন বাড়ি মালিকের কথায় তেমনই ইঙ্গিত মিলেছে।

সিপিএমের জামালপুর ১ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুকুমার মিত্রের দাবি, “বাড়ির মালিকেরা আমাদের অনুমতি দিয়েছেন বলেই তাঁদের দেওয়ালে আমরা তৃণমূলের প্রতীক ও প্রার্থীর নাম মুছে, আমাদের দলীয় প্রতীক আঁকছি। পঞ্চায়েতে নির্বাচনে আমাদের ভোট দেওয়ার আবেদন জানাচ্ছি।’’ সিপিএম সূত্রে জানা যায়, বাড়ি মালিকের অনুমতি পাওয়ার পরেই দেওয়াল লেখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। দলের পূর্ব বর্ধমান জেলা সম্পাদক মহম্মদ সৈয়দ হোসেন বলেন, “এই ঘটনাই প্রমাণ করে, মানুষের মনে তৃণমূল সম্পর্কে যে ভয় ছিল, তা কমছে। তৃণমূল জনবিচ্ছিন্ন হচ্ছে।’’ জামালপুরের তৃণমূল বিধায়ক অলোক মাঝির প্রতিক্রিয়া, “বিধানসভা নির্বাচনের পরে সিপিএমের স্থান হয়েছে দেওয়ালে। তার পরেও পঞ্চায়েত দখলের দিবাস্বপ্ন দেখছে ওরা। পঞ্চায়েত ভোটের পরেও সিপিএমের অস্তিত্ব থাকবে দেওয়ালে।’’

আজ, মঙ্গলবার জামালপুরে সভা করার কথা বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর। দেওয়াল দখলের নিরিখে কি বিজেপি পিছিয়ে পড়ছে না? জেলা সভাপতি অভিজিৎ তা-র দাবি, “বিজেপি অসংখ্য দেওয়াল লিখছে। তবে ঢাক-ঢোল পেটাচ্ছে না।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

TMC CPIM

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy