Advertisement
E-Paper

বেসমেন্টে রয়েছে সার্ভার রুম!

চার তলার বাণিজ্যিক ভবনে আগুন ধরার ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানাল দুর্গাপুর পুরসভা। আচমকা আগুনে সিটি সেন্টারের ওই বাণিজ্যিক ভবন লাগোয়া এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

সুব্রত সীট

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০২:৪০
ঘটনাস্থল: দুর্গাপুরের এই বাণিজ্যিক ভবনেই আগুন ধরে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল: দুর্গাপুরের এই বাণিজ্যিক ভবনেই আগুন ধরে। দমকলের দু’টি ইঞ্জিন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। নিজস্ব চিত্র

চার তলার বাণিজ্যিক ভবনে আগুন ধরার ঘটনায় প্রাথমিক ভাবে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানাল দুর্গাপুর পুরসভা। আচমকা আগুনে সিটি সেন্টারের ওই বাণিজ্যিক ভবন লাগোয়া এলাকায় আতঙ্ক ছড়ায়।

এ দিন যে ভবনটিতে আগুন ধরেছিল, তার লাগোয়া রাস্তার উল্টো দিকে রয়েছে বড় শপিং মল। অন্য দিকে রয়েছে বেসরকারি হাসপাতাল। পাশেই আরও একটি বাণিজ্যিক ভবন। আগুন ছড়ালে বড়সড় বিপত্তি ঘটতে পারত বলে মনে করছেন ওই সব জায়গার কর্মীরা। এ দিন অন্য বাণিজ্যিক ভবন, হাসপাতালেj কর্মীদের বার বার রাস্তায় বেরিয়ে পরিস্থিতির খোঁজখবর করতে দেখা যায়। আগুন লাগার ঘণ্টা দেড়েকের মাথায় ঘটনাস্থলে আসেন দুর্গাপুর পুরসভার ডেপুটি মেয়র অনিন্দিতা মুখোপাধ্যায়। তিনি জানান, আগুন নিয়ন্ত্রণে আছে। দুশ্চিন্তার কারণ নেই। কিন্তু তাঁর আশ্বাসে আতঙ্ক কাটেনি। কারণ, তখনও ধোঁয়ার জন্য বেসমেন্টের ভিতরে ঢুকতেই পারেননি দমকলকর্মীরা। আগুন নিয়ন্ত্রণের পরে দমকলের স্টেশন অফিসার সমীররঞ্জন জানা বলেন, ‘‘বেসমেন্টের সার্ভার রুমের সামান্য জায়গায় আগুন লেগেছিল। ছড়িয়ে পড়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে। তাই বড় বিপদ এড়ানো গিয়েছে।’’ ফরেন্সিক পরীক্ষার পরেই আগুন লাগার প্রকৃত কারণ জানা যাবে বলে তিনি জানান।

পুরসভার মেয়র পারিষদ অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘটনাস্থল পরিদর্শনে আসেন। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘বেসমেন্ট গ্যারাজের জন্য ব্যবহার করা হয়। সেখানে সার্ভার রুম, খাবারের দোকানের অফিস, স্টোর রুম কী ভাবে রয়েছে? এটা বেআইনি। পুরসভা নিশ্চয় ব্যবস্থা নেবে।’’ মেয়র দিলীপ অগস্তিও ঘটনাস্থলে এসে ধোঁয়ার ভিতর দিয়েই দমকলকর্মীদের সঙ্গে কিছুটা নেমে বেসমেন্টের অবস্থা দেখে আসেন। তিনি বলেন, ‘‘বাড়ির মালিককে আগে গ্রেফতার করতে হবে। তাঁর যা বলার তিনি আদালতে বলবেন। এ ভাবে বেসমেন্ট ব্যবহার মানা হবে না।’’ তবে ঘটনাস্থলে এসে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘দমকলের রিপোর্ট পাওয়ার পরে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তদন্ত শুরু হয়েছে। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ পুরসভার তরফে লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে কি না জানতে চাওয়া হলে মেয়র জানান, পুরসভার আইনে কী রয়েছে, তা দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, আগুন নেভানোর কাজ যখন প্রায় শেষ দিকে তখন ঘটনাস্থলে আসেন দুর্গাপুরে দমকলের ওসি এস চট্টোপাধ্যায়। এত দেরিতে তিনি আসায় অনেকে ক্ষোভ উগড়ে দেন। তিনি অবশ্য দাবি করেন, বিভাগীয় নিয়ম মেনেই তিনি ঘটনাস্থলে আসেননি। তিনি বলেন, ‘‘ঘটনাস্থলে উপস্থিত স্টেশন অফিসারের রিপোর্ট অনুযায়ী তিনি সিদ্ধান্ত নেন। এখানেও তাই হয়েছে।’’ তা হলে এখন কেন এসেছেন? ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘মেয়র আমার অনুপস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন তোলায় শীর্ষ কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঘটনাস্থলে এসেছি।’’

ভবনের উল্টো দিকে থাকা শপিং মলের ফায়ার ও সিকিউরিটি অফিসার রাজেশ কুমার নিজেদের কর্মী ও পরিকাঠামো নিয়ে প্রথম থেকেই দমকলকে আগুন নেভানোর কাজে সহযোগিতা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বেসমেন্ট ফাঁকা থাকার কথা। সেখানে এ ভাবে বিভিন্ন সামগ্রী জড়ো করে রাখা যায় না। সে জন্যই এত ধোঁয়া ছড়িয়েছে। ভিতরে ঢুকতে দেরি হয়েছে।’’ ভবনটির অগ্নি নির্বাপণ ব্যবস্থা যথাযথ কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। মেয়র অবশ্য বলেন, ‘‘নির্মাণ আইন মেনে ভবন গড়ে উঠেছে কি না, তা দেখে ছাড়পত্র দেয় পুরসভা। তারপরে সেই ভবনে কে কোথায় কী রাখেছেন তা পুরসভার পক্ষে দেখা সম্ভব নয়।’’

Durgapur Municipality Fire Commercial Building Server Room
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy