সংস্থার জমি ও আবাসন থেকে জবরদখল তোলার সময়সীমা বেঁধে দিলেন ইস্কো কর্তৃপক্ষ। দু’মাসের মধ্যে বার্নপুরে এই দখল তোলার বিষয়ে শহরের বিভিন্ন এলাকায় মাইকে প্রচার শুরু হয়েছে। বুধবার বিকেলে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক ভাবে এই প্রচার শুরু হয়। জানা গিয়েছে, আট সপ্তাহ ধরে টানা প্রচার চলবে। তার পরেও দখলদারেরা নিজে থেকে না উঠলে কড়া হাতে উচ্ছেদ প্রক্রিয়া শুরু করা হবে। ইস্কো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে এই কাজে হাত মিলিয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলিও।
বার্নপুর ইস্কোর জমি ও আবাসন অবৈধ ভাবে দখল করে বিভিন্ন ব্যবসা করা ছাড়াও, নানা জায়গায় অসামাজিক কার্যকলাপ চালানোর অভিযোগও রয়েছে অনেক দিন ধরে। কর্তৃপক্ষের তরফে বহু বার উদ্যোগ হলেও পুরোপুরি দখলমুক্ত করা যায়নি সেগুলি। সংস্থার মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ভাস্কর কুমার জানান, শহরের সৌন্দর্যায়ন, পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও কয়েক হাজার নতুন কর্মী আবাসন তৈরির লক্ষে দখলদার উচ্ছেদ প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। নতুন বছরের গোড়া থেকেই এই পরিকল্পনা রূপায়ণের কাজ শুরু হবে। তাই আগামি দু’মাসের মধ্যে শহরকে পুরোপুরি দখলমুক্ত করতে হবে।
বুধবার বিকেলে প্রচার অভিযানে সূচনা করে সংস্থার শহর বিভাগের জিএম মহেশ বার্নোয়াল বলেন, ‘‘নতুন আবাসন তৈরি করা হলে শ্রমিক-কর্মীরা যেমন উপকৃত হবেন, তেমনই শহরের পরিকাঠামোর উন্নয়ন হলে আসানসোল পুরসভার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সাধারণ বাসিন্দারাও সুস্থ পরিবেশ পাবেন।’’ তিনি জানান, শহরের কোন কোন এলাকায় জমি ও আবাসন দখল করে রাখা হয়েছে, তা চিহ্নিত করে দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সে সব এলাকা দখলমুক্ত করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, সংস্থার প্রায় দেড় হাজার আবাসনকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করার পরেও বহিরাগতেরা সেগুলি দখল করে বাস করছেন। আরও অভিযোগ, বারি ময়দান রোড, ব্যাঙ্ক রোড, স্টেশন রোড, ত্রিবেণী রোড, আপার রোড ও নিউটাউন অঞ্চলে বিক্ষিপ্ত ভাবে এলাকা দখল করে বিভিন্ন বাণিজ্য কেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। দখলদারেরা ইস্কোর বিদ্যুৎ, জল চুরি করে ব্যবহার করছে। বার বার চেষ্টা করেও তাদের তোলা যাচ্ছে না। কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, এক শ্রেণির দালাল মোটা টাকার বিনিময়ে বহিরাগতদের এনে সে সব জায়গায় বসাচ্ছে। এ ধরনের লেনদেন যে দণ্ডনীয় অপরাধ, তা-ও প্রচার করা হচ্ছে।
সংস্থার শহর বিভাগের জিএম মহেশ জানান, চলতি বছরে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে প্রায় ২৯৭টি পরিত্যাক্ত আবাসন দখলমুক্ত করে সেগুলি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া, ১৩টি অঞ্চলে জমির দখল উচ্ছেদ করা সম্ভব হয়েছে। জানা গিয়েছে, চার তলা বিশিষ্ট ১০৭টি ব্লক জুড়ে প্রায় তিন হাজার বহুতল আবাসন তৈরির সিদ্ধান্ত হয়েছে।
ইস্কো কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়ে প্রচারে শামিল হয়েছে শ্রমিক সংগঠনগুলি। সিটুর পশ্চিম বর্ধমান জেলা সম্পাদক বংশগোপাল চৌধুরী ও আইএনটিইউসি নেতা বিজয় সিংহেরা জানান, ইস্কোর শ্রমিক-কর্মীদের নিরাপত্তা ও তাঁদের সুবিধা দেওয়ার জন্য ইস্কোর এই উদ্যোগ সাধুবাদযোগ্য।
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)