Advertisement
১৮ মে ২০২৪

ষড়যন্ত্রে জড়িয়েছি, ক্ষোভ পুরপ্রধানের

মৃত ছাত্রের পরিবারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে চলেছেন কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ। সোমবার পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা জানান তিনি। তাঁর দাবি, ছেলেকে সামনে রেখে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ২২ জুন ২০১৬ ০৬:১৫
Share: Save:

মৃত ছাত্রের পরিবারের বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করতে চলেছেন কালনার পুরপ্রধান দেবপ্রসাদ বাগ। সোমবার পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে এ কথা জানান তিনি। তাঁর দাবি, ছেলেকে সামনে রেখে তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। বিরোধী দলের অনেকেও এতে মদত দিয়েছে। তবে ময়না-তদন্তের রিপোর্টে সব স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। যদিও মৃত সুহৃৎ দাসের বাবা হৃষিকেশবাবু এ দিনও দাবি করেন, তাঁর ছেলেকে খুনই করা হয়েছে। পুলিশের তদন্তে তাঁরা সন্তুষ্ট নন। উচ্চ আদালতে যাবেন বলেও তাঁর দাবি।

সপ্তাহ খানেক আগেই নিখোঁজ হয় কালনা শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা, দশম শ্রেণির ছাত্র সুহৃৎ। দু’দিন পরে শহরেরই একটি পুকুরে তাঁর দেহ ভেসে ওঠে। মৃত ছাত্রের বাবা পুলিশের কাছে ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। অভিযুক্ত তিন জনের তালিকায় নাম ছিল, পুরপ্রধানের ছেলে এবং পাঁচ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলার সমরজিৎ হালদারের। পুলিশ তিন জনকেই গ্রেফতার করে। টানা পাঁচ দিন মৃত-অভিযুক্তের সহপাঠী, বাড়ির লোকজনেদের দেরা করে পুলিশ। সোমবার জেলা পুলিশ সুপার জানিয়ে দেন, ময়না-তদন্তে রিপোর্ট অনুযায়ী কালনার স্কুল ছাত্রের মৃত্যু হয়েছে জলে ডুবে। শরীরে কোনও আঘাতের চিহ্নও মেলেনি।

ওই রিপোর্টকে হাতিয়ার করেই এ দিন সংবাদিক বৈঠক ডাকেন দেবপ্রসাদবাবু। তাঁর দাবি, ময়না-তদন্তের রিপোর্টেই স্পষ্ট যে অভিযুক্ত তিন জনই নির্দোষ। মোবাইলের এস-ডি কার্ড নিয়ে যে গণ্ডগোলের অভিযোগ করা হয়েছিল তাও ঠিক নয়। তবুও তাঁর কিশোর ছেলেকে জড়িয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে সে হোমে দিন কাটাচ্ছে। আসলে পুরো ব্যাপারটা ষড়যন্ত্র বলেও অভিযোগ করেন তিনি। দেবপ্রসাদবাবুর দাবি, ষড়যন্ত্রের মূল লক্ষ ছিলেন তিনি নিজে। যার জন্য তাঁকে নিগ্রহ করা, মোটরবাইক ভাঙচুর করা এমনকী, পদত্যাগের দাবি করা হয়। পোস্টার সাঁটানো, ব্যানার, মোমবাতি নিয়ে যে মিছিল হয় সেখানে বিরোধী দলের লোকজন হাজির ছিলেন বলেও তাঁর দাবি। তিনি জানান, এ নিয়ে দলের উপর তলাতেও রিপোর্ট পাঠাবেন তিনি। পুরপ্রধান বলেন, ‘‘আমি চাইছি উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত হোক। বেরিয়ে আসুক সঠিক সত্য এবং ষড়যন্ত্রে কারা লিপ্ত।’’ তাঁর আরও দাবি, ‘‘পুরপ্রধান হিসেবে ছেলের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠতেই তাকে তুলে দিয়েছিলাম পুলিশের হাতে। বাবা হয়ে চেয়েছিলাম নিজের সন্তান নির্দোষ হয়েই ফিরুক। আক্ষেপের বিষয় বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি হল।’’ মৃত ছাত্রের পরিবারের বিরুদ্ধে সম্মানহানির মামলা দায়ের করার কথাও বলেন তিনি।

সোমবারই সুহৃতের বাবা দাবি করেছিলেন, ছেলেকে যে খুন করা হয়েছিল তা দেহ দেখেই বোঝা যাচ্ছিল। দেহের জিভ ও চোখ যেভাবে বেরিয়ে এসেছিল তা খুনের প্রমাণ বলেও দাবি করেন তিনি। এ দিন পুরপ্রধান মাস খানেক আগের নৌকাডুবির ঘটনার কয়েকটি ছবি তুলে ধরে দাবি করেন, ‘‘এরা কেউ খুন হননি। তা সত্ত্বেও এদের চোখ এবং জিভের অংশ বাইরে বেরিয়ে এসেছে।’’ তারপরেও অবশ্য হৃষিকেশবাবু মত বদলাননি।

তিনি জানান, পুলিশ যে ময়না তদন্তের রিপোর্ট পেশ করেছে তা তাদের কাছে বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হয়নি। ঘটনার যথাযথ তদন্তের জন্য তারা উচ্চ আদালতে যাবেন। ময়না-তদন্তে ডুবে মৃত্যুর কথা বলা হলেও সাঁতার জানা সুহৃৎ কিভাবে পুকুরে ডুবে গেল তা এ দিনও স্পষ্ট নয়। পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনাটি নিয়ে তদন্ত চলছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

chairman conspiracy
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE