ফুলঝোড় মোড় থেকে জেমুয়া যাওয়ার রাস্তা নিয়েই অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
প্রায় একশো কোটি টাকা ব্যয়ে দুর্গাপুরে ‘রিং রোড’ প্রকল্পের শিলান্যাস হয়েছিল ২০১০-এ। নানা কারণে সে প্রকল্প আর দিনের আলো দেখেনি। তার পরে, কেটে গিয়েছে ১২টা বছর। আজও আক্ষেপ করেন জেমুয়া পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা। খন্দে ভরা রাস্তা দিয়েই যাতায়াত করতে হয় তাঁদের।
খোঁজ নিয়ে জানা গিয়েছে, ‘জওহরলাল নেহরু ন্যাশনাল আরবান রিনিউয়াল মিশন’ (জেএনএনইউআরএম) প্রকল্পে ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রিং রোড গড়ার সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন বাম সরকার। ২০১০-এর ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকল্পের শিলান্যাস করেন তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন। কাজও শুরু হয়। কিন্তু বছরখানেক পরে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। অন্ডাল থানার দুবচুড়ুরিয়া থেকে দুর্গাপুর, কাঁকসার মলানদিঘি হয়ে রাস্তাটি ওঠার কথা ছিল কাঁকসার রঘুনাথপুরে পানাগড়-দুবরাজপুর রাজ্য সড়কে। এতে যেমন উন্নতি হত দুর্গাপুরের যোগাযোগ ব্যবস্থার। তেমনই বীরভূমের সঙ্গে দূরত্বও বেশ কিছুটা কমে যেত। আবার বীরভূম থেকে অন্ডাল বিমানবন্দরের সরাসরি যোগাযোগের নতুন রাস্তা তৈরি হত। কিন্তু প্রয়োজনীয় জমি জোগাড় করতে পারা যায়নি বলে ২০১৪-য় প্রকল্পটি বাতিল করে কেন্দ্রের কাছে ফেরত পাঠিয়ে দেয় রাজ্য সরকার।
প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রথম পর্যায়ে রাস্তাটি রঘুনাথপুর থেকে মলানদিঘি পর্যন্ত হওয়ার কথা ছিল। এই অংশটি প্রায় ১১ কিলোমিটার। দ্বিতীয় পর্যায়ে হত মলানদিঘি থেকে দুবচুড়ুরিয়া পর্যন্ত প্রায় ২৬ কিলোমিটার। এ ছাড়া, প্রথম পর্যায়ে আকন্দারা থেকে রাস্তার একটি অংশ বেরিয়ে জেমুয়া হয়ে ফুলঝোড় মোড় পর্যন্ত যাওয়ার কথা ছিল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বছরখানেক আগে জেমুয়া থেকে গোঁসাইবাঁধ পর্যন্ত রাস্তার সংস্কার করে জেমুয়া পঞ্চায়েত। কিন্তু সেটি বেহাল হয়ে গিয়েছে। যাতায়াতের সমস্যা হচ্ছে। রিং রোড হলে ঝকঝকে রাস্তা তৈরি হত।
সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকার বলেন, “পরিকাঠামো উন্নয়ন না হলে শহর এগোতে পারে না। বর্তমান রাজ্য সরকার হয় তো তা চায় না। তাই প্রকল্পটিকে হিমঘরে পাঠিয়ে দেয়।” তৃণমূলের অভিযোগ, জমি জোগাড় না করেই প্রকল্পের কাজ শুরু করে দিয়েছিল বাম সরকার। তাই প্রকল্পটি শেষ পর্যন্ত বাতিল হয়ে যায়। যদিও সিপিএমের দাবি, মানুষকে বুঝিয়ে জমির জোগাড় করতে না পারার ব্যর্থতা তৃণমূলের। তৃণমূলের দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ সুজিত মুখোপাধ্যায় বলেন, “জমির ব্যবস্থা না করে তড়িঘড়ি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছিল বাম সরকার। তাই এই হাল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় রাজ্যের সব রাস্তার উন্নয়নের ব্যবস্থা করেছেন। এই রাস্তারও উন্নয়ন হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy