Advertisement
E-Paper

অষ্টমীর আরতিতে আজও আকাশে ওড়ে শঙ্খচিল, বর্ধমানের জমিদার বাড়িতে চলছে দুর্গা-বন্দনার প্রস্তুতি

সংস্কারের অভাবে মন্দিরের একাংশ ব্যবহারের অযোগ্য। প্রায় ২০ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে বাউল, যাত্রাপালা, নাচ-গানের মত অনুষ্ঠান। তবে পুরোনো রীতি অনুযায়ী আজও পুজো হয় নিষ্ঠা ভরে।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২২ ২২:৪৩
জমিদার ব্রজেন্দ্রলাল দাসের বাড়ি।

জমিদার ব্রজেন্দ্রলাল দাসের বাড়ি। নিজস্ব চিত্র।

প্রায় ১৬০-১৭০ বছর আগের কথা। সেই সময় বর্ধমানে রাজশাসন। বর্ধমানের খাজা আনোয়ার বেড় এলাকার জমিদার ছিলেন ব্রজেন্দ্রলাল দাস। তবে জমিদার ব্রজেন্দ্রলালের কোনও পুত্র সন্তান ছিল না। কথিত আছে, ব্রজেন্দ্রলাল একদিন স্বপ্নাদেশ পান। স্বপ্নে দেবী দুর্গা তাঁকে শিবদুর্গার পুজো করতে বলেন। পুজো করলে পুত্র সন্তান লাভ হবে এই স্বপ্নাদেশ পেয়ে ব্রজেন্দ্রলাল শুরু করেন শিবদুর্গা পুজো। পরের বছরই জন্ম নেয় পুত্রসন্তান। নাম রাখা হয় দুর্গাচরণ।

সে সময় জাঁকজমকপূর্ণ হত জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো। পুজোকে কেন্দ্র করে পাঁচদিন নানা উৎসবের আয়োজন হত। বসতো বাউল গান, যাত্রাপালা, নাচ, গান প্রভৃতিক আসর। বর্ধমানের তৎকালীন মহারাজ বিজয়চাঁদ মহতাব ছিলেন ব্রজেন্দ্রলালের বন্ধু। সেই সূত্রে বর্ধমান রাজ পরিবারের সদস্যরাও এই পুজোয় অংশগ্রহণ করতেন। কতটা জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালিত হত দুর্গাপুজো তার সাক্ষী আজও বহন করে জমিদার বাড়ির এই দুর্গামন্দির।

মূল মন্দিরের সামনে রয়েছে বড় চাতাল। এই চাতালে বিভিন্ন অনুষ্ঠান হত আর পরিবারের মহিলারা দোতলার দর্শনি দিয়ে সেই অনুষ্ঠান দেখতেন। এখানে দেবী সপরিবারে পুজিতা। দেবীর সঙ্গে শিব, লক্ষ্মী, সরস্বতী, গণেশ, কার্তিক একই সঙ্গে পুজিতা হন। পুজো হয় বৈদিক মতে। শুরুতে পাঁঠা বলির প্রথা থাকলেও কিছু দিন পর ব্রজেন্দ্রলাল স্বপ্নাদেশ পান বলি বন্ধ করার। সেই থেকে বলি প্রথা বন্ধ। পরিবর্তে শুরু হয় মণ্ডা বলি দেওয়া।

সেই জাঁকজমক না থাকলেও আজও এই জমিদার বাড়ির পুজো নিষ্ঠার সঙ্গে করেন পরিবারের সদস্যরা। সন্ধিপুজোয় আজও ১০৮টি পদ্ম দিয়ে আরতি করা হয়। পরিবারের দাবি, যবে থেকে এখানে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছে তখন থেকে অষ্টমীর খ্যানের আরতির সময় প্রত্যেক বছর মন্দিরের উপরে আকাশে শঙ্খচিল দেখতে পাওয়া যায়। পুজো প্রথা মেনে হলেও অনুষ্ঠানে ভাটা পড়েছে। সংস্কারের অভাবে মন্দিরের একাংশ ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় ২০ বছর আগেই বন্ধ হয়ে গেছে বাউল, যাত্রাপালা, নাচ-গানের মত অনুষ্ঠান। তবে পুরোনো রীতি অনুযায়ী আজও পুজো হয় নিষ্ঠা ভরে। আজও জমিদার বাড়ির দুর্গাপুজো দেখতে ভিড় জমান বহু মানুষ।

Durga Puja 2022 Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy