Advertisement
E-Paper

টাকা দিতে না চাওয়ায় জোড়া খুন

টাকা আদায় নিয়ে বচসা, তার জেরেই জোড়া খুন— কুলটির কলেজ মোড়ের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করে এই তথ্যই মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। ঘটনায় আরও এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়। ঘটনাস্থল থেকে আঙুলের ছাপ ও নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ মে ২০১৭ ০১:১১
দুই অভিযুক্ত। কৌশিক দাস ও গোবিন্দ পাত্র। নিজস্ব চিত্র

দুই অভিযুক্ত। কৌশিক দাস ও গোবিন্দ পাত্র। নিজস্ব চিত্র

টাকা আদায় নিয়ে বচসা, তার জেরেই জোড়া খুন— কুলটির কলেজ মোড়ের ঘটনায় দু’জনকে গ্রেফতার করে এই তথ্যই মিলেছে বলে দাবি পুলিশের। ঘটনায় আরও এক অভিযুক্তের খোঁজ চলছে বলে পুলিশ জানায়। ঘটনাস্থল থেকে আঙুলের ছাপ ও নমুনা সংগ্রহ করেছে সিআইডি।

সোমবার দুপুরে কলেজ মোড়ে অতনু বন্দ্যোপাধ্যায়ের (৫৭) বাড়ি থেকে তাঁর ও পাশের পাড়ার বাসিন্দা দেবাশিস কর্মকারের (২৭) দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, অতনুবাবুর মাথায় আঘাতের চিহ্ন ছিল। কিন্তু দেবাশিসের দেহে আঘাত মেলেনি। তালাবন্ধ বাড়ি থেকে পচাগলা অবস্থায় দেহ দু’টি মেলে। অতনুবাবু বাড়িটিতে একাই থাকতেন। তাঁর ভাই রনি বন্দ্যোপাধ্যায় থাকেন হলদিয়ায়। দেবাশিস শনিবার রাত থেকে নিখোঁজ ছিলেন বলে পরিবার জানায়।

পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে দেবাশিস অতনুবাবুকে খুন করে আত্মঘাতী হয়ে থাকতে পারেন বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু ময়না-তদন্ত রিপোর্টে জানা যায়, দেবাশিসকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে। পুলিশ জানায়, জোড়া খুনের তদন্তে নেমে স্থানীয় বাসিন্দা কৌশিক দাসের যোগ মেলে। তাকে বেলঘরিয়া থেকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশের দাবি, জেরায় ধৃত দোষ স্বীকার করে ও আরও দু’জনের যুক্ত থাকার কথা জানায়। তাদের মধ্যে গোবিন্দ পাত্রকে কুলটির শ্রীপুর রোড এলাকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। অন্য জনের এখনও খোঁজ মেলেনি।

পুলিশ কমিশানেরেটের এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ঘটনার ছক কষেছিল কৌশিক। সে-ই মূল অভিযুক্ত।’’ পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জেরায় জানিয়েছে, তারা মাঝে-মাঝেই অতনুবাবুকে ভয় দেখিয়ে তাঁর কাছ থেকে টাকা আদায় করতো। শনিবার রাতেও কৌশিক দুই সঙ্গীকে নিয়ে অতনুবাবুর বাড়ি যায়। ডাকাডাকিতে তিনি বাড়ির উঠোনে বেরিয়ে এলে তারা দু’হাজার টাকা চায়। কিন্তু তিনি পাঁচশো টাকার বেশি দিতে অস্বীকার করায় হুমকি দিতে শুরু করে কৌশিকরা। দু’পক্ষের বচসা বেধে যায়। তার পরেই কৌশিক চপার দিয়ে অতনুবাবুকে কোপালে তাঁর মৃত্যু হয়।

পুলিশের দাবি, ধৃতেরা জানিয়েছে, রক্তাক্ত দেহটি ঘরে ভিতরে নিয়ে যেতেই আততায়ীরা দেবাশিসের মুখোমুখি হয়। সে যে ভিতরে রয়েছে, তা তারা আগে টের পায়নি। প্রমাণ লোপাটের জন্য দেবাশিসকেও খুনের ছক কষে তারা। কিন্তু তার আগে তাঁর এটিএম কার্ডটি হাতিয়ে নেয় ও ভয় দেখিয়ে পিন নম্বর জেনে নেয়। তার পরে গলায় গামছার ফাঁসে দেবাশিসকে তারা খুন করে। পুলিশ জানায়, পালানোর সময়ে আততায়ীরা গ্রিলে হাত ঢুকিয়ে ভিতরে তালা দিয়ে দেয়।

অতনুবাবুর ভাই রনিবাবু ঘটনার পরে জানিয়েছিলেন, শনিবার রাতে তিনি দাদাকে ফোন করলে এক অপরিচিত ব্যক্তি পুলিশকর্মী পরিচয় দিয়ে কথা বলেন। নিজের নাম রাজা জানিয়ে ওই ব্যক্তি দাবি করেছিলেন, অতনুবাবুর বাড়িতে অনৈতিক কাজকর্ম চলছে। তাঁকে থানায় ধরে নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেন। পুলিশের দাবি, কৌশিক স্বীকার করেছে, ফোনে ওই হুমকি সে দিয়েছিল।

পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনার পরে কৌশিক নিয়ামতপুর, কেন্দুয়া ও বেলঘরিয়ার এটিএম থেকে বেশ কয়েক বার টাকা তোলে। তাকে বেলঘরিয়ায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। তার পরেই গোবিন্দকে ধরা হয়। মৃতদের মোবাইল ফোন, ট্যাব, খুনে ব্যবহৃত অস্ত্র বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ২০০৯ সালে দুর্গাপুরে একটি খুনের মামলায় কৌশিক জড়িত। শনিবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে ৯ দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়।

Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy