কেন্দ্রে বিজেপির বঞ্চনার সঙ্গে পঞ্চায়েত স্তরে অনুন্নয়নকে জুড়ে নন্দীগ্রামে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে প্রচারে নামবে তৃণমূল। শাসক দলের তমলুক সাংগঠনিক জেলার সভাপতি সুজিত রায় রবিবার নন্দীগ্রাম-১ ব্লক তৃণমূলের কোর কমিটির বৈঠকে এমনই বার্তা দিলেন। নন্দীগ্রামে দলকে আরও সংগঠিত করতে নানা পদক্ষেপ করছে শাসক দল। আগামী বুধবার ব্লক তৃণমূলের বর্ধিত কমিটির সভা ডাকা হয়েছে। চলতি ডিসেম্বর মাসেই নন্দীগ্রামে সভার পরিকল্পনা নিয়েছে তৃণমূল।
রাজ্য়ে শাসক তৃণমূল। বিরোধী বিজেপি। কিন্তু নন্দীগ্রামে পঞ্চায়েতের নিরিখে ছবিটা উল্টো। এখানে দু’টি ব্লকেই ক্ষমতায় রয়েছে গেরুয়া শিবির। ফলে স্থানীয় স্তরে বিরোধী ভূমিকায় তৃণমূল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর নির্বাচনী ক্ষেত্র নন্দীগ্রামে গেরুয়া শিবিরের বিরুদ্ধে আন্দোলনে জোড়া ফলাকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল। প্রথমত, কেন্দ্রের বঞ্চনা। দ্বিতীয়ত, পঞ্চায়েতে অনুন্নয়ন। এ দিন নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কোর কমিটির নেতৃত্বদের নিয়ে বৈঠক করে এ বিষয়ে প্রস্তুতির নির্দেশ দেন সুজিত। এ দিনের বৈঠক সিদ্ধান্ত হয়েছে আগামী বুধবার দলের ব্লক কমিটির বর্ধিত সভা হবে। দলীয় ব্লক কার্যালয়ে ওই সভায় কোর কমিটির সদস্যরা ছাড়াও ব্লকের প্রবীণ নেতৃত্ব, অঞ্চল সভাপতি, অঞ্চল কোর কমিটির সদস্য, গ্রামপঞ্চায়েত প্রধান, উপ-প্রধান, জেলাপরিষদ,পঞ্চায়েত সমিতি সদস্য ও শাখা সংগঠনের ব্লক নেতৃত্বদের ডাকা হবে। সুজিত বলেন, "নন্দীগ্রাম-১ ব্লকের কোর কমিটির বৈঠক সাংগঠনিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। নন্দীগ্রামে সভা-সহ বিভিন্ন কর্মসূচির পরিকল্পনা করা হয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনার জন্য ব্লকে দলের সমস্ত নেতৃত্বকে নিয়ে আগামী বুধবার বৈঠক করা হবে।’’
তৃণমূল সূত্রের খবর, নন্দীগ্রামে সাংগঠনিক শক্তি বৃদ্ধি করতে নজর দিয়েছেন খোদ দলের শীর্ষ নেতৃত্ব। এ ক্ষেত্রে নন্দীগ্রাম-১ ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে সাংগঠনিক কাজের জন্য যৌথ নেতৃত্বের উপর ভরসা করছে তৃণমূল। সম্প্রতি তৃণমূল রাজ্য নেতৃত্ব নন্দীগ্রাম-১ ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের জন্য দলের সভাপতি নিযুক্ত করার পরিবর্তে ব্লকের একাধিক নেতৃত্বদের নিয়ে কোর কমিটি গঠন করে দিয়েছিলেন। তবে নন্দীগ্রাম-১ ব্লকে সাতজনের কোর কমিটিতে জমিরক্ষা আন্দোলনের অন্যতম নেতা আবু তাহেরকে না রাখা নিয়ে জলঘোলা হয়। যদিও দলের জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বের হস্তক্ষেপে তাহেরের ক্ষোভ প্রশমন করা হয়। দলীয় সূত্রের খবর, নন্দীগ্রাম-১ ও নন্দীগ্রাম-২ ব্লকে কোর কমিটি গঠনের পরে এ বার সেখানে রাজনৈতিক কর্মসূচি পালনের উপর জোর দেওয়া হচ্ছে। স্থানীয় নেতা-কর্মীদের আরও উজ্জীবিত করতে চলতি ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই নন্দীগ্রামে সভার পরিকল্পনাকরা হচ্ছে।
তৃণমূলের সমালোচনা ফিরিয়ে দিয়েছে গেরুয়া শিবির। বিজেপি নেতা তথা জেলা পরিষদের বিরোধী দলনেতা বামদেব গুছাইতের দাবি, "রাজ্যে ২০২৩ সালের পঞ্চায়েত নিবার্চনের পর পঞ্চায়েতের উন্নয়নমূলক কাজে যেটুকু উন্নয়নের কাজ হচ্ছে তা কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ অর্থেই। রাজ্য সরকার তরফে আর্থিক বরাদ্দ দেওয়া হয়নি। তাই রাজ্য সরকারই বরং পঞ্চায়েতগুলিকে বঞ্চনা করছে। আর নন্দীগ্রামে তৃণমূল শক্তি হারিয়ে ফেলেছে। মানুষকে বিভ্রান্ত করতেই মিথ্যাঅভিযোগ তুলছে।’’
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)