বারাবনির ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্প। নিজস্ব চিত্র।
তৈরি হয়েছে প্রায় দেড় বছর আগে। কিন্তু আজও চালু করা হল না পশ্চিম বর্ধমানের বারাবনির ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্পটি। স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষোভ, এতে এলাকার বেকার যুবকদের স্বনির্ভর করে তোলার সরকারি উদ্যোগ কার্যত মুখ থুবড়ে পড়েছে। রাজ্য সরকার ও ব্লক প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি নেতৃত্ব। তাঁদের অভিযোগ, উপযুক্ত পরিকল্পনার অভাবেই, ভেস্তে যেতে বসেছে উদ্যোগটি। অপচয় করা হয়েছে রাজকোষের অর্থ। যদিও দ্রুত এই প্রকল্প চালু করার আশ্বাস দিয়েছে ব্লক প্রশাসন।
সরকারের উদ্যোগে প্রায় সাত বছর আগে রাজ্য জুড়ে চালু করা হয় এই ‘কর্মতীর্থ’ প্রকল্প। প্রকল্পের লক্ষ্য, একাধিক দোকান বিশিষ্ট আধুনিক পরিকাঠামোযুক্ত একটি বিপণি তৈরি করা। পরে, সে দোকানঘরগুলি এলাকার বেকার যুবকদের মধ্যে বিলি করা, যাতে তাঁরা ব্যবসা করে রোজগার করতে পারেন। বারাবনি ব্লকের পানুড়িয়া পঞ্চায়েতের অন্তর্গত গৌরান্ডি হাটতলা এলাকায় দ্বিতল বিশিষ্ট এই বিপণি রয়েছে।
বারাবনি ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখানে ৪০টি দোকানঘর আছে। এই প্রকল্পের জন্য খরচ হয়েছে প্রায় আড়াই কোটি টাকা। জলের ব্যবস্থা থেকে বিদ্যুতের সংযোগ, সবেরই ব্যবস্থা করা হয়েছে। কিন্তু প্রকল্পটি আজও চালু করা হয়নি।
এলাকায় গিয়ে দেখা গেল, ভবনটির চারদিকে আবর্জনা জমে রয়েছে। মেঝে ও দেওয়ালে ধুলোর আস্তরণ পড়েছে। কাঠের দরজা-জানলায় ঘুণ ধরতে শুরু করেছে। খসে পড়ছে দেওয়ালের আস্তরণও। স্থানীয়েরা জানালেন, এই প্রকল্পটি চালু করা হলে, তাঁদের দূরে বাজার করতে যেতে হত না। স্থানীয় বাসিন্দা তাপস কর্মকার বলেন, “আমরা চাই, প্রশাসন দ্রুত এই প্রকল্পটি চালু করুক।”
প্রকল্পটি চালু না হওয়ায় রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল ও ব্লক প্রশাসনকে দায়ী করছে বিজেপি। দলের জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের দাবি, “তৃণমূলের গোষ্ঠী কোন্দলের জন্যই দোকানগুলি বিলি করা হচ্ছে না। নিরপেক্ষ ভাবে দোকান বিলি করে, প্রকল্পটি দ্রুত চালুর দাবি জানাচ্ছি আমরা।” নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পানুড়িয়ার একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেন, “ব্লক প্রশাসনের কাছে বহু বার বাজারটি খোলার দাবি জানিয়েছি। কিন্তু কেউ কথা শুনছেন না।”
প্রকল্প চালু ও অভিযোগ প্রসঙ্গে জেলা পরিষদের সদস্য তথা তৃণমূলের ব্লক সভাপতি অসিত সিংহ বলেন, “এ নিয়ে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। নিরপেক্ষ ভাবেই দোকান বিলি করা হবে।” বিডিও (বারাবনি) সুরজিৎ ঘোষ বলেন, “সিদ্ধান্ত হয়েছে, পুজোর ছুটি শেষ হওয়ার পর প্রকল্পটির উদ্বোধন করা হবে।” তাঁর দাবি, দোকানঘরগুলি এলাকার বেকার যুবকদের মধ্যে বিলি করা হয়ে গিয়েছে। প্রকল্পটি নিয়মিত রক্ষণাবেক্ষণের জন্য, দোকান মালিকদের নিয়ে কমিটি তৈরি করা হবে। সে কাজও দ্রুত শেষ করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy