Advertisement
০৩ মে ২০২৪

ধান কেনায় ঢিলেমি হলেই বাতিল লাইসেন্স

একের পর এক দাওয়াই চলছেই, কিন্তু রোগ সারার লক্ষণ কই! সরকারের তরফে চাষিদের নানা সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার পরেও ধান কেনায় গতি আসেনি। কেন এমনটা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার কালনার মহকুমাশাসকের অফিসে বৈঠক হয়।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কালনা শেষ আপডেট: ৩১ জানুয়ারি ২০১৭ ০০:২৯
Share: Save:

একের পর এক দাওয়াই চলছেই, কিন্তু রোগ সারার লক্ষণ কই! সরকারের তরফে চাষিদের নানা সুযোগ-সুবিধে দেওয়ার পরেও ধান কেনায় গতি আসেনি। কেন এমনটা হচ্ছে, তা খতিয়ে দেখতে সোমবার কালনার মহকুমাশাসকের অফিসে বৈঠক হয়। সেখান থেকে সমবায় কর্তাদের হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়, ধান কেনায় গড়িমসির প্রমাণ মিললে সমবায়ের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের মতো কড়া সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সহায়ক মূল্যে ধান বিক্রি নিয়ে প্রতিবারই চাষিদের নানা অভিযোগ থাকে। এর মধ্যে রয়েছে প্রয়োজনের তুলনায় আর্দ্রতার দোহাই দিয়ে বেশি ধান নেওয়া। সমবায়ে ধান বিক্রি করে দীর্ঘ দিন পরে টাকা পাওয়া। চাষিদের নাম ভাঙিয়ে ধান বিক্রি করে দালালদের মুনাফা ভোগের অভিযোগ তো রয়েছেই। এ বার আগেভাগেই সক্রিয় হয়েছিল প্রশাসন। সরকারি ধান কেনা কেন্দ্রগুলিতে এ বার রাখা হয়েছে আর্দ্রতা এবং সঠিক ওজন মাপার যন্ত্র। চাষিদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা দেওয়ার ব্যবস্থাও করা হয়েছে। ধান কেনার দিন তিনেকের মধ্যে সে টাকা পৌঁছে যাচ্ছে চাষির অ্যাকাউন্টে। এ বার শুরুতে চাষিদের কাছ থেকে ১৫ কুইন্টাল ধান কেনা হলেও বর্তমানে তা বাড়িয়ে করা হয়েছে ৩০ কুইন্টাল। আগের পরিবারের অন্যের নামে দলিল, পরচা থাকলে ধান বিক্রি করা যেত না। জেলা খাদ্য নিয়ামক দেবমাল্য বসু জানান, এখন নিজের নামে দলিল-পর্চা না থাকলেও হবে। শুধু এলাকার পঞ্চায়েত প্রধানের শংসাপত্র লাগবে। এ সব জানাতে প্রচারও শুরু হয়েছে।

এত কিছু করার পরেও ধান কেনায় গতি না আসার বিষয়টি ভাবাচ্ছে প্রশাসনকে। প্রশাসনেরই একটি সূত্রের খবর, রবিবার পর্যন্ত ধান কেনা হয়েছে মাত্র ২৪ হাজার মেট্রিক টন। যেখানে লক্ষ্যমাত্রা ৪ লক্ষ ৯৪ হাজার মেট্রিক টন! সে কারণেই এ দিনের বৈঠক। সেখানে ছিলেন মন্ত্রী স্বপন দেবনাথ ছাড়াও জেলা খাদ্য নিয়ামক, মহকুমাশাসক, পাঁচটি ব্লকের বিডিও, সমবায় এবং মিল মালিকদের প্রতিনিধিরা। ঘণ্টা দেড়েক ধরে চলে বৈঠক। প্রশাসনের কর্তারা জানান, বেশ কিছু সমবায় এখনও ধান কেনা শুরু করেনি। তখনই মন্ত্রী হুঁশিয়ারি দেন, যে সমস্ত সমবায় সমিতি ধান কেনার কাজে গড়িমসি করছে, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। প্রয়োজনে রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা হবে। কালনার মহকুমাশাসক নীতিন সিংহানিয়া জানান, প্রথমে ১৯টি সমবায়ের ধান কেনার কথা ছিল। এখনও পর্যন্ত ১২টি সমবায় কাজ শুরু করেছে। বাকি সাতটি সমবায়কে আজ, মঙ্গলবার থেকে ধান কেনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া সরস্বতী পুজোর পরের দিন থেকে নতুন করে আরও সাতটি সমবায় ধান কিনবে।

সরকারের তরফে নতুন দাওয়াইগুলির প্রচার নিয়েও এ দিনের বৈঠকে প্রশ্ন ওঠে। অনেকেই মেনে নিয়েছেন, যতটা প্রচার প্রয়োজন ছিল, ততটা হয়নি। জেলা খাদ্য নিয়ামক জানান, ইতিমধ্যেই বর্ধমান ১, কেতুগ্রাম ১ ব্লকের মতো বহু জায়গাতেই ট্যাবলোর মাধ্যমে প্রচার শুরু হয়েছে। চেষ্টা চলছে ঢাকিদের নিয়েও গ্রামে গ্রামে প্রচার করার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

License
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE