Advertisement
E-Paper

বৃষ্টির জেরে বিদ্যুৎ রইল না রাতভর

হঠাৎ ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বৃষ্টি হয় সোমবার। সেই সঙ্গে ছিল হাওয়ার দাপট। আর তাতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১১ অক্টোবর ২০১৭ ০১:৩৭
গোলাপবাগ রোডে ছিঁড়েছে তার। ছবি: উদিত সিংহ

গোলাপবাগ রোডে ছিঁড়েছে তার। ছবি: উদিত সিংহ

কোথাও তার ছিঁড়ে, তো কোথাও তারের উপরে গাছ পড়ে যাওয়ায় রাতভর বিদ্যুৎহীন রইল বর্ধমান শহর। সারা রাত ঝোড়ো হাওয়া ও তুমুল বৃষ্টির জন্য বিদ্যুৎ পরিষেবা স্বাভাবিক করতে হিমসিম খেয়েছেন বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা। কোথাও ১৫ ঘণ্টা, কোথাও ১৮ ঘণ্টা পরে বিদ্যুৎ এসেছে। মঙ্গলবার সকাল থেকে পরিস্থিতির উন্নতি হয়। তবে জেলার নানা গ্রামীণ এলাকা এ দিন সন্ধে পর্যন্ত অন্ধকারে ডুবে ছিল।

হঠাৎ ঘনিয়ে ওঠা নিম্নচাপের জেরে পূর্ব বর্ধমান জেলা জুড়ে বৃষ্টি হয় সোমবার। সেই সঙ্গে ছিল হাওয়ার দাপট। আর তাতেই বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে জেলার বিস্তীর্ণ এলাকা। সোমবার রাতে বর্ধমানের রাজ কলেজের কাছে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সে রাতেই বর্ধমান থানার সামনে শর্ট সার্কিট হয়ে একটি এটিএমে আগুন লেগে যায়। মঙ্গলবার সকালে ভাতারে মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে এক বৃদ্ধার মৃত্যু হয়েছে। জেলা বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর সূত্রে জানা যায়, জেলায় প্রায় সাড়ে তিনশো বাড়ি ভাঙার রিপোর্ট পাওয়া গিয়েছে।

খেতিয়ার কাছে গাছ পড়ে যাওয়ায় সোমবার রাত থেকে দীর্ঘক্ষণ বর্ধমান-কাটোয়া রাজ্য সড়কে যান চলাচল বন্ধ ছিল। গলসির পারাজ স্টেশনের কাছে খড়ি সেতুর উপর দিয়ে জল যাওয়ার ফলে ওই রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ রয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় জেলায় গড়ে ৯১ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। পুলিশ জানায়, ভাতারের মাহাতার বাসিন্দা নুরজাহান বিবি মল্লিক (৬০) রান্নাঘরের মাটির দেওয়াল চাপা পড়ে এ দিন সকালে মারা যান।

বর্ধমান পুরসভা সূত্রে জানা যায়, শহরের সুভাষপল্লি, ১ নম্বর ওয়ার্ডের জলট্যাঙ্কের কাছে, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের রেললাইনের আশপাশ, বাজেপ্রতাপপুরের একাংশ, মাঠপাড়া-সহ বেশ কিছু এলাকা মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত জলমগ্ন ছিল। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের নার্সদের আবাসনের একতলায় জল ঢুকে যায়। পুরসভার বিরুদ্ধে গড়িমসির অভিযোগ তুলেছেন শহরবাসীর অনেকে। পুরপ্রধান স্বরূপ দত্তের প্রতিক্রিয়া, ‘‘বৃষ্টি ধরলেই জল নেমে যাবে।’’

বর্ধমান উত্তর ও দক্ষিণ মহকুমার বিস্তীর্ণ এলাকায় বিদ্যুৎ-বিভ্রাট শুরু হয় সোমবার বিকেল থেকে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা সূত্রে খবর, টানা বৃষ্টির জেরে শহরের দু’টি সাবস্টেশন বিকল হয়ে পড়ে। ঝড়ের জন্য বিভিন্ন জায়গায় তার ছিড়ে গিয়েছে। রাস্তার উপরে গাছ পড়ে থাকায় ও জল জমে থাকায় বিদ্যুৎ-কর্মীদেরও কাজ করতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়েছে। বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার বর্ধমান আঞ্চলিক শাখার ম্যানেজার মানিক পাল বলেন, ‘‘প্রচণ্ড ঝুঁকি নিয়ে আমাদের কর্মীরা রাতভর কাজ করেছেন। প্রথমে সাবস্টেশনের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক করতে হয়েছে। তার পরে শহর ও তার বাইরের এলাকায় পরিষেবা ঠিক করা হয়েছে।’’ মঙ্গলকোটের জালপাড়ায় বিদ্যুতের খুঁটির উপরে ভেঙে পড়ল শিরিষ গাছ ভেঙে পড়ায় মঙ্গলবার সকাল প্রায় ১০টা পর্যন্ত গুসকরা-নতুনহাট রোডে যান চলাচল বন্ধ থাকে। পরে বাসিন্দারা গাছ সরিয়ে দিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।

তালিতে আদিবাসী গ্রাম এক দিনের বৃষ্টিতে প্লাবিত হয়েছে। গ্রামের মানুষজনকে গৌরেশ্বর হাইস্কুলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্ধমানের বাজেপ্রতাপপুর ও আউশগ্রামের বাঘড়াই গ্রামের একাংশেও একই রকম পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। বাসিন্দাদের সরানো হয়েছে স্থানীয় স্কুল ভবনে। বড়শূলে ভেঙে পড়েছে বেশ কিছু বাড়ি।

তবে এই বৃষ্টিতে চাষে বিশেষ ক্ষতির আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে কৃষি দফতর। জেলা উপ-কৃষি আধিকারিক জগন্নাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নানা জায়গায় মাঠে জল জমলেও ধানে ক্ষতির সম্ভবনা খুব কম।’’

Load Shedding Rainfall
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy