E-Paper

বাসের জন্য সকাল থেকে হাপিত্যেশ, ভরসা টোটো-অটো

প্রত্যেক দিন কালনা বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটে ১০০টির বেশি বেসরকারি বাস যাতায়াত করে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কালনা-পাণ্ডুয়া রুটে চলছে মাত্র ছ’টি বাস।

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ২৫ জানুয়ারি ২০২৪ ০৮:০৩
বাসের জন্য অপেক্ষা কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে।

বাসের জন্য অপেক্ষা কাটোয়া বাসস্ট্যান্ডে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়।

আশঙ্কাই সত্যি হল। বুধবার বর্ধমান শহরে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় লোক আনার জন্য বহু বাস তুলে নেওয়া হয়েছিল। ফলে নিত্যযাত্রীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়েছে বলে অভিযোগ। বর্ধমান শহর থেকে কালনা বা কাটোয়া, সর্বত্রই যান-যন্ত্রণার শিকার হয়েছেন মানুষজন।

প্রত্যেক দিন কালনা বাসস্ট্যান্ড থেকে বিভিন্ন রুটে ১০০টির বেশি বেসরকারি বাস যাতায়াত করে। বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা গিয়েছে, কালনা-পাণ্ডুয়া রুটে চলছে মাত্র ছ’টি বাস। বৈচী-বর্ধমান রুটে একটি, কালনা-বর্ধমান রুটে একটি বাস চলেছে। কালনা-কৃষ্ণনগর রুট-সহ সব রুট মিলিয়ে মোট ১১টি বাস চলেছে বলে খবর। বাস ছিল না বাঘনাপাড়া হয়ে কালনা-মেমারি রুটে। বোলপুর, বেনাচিতি, আসানসোল যাওয়ার দূরপাল্লার বাসও তেমন একটা দেখা যায়নি। অনেকেই ট্রেনে কিংবা অটো বা টোটোয় গন্তব্যে পৌঁছন।

বাস না পাওয়া যাত্রীদের একাংশের দাবি, গন্তব্যস্থলে পৌঁছতে তিন-চারবার গাড়ি বদল করতে হবে। খরচ অনেক বেশি হবে। বাসস্ট্যান্ডের সামনে প্রচুর টোটো ও অটো ছিল।নদিয়ার শান্তিপুর থেকে নদী পেরিয়ে কালনায় এসেছিলেন দুলালী হালদার। তিনি বলেন, ‘‘আমি মেমারির বাসিন্দা। বেয়াই বাড়ি বেড়াতে গিয়েছিলাম। সকালে কালনা বাসস্ট্যান্ডে এসে শুনি বাস চলছে না।’’ হুগলির গুপ্তিপাড়ার বাসিন্দা সাবিনা মণ্ডলের কথায়, ‘‘হুগলির হরালে আত্মীয়ের বাড়ি যাব। কালনা বাসস্ট্যান্ডে এসে শুনি, এই রুটে একটি মাত্র বাস চলছে।’’

শুধু বেসরকারি বাস নয়, সরকারি বাসও কম চলেছে বলে দাবি যাত্রীদের একাংশের। কালনা শহর আইএনটিটিইউসি’র সভাপতি শান্তি শাহা বলেন, ‘‘বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছেন, এমন অনেকে বাসে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় গিয়েছেন। অন্য দিনের তুলনায় কম বাস চলেছে ঠিকই, তবে বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া এলাকায় ছোট যানবাহন থাকায় গন্তব্যে পৌঁছতে যাত্রীদের সমস্যা হবে না।’’ কালনার এক তৃণমূল নেতার দাবি, ‘‘প্রতিটি পঞ্চায়েত এবং শহর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর সভায় বাস গিয়েছে। অন্য জেলা থেকে ২০টি বাস আনতে হয়েছে।’’

কাটোয়া মহকুমার চিত্রটাও ছিল একই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বাসের জন্য অপেক্ষা করতে হয় প্রায় সকলকে। বাস না পেয়ে পিক-আপ ভ্যান, অটো কিংবা অন্য যানবাহনে বাড়তি ভাড়া দিয়ে গন্তব্যে যেতে হয়। বহু টোটো চালক বর্ধমানে সভায় গিয়েছিলেন। কাটোয়া শহরে টোটোর সংখ্যাও ছিল কম। সরকারি অফিসগুলিতে কর্মীদের হাজিরা কম ছিল বলে প্রশাসন সূত্রে খবর। মুর্শিদাবাদের সালার থেকে ট্রনে কাটোয়া এসেছিলেন রিঙ্কু মণ্ডল, সাবিনা ইয়াসমিন। মন্তেশ্বর যাওয়ার পরিকল্পনা ছিল। তাঁদের আক্ষেপ, “দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করেও বাস পাইনি। আমাদের ম্যাটাডরে চেপে যেতে হল।” যদিও কাটোয়া বাস মালিক সমিতির সভাপতি নারায়ণচন্দ্র সেনের দাবি, “যাত্রীদের অসুবিধা চোখে পড়েনি। কারণ অনেক আগেই মুখ্যমন্ত্রীর সভা ঘোষণা করা হয়েছিল। যাত্রীরা প্রস্তুতি নিয়েই বেরিয়েছিলেন।”

বর্ধমান শহরের দু’প্রান্তে দু’টি বাসস্ট্যান্ড সকাল থেকে ছিল ফাঁকা। সরকারি বাসের টিকিট কাউন্টার থেকে টিকিটও দেওয়া হয়নি। পরিস্থিতি আঁচ করে অনেকে স্ট্যান্ডে আসেননি। জরুরি কাজে যাঁদের বেরোতে হয়েছিল, তাঁরা নাকাল হন। সরকারি অনেক বাসও তুলে নেওয়া হয়েছিল। সল্টলেক যাওয়ার জন্য নবাবহাট বাসস্ট্যান্ডে এসেছিলেন সাহেব ঘোষ। বাস না পেয়ে তাঁকে ফিরতে হয়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Katwa

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy