স্থানীয় বাসিন্দাদের একাংশের বাধায় সরকারি জমিতে স্বাস্থ্যকেন্দ্র তৈরি করতে পারছে না পুরসভা। এই অভিযোগ উঠেছে দুর্গাপুরের ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের ধান্ডাবাগে। যদিও দ্রুত সমস্যা মিটে যাবে বলে আশ্বাস মিলেছে পুরসভার তরফে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ধান্ডাবাগ থেকে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের দূরত্ব অনেকখানি। যাতায়াত করতে যেমন সময় লাগে, তেমনই একাধিক বার বাস বদলে বা অন্য যানবাহনে যাতায়াত করতে অন্তত ৫০ টাকা খরচ হয়। এই পরিস্থিতিতে এলাকার তৎকালীন পুর প্রতিনিধি বছর তিনেক আগে এলাকায় একটি স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তুলতে উদ্যোগী হন। পুরসভা রাজি হয়।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বাগদি পাড়ায় কালীমন্দির সংলগ্ন একটি আট কাঠার সরকারি জমি চিহ্নিত করা হয়। পুরসভা স্বাস্থ্যকেন্দ্র নির্মাণের জন্য প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করে। একটি ঠিকা সংস্থাকে কাজের দায়িত্ব দেওয়া হয় ২০২৪ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর। ওই ঠিকা সংস্থার পক্ষে বিমল চক্রবর্তীর দাবি, “কাজ করতে গেলে বাসিন্দারা জমি নিয়ে সমস্যা তৈরি করেন। আমি জানি, ওটা সরকারি জমি। পুরসভা কাজের দায়িত্ব দিয়েছে। কিন্তু কাজ করতে পারিনি। ছেড়ে চলে এসেছি। প্রায় আট মাস হয়ে গেল। আমাদের টাকা ওখানে পড়ে রয়েছে।”
নিজেকে তৃণমূল কর্মী দাবি করে স্থানীয় বাসিন্দা রবীন বাগদি বলেন, “পাড়ার বাচ্চারা এখানে খেলাধুলো করে। পাড়ায় আর মাঠ নেই। তাই প্রাক্তন পুর প্রতিনিধি যতই বলুন, এখানে স্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে দেওয়া হবে না।” প্রাক্তন পুর প্রতিনিধি সুশীল চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বাসিন্দাদের সুবিধার কথা ভেবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র করতে উদ্যোগী হই। কিন্তু প্রতি পদে বাধা। পুরসভায় সব জানিয়েছি।” পুর প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য ধর্মেন্দ্র যাদবের বক্তব্য, “জায়গাটির আশপাশে বহু তফসিলি জাতি ও উপজাতির মানুষের বাস। তাঁদের কিছু দাবি আছে। কথাবার্তা চলছে। সমস্যা মিটে যাবে।”
বিষয়টিকে কটাক্ষ করে বিজেপির বর্ধমান-দুর্গাপুর সাংগঠনিক জেলার সহ-সভাপতি চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও সরকারি জমি দখলমুক্ত করে স্বাস্থ্যকেন্দ্র গড়ে তোলা যাচ্ছে না। এটা কী করে সম্ভব, তা তৃণমূলই বলতে পারবে।” তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বিষয়টি জানা ছিল না। সরকারি জমিতে নিশ্চয়ই স্বাস্থ্যকেন্দ্র হবে। বিরোধীদের এ সব নিয়ে ভাবার দরকার নেই।”
এই খবরটি পড়ার জন্য সাবস্ক্রাইব করুন
5,148
1,999
429
169
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)