Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ভোটের আগে ফের নজর ফুটিসাঁকোয়

ভোট এলেই তাই জায়গাটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। এ বারও তাদের চিন্তার জায়গা সেই ফুটিসাঁকো মোড়।

কেতুগ্রামের ফুটিসাঁকো মোড়ে চলছে নজরদারি। —নিজস্ব চিত্র।

কেতুগ্রামের ফুটিসাঁকো মোড়ে চলছে নজরদারি। —নিজস্ব চিত্র।

সৌমেন দত্ত
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২০ মার্চ ২০১৯ ০৩:৪২
Share: Save:

দুষ্কর্ম করে পালানোর জন্য তিন জেলার সংযোগস্থলের এই মোড় দুষ্কৃতীরা কাজে লাগায়। ভোট এলেই তাই জায়গাটি নিয়ে ভাবনাচিন্তা করতে হয় নির্বাচন কমিশনকে। এ বারও তাদের চিন্তার জায়গা সেই ফুটিসাঁকো মোড়।

কেতুগ্রাম থানার বাদশাহী রোডের উপরে এই মোড়টি পূর্ব বর্ধমান, বীরভূম ও মুর্শিদাবাদ— এই তিন জেলার সংযোগস্থল। ফুটিসাঁকো থেকে দেড় কিলোমিটারের মধ্যে বীরভূম, সাড়ে পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে মুর্শিদাবাদ। ফুটিসাঁকো মোড় থেকে উত্তর-দক্ষিণে গিয়েছে বাদশাহী রোড, পশ্চিমে কীর্ণাহার রোড এবং পূর্বে কাটোয়া। এই মোড়কে কেন্দ্র করে ৬ কিলোমিটার ব্যাসার্ধের বৃত্তের মধ্যে রয়েছে তিনটি জেলার চারটি থানা। ওই এলাকা থেকে ৫-৭ কিলোমিটার দূরে মারুট গ্রাম। তার এক দিকে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রাম, অন্য দিকে মুর্শিদাবাদের বড়ঞা থানা এলাকা।

এমন ভৌগোলিক অবস্থানের জন্যে দুষ্কৃতীরা অবাধে জেলাগুলির মধ্যে যাতায়াত করতে পারে। বারবার প্রশাসনের বৈঠকে এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে। বিষয়টি জানা রয়েছে জাতীয় নির্বাচন কমিশনেরও। নির্বাচন কমিশনের এক কর্তার কথায়, “জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারদের সঙ্গে বৈঠকে ফুটিসাঁকোর কথা উঠেছে। ওই এলাকা নিয়ে আমাদের চিন্তা রয়েছে। নির্দিষ্ট সীমানা না থাকায় অপরাধীদের ধরা মুশকিল হয়ে পড়ে, অনুপ্রবেশ সহজ হয়— এমন আলোচনা হয়েছে। সে জন্য ওই এলাকায় আমাদের নজর থাকবে।’’

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

২০১৬ সালে বিধানসভা ভোটের আগে নির্বাচন কমিশনের কর্তা এবং তিন জেলার জেলাশাসক ও পুলিশ সুপারেরা ফুটিসাঁকো সরেজমিনে পরিদর্শন করে নির্বাচন কমিশনের কাছে রিপোর্ট জমা দিয়েছিলেন। তার ভিত্তিতে একটি নির্দেশিকা জারি করেছিল নির্বাচন কমিশন। সেই নির্দেশিকা ধরেই ফুটিসাঁকো মোড় এখন থেকে নিয়ন্ত্রণে আনতে চাইছে জেলা প্রশাসন। নির্বাচন কমিশনের একটি সূত্রের দাবি, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে ‘ওয়েব কাস্টিং’য়ের মাধ্যমে ফুটিসাঁকো মোড় যাতে জাতীয় নির্বাচন কমিশন দেখতে পায়, সে ব্যবস্থা করার কথা জেলা প্রশাসনকে বলা হতে পারে।

মঙ্গলবার বর্ধমানে জেলাশাসকের দফতরে বিভিন্ন জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একটি বৈঠকেও ফুটিসাঁকোর কথা ওঠে। জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব বলেন, “বৈঠকে ওই এলাকা নিয়ে বিশদে আলোচনা হয়েছে।’’ প্রশাসন সূত্রের খবর, ফুটিসাঁকোয় ২৪ ঘণ্টা নাকাবন্দির সিদ্ধান্ত হয়েছে। ইতিমধ্যে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় কেতুগ্রামে ঘুরে এসেছেন। ওই মোড়ে কেতুগ্রামের দিকে সিসি ক্যামেরা রয়েছে। বীরভূমের জেলাশাসক মৌমিতা গোদারা বসু এ দিন বলেন, “ফুটিসাঁকোয় দিনভর নাকাবন্দি চলছে। দু’টি সিসি ক্যামেরাও বসানো হয়েছে। ওই এলাকাটি ‘শ্যাডো জোন’। সে কারণে নির্বাচন কমিশনের পুরনো নির্দেশ মেনে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।’’ মুর্শিদাবাদের কান্দির মহকুমাশাসক অভীক দাস বলেন, “আমরাও সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। নাকাবন্দিও চলছে।’’

এ দিন পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তব আরও বলেন, ‘‘সীমানা এলাকায় অনেক জায়গা রয়েছে, যা অন্য জেলার কাছে। ঠিক হয়েছে, নির্বাচনের সময়ে সেই সব এলাকায় কোনও ঘটনা ঘটলে অন্য জেলার নিকটবর্তী থানা প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE