ধার নেওয়া টাকা ফেরত দিতে হবে না। বদলে সরিয়ে দিতে হবে ‘প্রেমিকা’র স্বামীকে। কাঁকসার জামদহ গ্রামের যুবক চঞ্চল ঘোষকে এই ‘রফাসূত্রেই’ খুন করা হয় বলে পুলিশের দাবি।
ওই ঘটনায় নিহতের পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে গ্রেফতার করা হয়েছে ওই যুবকের গ্রেফতার করা হয় নিহতের স্ত্রী রিয়া ঘোষ, তাঁর ‘প্রেমিক’ ঝন্টু মণ্ডল এবং ঝন্টুর বাবা-মা, জেঠিমাকে। এখন পুলিশ খোঁজ চালাচ্ছে চঞ্চল পান নামে এক যুবকের।
বছর চারেক আগে সরপির বাসিন্দা রিয়ার সঙ্গে চঞ্চলের বিয়ে হয়। ৩০ সেপ্টেম্বর, দশমীর সকালে বাড়িতেই উদ্ধার হয় বছর সাতাশের চঞ্চল গুলিবিদ্ধ দেহ। আদালতে তুলে রিয়া ও ঝন্টুকে পাঁচ দিনের হেফাজতে নেয় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে তদন্তকারীরা জানতে পেরেছেন, বছর খানেক ধরে রিয়ার সঙ্গে প্রতিবেশী যুবক ঝন্টুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। নিহত চঞ্চল ও ঝন্টুর বন্ধু কাঞ্চনপুরের বাসিন্দা চঞ্চল পানের একটি ইটভাটা রয়েছে। তার বিরুদ্ধে বেআইনি লগ্নি সংস্থার হয়ে কাজ করার অভিযোগও রয়েছে বলে এলাকাবাসীর দাবি।
পুলিশের দাবি, জেরার মুখে ধৃত ঝন্টু ও রিয়া জানিয়েছে, চঞ্চল পান ঝন্টুর কাছে ৫৫ হাজার টাকা ধার নিয়েছিল। ঝন্টু ওই টাকা ফেরত দিতে হবে না বলে চঞ্চলকে জানান। বরং টাকার বদলে ‘প্রেমিকা’র স্বামীকে সরিয়ে দিতে হবে, এই মর্মে রফা হয় দু’জনের। পুলিশের দাবি, এর পরে নবমীর রাতে জামদহে চঞ্চল ঘোষের বাড়িতে আসে চঞ্চল পান। সেখানে মদের আসরও বসে। ঝন্টু সেখানে ছিল না। সে দিন বাড়িও ফাঁকা ছিল। কারণ, নবমীর দিন সকালেই মেয়ে ও শ্বশুরকে সঙ্গে নিয়ে বাপের বাড়ি চলে যায় রিয়া।
পুলিশের দাবি, জেরায় তারা জেনেছে, ওই রাতেই চঞ্চল পান নিজের পিস্তল থেকে চঞ্চল ঘোষের মাথায় গুলি করে। ঘটনাটি আত্মহত্যা বোঝাতে পিস্তল ও সব গুলি চঞ্চলের খাটের উপরে রেখে দেওয়া হয়। তবে এই খুনের পিছনে রিয়ার কোনও হাত নেই বলে তদন্তকারীদের কাছে দাবি করেছে ঝন্টু।
শুক্রবার রিয়া ও ঝন্টুকে ফের আদালতে তোলা হলে তিন দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়। আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পূর্ব) অভিষেক মোদী বলেন, ‘‘ওই দু’জনকে জেরা করে আরও তথ্য জানার চেষ্টা চলছে। চঞ্চল পানের খোঁজ চলছে।’’ চঞ্চল পানের পরিবারের সঙ্গে অনেক চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা যায়নি।