Advertisement
E-Paper

বাসনের গুদামে হুকিং, বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু

স্ত্রী-কন্যাকে চোখের ডাক্তারের কাছে পৌঁছে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন বাসনের দোকানে। জানতেন না, দোকানের গুদামে হুকিং করে নেওয়া বিদ্যুতের তারে অপেক্ষা করে আছে মৃত্যু। সেই ঝুলন্ত তারের ছোঁয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দোকানের এক কর্মীকে বাঁচাতে গিয়েই মারা গেলেন দুর্গাপুরের সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায় (৪৭)। বাড়ি শহরের বিধাননগর এলাকায় শিল্পকানন ফেজ ২-তে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইউআইটি-র ‘ট্রেনিং অ্যান্ড প্লেসমেন্ট’ অফিসার ছিলেন তিনি।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৪ ০২:৩০
সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।

স্ত্রী-কন্যাকে চোখের ডাক্তারের কাছে পৌঁছে দিয়ে ছেলেকে নিয়ে তিনি গিয়েছিলেন বাসনের দোকানে। জানতেন না, দোকানের গুদামে হুকিং করে নেওয়া বিদ্যুতের তারে অপেক্ষা করে আছে মৃত্যু।

সেই ঝুলন্ত তারের ছোঁয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্ট দোকানের এক কর্মীকে বাঁচাতে গিয়েই মারা গেলেন দুর্গাপুরের সত্যজিৎ মুখোপাধ্যায় (৪৭)। বাড়ি শহরের বিধাননগর এলাকায় শিল্পকানন ফেজ ২-তে। বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ ইউআইটি-র ‘ট্রেনিং অ্যান্ড প্লেসমেন্ট’ অফিসার ছিলেন তিনি। বুধবার সকালে এই দুর্ঘটনার পরেই বিকেলে দুর্গাপুর প্রজেক্টস লিমিটেডের (ডিপিএল) অফিসারেরা গুদামে হানা দিয়ে হুকিং ধরেন। দোকানের দুই মালিক বেপাত্তা।

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকাল ১১টা নাগাদ স্ত্রী মৌসুমী, মেয়ে নয়নিকা এবং ছেলে শুভায়ুকে নিয়ে নিউ টাউনশিপ থানা এলাকার মামরা বাজারে গিয়েছিলেন সত্যজিৎবাবু। নয়নিকা একাদশ শ্রেণির ছাত্রী, শুভায়ু পড়ে পঞ্চম শ্রেণিতে। মেয়েকে নিয়ে মৌসুমী এক চিকিৎসকের কাছে চোখ পরীক্ষা করাতে গিয়েছিলেন। ছেলেকে নিয়ে সত্যজিৎবাবু বাসনের দোকানে যান দেওয়ালে ঝোলানো ধাতব র্যাক কিনতে। তেমন র্যাক ছিল রাস্তার উল্টো দিকে গুদামে। কর্মচারী শুভঙ্কর দেবনাথের সঙ্গে সত্যজিৎবাবুকে গুদামে পাঠান দোকানের মালিক।

এর পরেই ঘটে যায় দুর্ঘটনা। তদন্তে নেমে পুলিশ জেনেছে, দোকানের কর্মী উপর থেকে র্যাকটি নামাতে গেলে সেটি বিদ্যুতের খোলা তারে ছুঁয়ে যায়। তাঁকে বাঁচাতে গিয়ে তড়িদাহত হন সত্যজিৎবাবুও। দু’জনেই ছিটকে পড়েন মেঝেয়। আশপাশের দোকানিরা ছুটে আসেন। সত্যজিৎবাবুকে স্থানীয় নার্সিংহোমে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে ময়নাতদন্তের জন্য দেহটি দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। দোকানের কর্মী, স্থানীয় ভ্যাম্বে কলোনির বাসিন্দা শুভঙ্কর অবশ্য বেঁচে গিয়েছেন। তিনি ওই হাসপাতালেই ভর্তি, অবস্থা স্থিতিশীল। তাঁর মা শুক্লা দেবনাথ বলেন, “ছেলে আমাকে বলেছে, তাকে বাঁচাতে গিয়েই সত্যজিৎবাবু বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হন।”

ওই এলাকায় বিদ্যুৎ সরবরাহের দায়িত্বে থাকা সংস্থা ডিপিএলের চার অফিসার বিকেলে পুলিশ নিয়ে ওই গুদামে হানা গিয়ে দেখেন, হুকিং করে বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়া হয়েছে। এক অফিসার বলেন, “অত্যন্ত বিপজ্জনক ভাবে তারের সংযোগ ঝুলছে। আমরা দোকান মালিকের বিরুদ্ধে পুলিশ কাছে অভিযোগ দায়ের করব।” গুদামটি অনির্দিষ্ট কাল বন্ধ রাখার কথা জানিয়ে মামরা বাজার ব্যবসায়ী সমিতির পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি সাঁটিয়ে দেওয়া হয়। তালাও লাগানো হয়। সমিতির সাধারণ সম্পাদক আশিস ঘোষ জানান, পুলিশের তদন্ত না শেষ হওয়া পর্যন্ত গুদাম খোলা হবে না। দোকানের মালিক শিবু দত্ত এবং বাদল দত্ত অবশ্য দুর্ঘটনার পর থেকেই বেপাত্তা। পুলিশ জানিয়েছে, আপাতত অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করা হয়েছে। লিখিত অভিযোগ পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

utensil godown electrocuted durgapur latest news online news latest news online
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy