Advertisement
E-Paper

Unemployment: ‘বি টেক’ করেও জোটেনি চাকরি, দই-বড়া বেচেন যুবক

সুতীর্থর মা সংযুক্তা বলেন, ‘‘এত পড়াশোনা করেও ছেলেটার চাকরি জুটল না। আমরা ওকে লড়তে উৎসাহিত করি।’’

সুপ্রকাশ চৌধুরী

শেষ আপডেট: ০২ এপ্রিল ২০২২ ০৭:১৩
মায়ের হাতে তৈরি দই-বড়া বিক্রি শুরু করেছেন সুতীর্থ।

মায়ের হাতে তৈরি দই-বড়া বিক্রি শুরু করেছেন সুতীর্থ। ছবি: উদিত সিংহ

বায়োটেকনোলজি নিয়ে ‘বি টেক’ করেও জোটেনি চাকরি। ছবি আঁকার পাশাপাশি, দই-বড়া বিক্রি করে সংসার টানছেন বর্ধমান শহরের বছর তেইশের সুতীর্থ সামন্ত।

সুতীর্থ জানান, দু’সপ্তাহ আগে বাড়িতে মায়ের হাতে তৈরি দই-বড়া বিক্রি শুরু করেছেন তিনি। দিনে চারশো টাকার মতো আয় হয়। তা দিয়েই সংসার চলে। প্রতিদিন বিকেলে জিটি রোডের ছিন্নমস্তা কালীবাড়ির কাছে দই-বড়া বেচতে দেখা যায় খাজা আনোয়ারবেড় এলাকার ওই যুবককে।

সুতীর্থ জানান, ২০১৭-এ বর্ধমান মিউনিসিপ্যাল বয়েজ স্কুল থেকে উচ্চমাধ্যমিক পাশ করে, চেন্নাইয়ের একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বায়োটেকনোলজিতে ‘বি টেক’ করেন তিনি। ছোট থেকেই ছবি আঁকতে ভালবাসেন সুতীর্থ। পাড়ারই এক শিক্ষকের কাছে তালিম নিয়‌েছিলেন। দই-বড়া বেচার পাশাপাশি, নিজের আঁকা পটচিত্র ও ছবি বিক্রি করেন। কলেজ জীবনে পয়সা বাঁচিয়ে কেনা ক্যামেরায় ছবি তোলেন তিনি।

সুতীর্থ জানান, তিনি যখন দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়েন, তখনই তাঁর বাবা সুকান্ত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে কর্মক্ষমতা হারান। তাঁর দাদু বেড় হাইস্কুলের শিক্ষক ছিলেন। তাঁর পেনশনেই চলত সংসার। ‘‘গত জানুয়ারিতে দাদুর মৃত্যুর পরে, অথই জলে পড়ে গোটা সংসার’’, বলছেন সুতীর্থ। ওই যুবকের দাবি, ‘‘বি টেক শেষ করে চাকরির জন্য অনেক ছোটাছুটি করেছিলাম। কিন্তু জোটেনি। তবে চাকরির আশা ছাড়িনি। বাড়িতে বাবা, মা ছাড়াও এক বোন রয়েছে। বোন এ বার উচ্চ মাধ্যমিক দেবে। দু’বেলা দু’মুঠো খাবারের জন্য কিছু একটা করতেই হত। মায়ের সঙ্গে আলোচনা করেই দই-বড়া বিক্রির সিদ্ধান্ত নিই।’’

সুতীর্থর মা সংযুক্তা বলেন, ‘‘এত পড়াশোনা করেও ছেলেটার চাকরি জুটল না। আমরা ওকে লড়তে উৎসাহিত করি।’’ ওই যুবকের লড়াইকে কুর্নিশ করছেন এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক তপন সামন্ত। তিনি বলেন, ‘‘ওর দাদুর সঙ্গে পরিচয় ছিল আমার। ছেলেটি উচ্চশিক্ষিত। ছবি আঁকায় দক্ষ। ওর অবস্থা দেখে কষ্ট হয়। সুতীর্থর লড়াইকে সম্মান জানাই।’’

সন্ধ্যা পর্যন্ত দই-বড়া বিক্রি করে বাড়ি ফিরে ছবি আঁকায় মন দেন সুতীর্থ। সে সব ছবি এবং তাঁর তোলা ফটো প্রদর্শনীতেও পাঠাতে চান ওই যুবক। তাঁর প্রতিবেশী পিনাকী দত্তর কথায়, ‘‘সুতীর্থ যখন ছোট, তখন থেকেই ওর বাবা অসুস্থ। এখন ওদের পরিবারের অবস্থা আরও খারাপ হয়েছে। ওর লড়াই অন্যদের প্রেরণা দেবে।’’

বর্ধমান পুরসভার চেয়ারম্যান, তৃণমূলের পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘সুতীর্থকে কুর্নিশ জানাই। ওর পাশে থাকার চেষ্টা করব।’’

Unemployed Bardhaman
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy