Advertisement
E-Paper

বিয়ে রুখে স্কুলে ফেরাতে একজোট

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলীর ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা কেউ চাষাবাদে, কেউ বা ভিন্ রাজ্যে গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। অনেকেই অর্থাভাবে কম বয়সে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেন। বাড়ে স্কুলছুট। এই প্রবণতা রুখতেই ‘শিশুশ্রী’র পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ২৩ জুন ২০১৭ ১২:৫০
পূর্বস্থলীর বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির মেয়েরা। নিজস্ব চিত্র

পূর্বস্থলীর বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ কমিটির মেয়েরা। নিজস্ব চিত্র

বয়স এদের ১২ থেকে ১৬। কিন্তু এখন নাবালিকা বিয়ে রুখতে অঙ্গীকারবদ্ধ তারা। বৃহস্পতিবার ‘বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ কমিটি’র আত্মপ্রকাশের দিেনই চার জনের বিয়েও রোখে এই কিশোরীরা।

পূর্বস্থলীর যশপুর ও মিনাপুর গ্রামের অষ্টম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ২৮ জন ছাত্রী এই কমিটি তৈরি করেছে। সাবানা খাতুন, কবিতা সুলতানা, পারভিন খাতুন, জাহানারা শেখরা জানায়, নিজেরা নাবালিকা বিবাহে না করা, খবর পেলে বাল্য বিবাহ রোখা এবং এলাকায় সদ্যোজাতদের জন্য ‘শিশুশ্রী’ নামে তহবিল তৈরি— এই তিন উদ্দেশ্যে তারা জোট বেঁধেছে। গত দু’-তিন মাস ধরে ছাত্রীদের এই পরিকল্পনায় নানা ভাবে সাহায্য করেছেন মিনাপুর নিম্নবুনিয়াদি বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক প্রসেঞ্জিৎ সরকার ও অন্য শিক্ষকেরা।

এ দিন কমিটির আত্মপ্রকাশ উপলক্ষে বাল্য বিবাহের বিরুদ্ধে লিফলেট বিলি, প্রচার অনুষ্ঠান করে ছাত্রীরা। পরে মিনাপুরের স্কুল চত্বরে আয়োজিত হয় অনুষ্ঠান। সেখানেই ছিলেন পূর্বস্থলী ১-র যুগ্ম উন্নয়ন আধিকারিক দুর্গাপ্রসাদ ঘোষ, স্কুল পরিদর্শক কৃষ্ণেন্দু ঘোষ, স্থানীয় পঞ্চায়েত প্রধান অশোক দাস। অনুষ্ঠানে অতিথি বরণ হিসেবে কমিটির সদস্যরা একটি করে অঙ্গীকার পত্র তুলে দেয়, যার প্রতিটিতে দু’জন করে ছাত্রী জানিয়েছে, ১৮ বছর না হলে বিয়ে করবে না। এমন সময়ে হঠাৎ খবর মেলে, এলাকারই তিন জন নাবালিকা ও এক জন নাবালকের বিয়ের তোড়জোড় চলছে। এর পরে অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই প্রশাসনের সাহায্য নিয়ে বিয়েগুলি রুখে দেয় কমিটি। ওই চার জনকেই ভর্তি করানো হয় দোগাছিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে।

প্রশাসনের সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্বস্থলীর ওই দুই গ্রামের বাসিন্দারা কেউ চাষাবাদে, কেউ বা ভিন্ রাজ্যে গয়না শিল্পের সঙ্গে যুক্ত। অনেকেই অর্থাভাবে কম বয়সে ছেলে-মেয়ের বিয়ে দেন। বাড়ে স্কুলছুট। এই প্রবণতা রুখতেই ‘শিশুশ্রী’র পরিকল্পনা কমিটির সদস্যদের।

কবিতারা জানায়, কারও ঘরে সন্তান জন্মালে তারা গ্রাম জুড়ে অর্থ সাহায্যে নামবে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে শিশুটিকে আশীর্বাদ করে সাধ্যমত অর্থ সাহায্যের আর্জি জানানো হবে। সংগৃহীত অর্থ শিশুটির মায়ের নামে ব্যাঙ্কে রাখা হবে। তবে মেয়ে ও ছেলের ক্ষেত্রে যথাক্রমে ১৮ ও ২১ বছর না হলে সেই টাকা তোলা যাবে না। প্রসেঞ্জিৎবাবু বলেন ‘‘মেয়েদের সিদ্ধান্ত, ন্যূনতম পাঁচ হাজার টাকা প্রতি শিশুর জন্য রাখা হবে।’’

পূর্বস্থলী ১-র বিডিও পুষ্পেন চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দারুণ উদ্যোগ। মেয়েদের পাশে সবসময় রয়েছি।’’

Minor Marriage Girls
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy