Advertisement
E-Paper

টাকা ছিনিয়ে পুলিশের হাত গলে চম্পট

রাতে দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কালনা ১ ব্লকের কাঁকুড়িয়ার বিষহরিডাঙার ব্যবসায়ী মিলন বিশ্বাস। সহজপুর বাজারে তাঁর দুই ছেলে বাচ্চু বিশ্বাস এবং অরূপ বিশ্বাসের মুদিখানা ও কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পরে ১২ বছর ধরে সে সবের সঙ্গেই যুক্ত মিলনবাবু।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ নভেম্বর ২০১৭ ০০:৩৪
ঘটনাস্থল: রবিবার রাতে এখানেই হামলা হয় ব্যবসায়ীর উপরে। নিজস্ব চিত্র

ঘটনাস্থল: রবিবার রাতে এখানেই হামলা হয় ব্যবসায়ীর উপরে। নিজস্ব চিত্র

আচমকা ধেয়ে এসে ধাক্কা দিয়ে বেসামাল করে দিয়েছিল একটি মোটরবাইক। পিছন থেকে আসা একটি মোটরবাইক পাশে দাঁড়ালে সাহায্যের আশা করেছিলেন ব্যবসায়ী। কিন্তু সাহায্য তো দূর, মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে টাকার ব্যাগ ছিনিয়ে নিয়ে যায় সেটির আরোহীরা। রবিবার রাতে ব্যবসায়ীর কাছে খবর পেয়ে দুষ্কৃতী ধরতে রাস্তায় তল্লাশিতে নামে পুলিশ। কিন্তু তাদেরও হাত ফস্কে পালায় দুষ্কৃতীরা। পরে একটি মোটরবাইক উদ্ধার করেছে পুলিশ।

রাতে দোকান থেকে বাড়ি ফিরছিলেন কালনা ১ ব্লকের কাঁকুড়িয়ার বিষহরিডাঙার ব্যবসায়ী মিলন বিশ্বাস। সহজপুর বাজারে তাঁর দুই ছেলে বাচ্চু বিশ্বাস এবং অরূপ বিশ্বাসের মুদিখানা ও কাপড়ের ব্যবসা রয়েছে। প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষকতা থেকে অবসর নেওয়ার পরে ১২ বছর ধরে সে সবের সঙ্গেই যুক্ত মিলনবাবু। প্রতিদিন দোকান বন্ধের পরে একটি ব্যাগে টাকা নিয়ে কোনও কর্মীর মোটরবাইকে বাড়ি ফেরেন তিনি।

মিলন বাবু অভিযোগ করেন, রবিবার রাত সাড়ে ৮টা নাগাদ তিনি দোকানের কর্মী সুখেন মুর্মুর সঙ্গে মোটরবাইকে ফিরছিলেন। সঙ্গে ব্যাগে ছিল নগদ কয়েক লক্ষ টাকা। সহজপুর হাসপাতালের কাছে নয়পুকুর এলাকায় নির্জন রাস্তায় মোটরবাইক নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল দুই যুবক। আচমকা সেটি ধেয়ে আসে তাঁদের দিকে। সেটির ধাক্কায় ছিটকে পড়েন তাঁরা। তখনই পিছিন থেকে আর একটি মোটরবাইকে আসে দু’জন। সেটির দুই আরোহীর কাছে সাহায্য চাইতেই তারা রুদ্র মূর্তি ধারণ করে। মিলনবাবুর কথায়, ‘‘দু’টি মোটরবাইকের চার জন একত্রিত হয়ে টাকার ব্যাগ চায়। দিতে না চাইলে ঘুষি মারে। তার পরে এক জন কপালে রিভলবার ঠেকায়। ভয়ে ব্যাগ ওদের হাতে তুলে দিই। ওরা পালিয়ে যায়।’’

মিলন বিশ্বাস। নিজস্ব চিত্র

মিলনবাবু জানান, এর পরে ফোন করে দুই ছেলেকে খবর দেন তিনি। তাঁরা সহজপুর বাজারের কিছু ব্যবসায়ীকে নিয়ে দুষ্কৃতীরা যে পথে যায় সে দিকে খোঁজাখুঁজি শুরু করে। বুলবুলিতলা পুলিশ ফাঁড়িতেও খবর দেওয়া হয়। দুষ্কৃতীরা যেতে পারে আঁচ করে রাস্তায় সিভিক ভলান্টিয়ারদের নিয়ে পুলিশ তল্লাশি শুরু করে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বুলবুলিতলায় একটি তেলকলের সামনে একটি মোটরবাইকে থাকা তিন জনকে আটকানো হয়। কিন্তু তখনই সেখানে দু’টি লরি এসে পড়ার সুযোগ নিয়ে দেবীপুরের দিকে দ্রুত পালিয়ে যায় তারা।

পুলিশ একটি গাড়ি নিয়ে দুষ্কৃতীদের ধাওয়া করে। ওই রাস্তায় হরিশঙ্করপুর, সুলতানপুর-সহ কয়েকটি জায়গায় নজরদারি বাড়ানো হলেও দুষ্কৃতীদের হদিস মেলেনি। তবে রাতে পুলিশ সন্ধান ঘটনাস্থল থেকে আধ কালোমোটর দূরে একটি কালো মোটরবাইক পায়। পাশে পড়েছিল একটি হেলমেট এবং ছেঁড়া চটি।

তদন্তে পুলিশ জেনেছে, দুষ্কৃতীরা প্রথমে চার জন থাকলেও পরে যোগ দেয় আর এক জন। তাদের দু’জন মোটরবাইক ফেলে মাঠের রাস্তা দিয়ে পালিয়েছে। বাকিরাও মূল রাস্তা ছেড়ে অন্য রাস্তা ধরে চম্পট দেয়। সোমবার মিলনবাবু বুলবুলিতলা ফাঁড়িতে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। সহজপুর বাজার কমিটির সম্পাদক অসিত ঘোষ বলেন, ‘‘এই ঘটনায় ব্যবসায়ীরা আতঙ্কিত। এর আগে কখনও এলাকায় এমন ঘটেনি। পুলিশ দ্রুত ব্যবস্থা নিক।’’

এসডিপিও (কালনা) প্রিয়ব্রত রায় বলেন, ‘‘একটি মোটরবাইক আটক করা হয়েছে। সেটির নম্বর দেখে মালিকের খোঁজ চলছে। আশা করি শীঘ্রই দুষ্কৃতীরা ধরা পড়বে।’’

Kalna Miscreants কালনা
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy