ব্যাঙ্কে তদন্তে পুলিশ। নিজস্ব চিত্র
আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে ভিতরে ঢুকে ব্যাঙ্ক ম্যানেজারকে মারধর করার পরে ভল্ট কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে চম্পদ দিল দুষ্কৃতীরা। শুক্রবার ঘটনাটি ঘটে রানিগঞ্জের ব্যস্ততম এলাকায় নেতাজিসুভাষ বসু রাস্তার ধারে স্কুলমোড়ের কাছে।
তবে এই রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে কোনও নিরাপত্তা ছিল না বলে জানা গিয়েছে। কেন নিরাপত্তারক্ষী ছিল না, তার কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সন্দীপ কুমার।
ব্যাঙ্ক সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন দুপুর ১টা নাগাদ ৬ জন দুষ্কৃতী আগ্নেয়াস্ত্র হাতে নিয়ে ভিতরে ঢোকে। তারপরে ৫ জন আমানাতকারীর কাছ থেকে মোবাইল কেড়ে নেয়। ম্যানেজারকে মারধর করার পরে ম্যানেজার-সহ তিন ব্যাঙ্ককর্মী ও আমানতকারীদের ভল্টের ঘরে ঢুকিয়ে দেয় তারা। তারপরে ভল্ট ভেঙে টাকা বের করে নিয়ে যাওয়ার সময়ে সিসি ক্যামের যন্ত্রাংশ খুলে নেয়। জামুড়িয়ার বাসিন্দা সুশীল অগ্রবাল জানান, তিনি দু হাজার টাকা খুচরো করতে এসে ব্যাঙ্কের কাউন্টারের কাছে দাঁড়িয়েছিলেন। হঠাৎ একজন অপরিচিত তাঁকে ধাক্কা মেরে প্রথমে বসিয়ে দিয়ে মোবাইলটি কেড়ে নেয়। এরপরে তাঁকে ধাক্কা মেরে ভল্ট ঘরে ঢুকিয়ে দেয়। আর এক আমানতকারী রানিগঞ্জের দামোদা এলাকার বাসিন্দা মুকেশ কেওট জানান, তিনি টাকা তোলার আবেদনপত্র পূরণ করছিলেন। তাঁর কাছ থেকেও পেন, মোবাইল কেড়ে নেওয়া হয়। শিশুবাগানের বাসিন্দা সৌরভ সরখেল বলেন, “আমাদের ফোন কেড়ে নিয়ে সকলকে ভল্ট ঘরে ঢুকিয়ে দিয়ে দুষ্কৃতীরা চুপ থাকার নির্দেশ দিয়ে অবাধে লুঠপাট চালায়। তারপরে ভল্ট ঘরের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ করে চলে যায়। তারা চলে গেলে, আমরা জানলার কাচ ভেঙে কোনওরকমে বেরিয়ে আসি।”
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চার বছর আগে নুপুরে একটি গ্রামীণ ব্যাঙ্কে দুষ্কৃতীরা ডাকাতি করতে এসে ফিরে গিয়েছিল।। পুলিশ সূত্রে খবর, একসঙ্গে প্রচুর আমানতকারী ব্যাঙ্ক ঢুকে যাওয়ায় দুষ্কৃতীরা পালিয়ে গিয়েছিল। এ দিকে রানিগঞ্জে ব্যাঙ্ক ডাকাতির ঘটনায় শহর জুড়ে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। ডাকাতির খবর শুনে ব্যাঙ্ক ছুটে আসেন সস্ত্রীক রামবাগানের বাসিন্দা রামচন্দ্র রায়। তিনি বলেন, “আমার বিয়ের সব গয়না এই ব্যাঙ্কের লকারে আছে। আতঙ্কে আছি। এ ভাবে ভরদুপুরে শহরের প্রধান রাস্তার ধারে এমন ঘটনায় ভয় পাচ্ছি।’’ ব্যাঙ্ক ম্যানেজার সন্দীপ কুমার বলেন, “আমার নাকের নীচে ও মাথার পিছনে ওরা আঘাত করে। প্রাথমিক হিসেবে ২৪ লক্ষ টাকা নিয়ে পালিয়েছে দুষ্কৃতীরা।”
স্থানীয় সিপিএম বিধায়ক রুনু দত্ত বলেন, “এতেই প্রমাণ হয় এই শহরে কোনও নিরাপত্তা নেই। ব্যাঙ্ক চলার সময় পুলিশ টহলদারি ছিল না। তা থাকলে শহরের মাঝখানে ডাকাতির ঘটনা ঘটলেও দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যেতে পারত না।” কিন্তু কেন নিরাপত্তারক্ষী ছিল না? সেই প্রশ্নের উত্তর অবশ্য মেলেনি। তবে এডিসিপি (সেন্ট্রাল) সায়ক দাস জানান, তদন্ত শুরু হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy