Advertisement
E-Paper

ঘুমের মধ্যেই অ্যাসিড হানা

কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় এক বধূর উপরে অ্যাসিড হামলার অভিযোগ উঠেছে তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয়-সহ চার জনের বিরুদ্ধে। কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ঘটনা। অ্যাসিড হামলার সময় ওই বধূ ঘুমিয়ে ছিলেন।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ০৭ অগস্ট ২০১৬ ০০:৩৩

কুপ্রস্তাবে সাড়া না দেওয়ায় এক বধূর উপরে অ্যাসিড হামলার অভিযোগ উঠেছে তাঁর দূর সম্পর্কের আত্মীয়-সহ চার জনের বিরুদ্ধে। কালনা ১ ব্লকের বাঘনাপাড়া পঞ্চায়েতের নিশ্চিন্তপুর গ্রামের ঘটনা। অ্যাসিড হামলার সময় ওই বধূ ঘুমিয়ে ছিলেন। তাঁর মুখ এবং চোখের নীচের অংশ পুড়েছে। বধূর পাশে ঘুমিয়ে থাকা শাশুড়ির শরীরেরও অ্যাসিড লাগায় তৈরি হয়েছে ক্ষত।

বছর চৌত্রিশের ওই বধূ শনিবার কালনা থানায় এই হামলার পিছনে এলাকার চার জন জড়িত রয়েছেন বলে দাবি করে লিখিত অভিযোগ করেছেন। অভিযুক্তদের মধ্যে এক জন আবার এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যার স্বামী। লিখিত অভিযোগে বধূ জানিয়েছেন, তাঁরা গরিব পরিবারের। মাঠে খেতমজুরের কাজ করতে স্বামীকে প্রায়ই বাইরে যেতে হয়। স্বামীর অনুপস্থিতিতে দুই ছেলে এবং বৃদ্ধা শাশুড়িকে নিয়ে তিনি বাড়িতে থাকেন। ওই বধূর অভিযোগ, এর সুযোগ নিয়ে সুব্রত বারিক নামে এক দূর সম্পর্কের আত্মীয় তাঁকে কুপ্রস্তাব দেয়। বছর চারেক ধরে সে এ কাজ করে আসছে। এমনকী কয়েক বার রাস্তায় পথ আটকে টাকার বিনিময়েও কুপ্রস্তাব দিয়েছিল সুব্রত। সম্পর্কে দেওর ওই যুবকের কুপ্রস্তাবের কথা স্বামীকে জানালে তিনি তাঁকে বাড়ির বাইরে বেরোতে বারণ করেন। কিন্তু, ঘরের নানা প্রয়োজনে তাঁকে বাইরে বেরোতেই হত। বধূর আরও দাবি, সনৎ পাল, সুনীল ঘোষ এবং বাসুদেব নাথ নামে গ্রামের আরও তিন জন তাঁকে সমানে উত্ত্যক্ত করে।

বৃহস্পতিবার ওই বধূর স্বামী মাঠের কাজ করতে গিয়েছিলেন হাটগোবিন্দপুর এলাকায়। রাতে তাঁদের দুই ছেলে বাড়ির কাঠের তক্তায় ঘুমোচ্ছিল। শাশুড়িকে নিয়ে বধূ শুয়েছিলেন মেঝেয়। তাঁর কথায়, ‘‘আচমকা চোখ মুখে জালা পোড়া শুরু হওয়ায় ঘুম ভেঙে যায়। চোখ খুলে দেখি, ঘর ধোঁয়ায় ভরে গেছে। গোটা মুখ জ্বলছে।’’ তাঁর দাবি, জানলা দিয়ে অ্যাসিড ছোড়া হয়েছিল অ্যাসিড। আহত অবস্থাতেও তিনি দ্রুত দরজা খুলে দেখেন, সুব্রত-সহ ওই চার জন পালিয়ে যাচ্ছে বাড়ির সামনে থেকে। শনিবার বধূটি বলেন, ‘‘অ্যাসিড হামলার জেরে ভাল করে কথা বলতে পারছি না। মুখ চোখ ঝলসে গেছে। শাশুড়িরও তলপেট-সহ শরীরের নানা জায়গায় ক্ষত হয়েছে।’’ যারা হামলা চালিয়েছে, তাদের কঠোর শাস্তি চান ওই বধূ। প্রথমে এলাকার এক চিকিৎসককে দেখিয়েছিলেন ওই বধূ ও তাঁর শাশুড়ি। শুক্রবার দু’জনেই কালনা হাসপাতালে ভর্তি হন। তবে, বাড়িতে সন্তানদের দেখার কেউ নেই, এ কথা জানিয়ে হাসপাতাল থেকে তাঁর ছুটি নিয়েছেন।

এলাকার তৃণমূল নেতা তথা লাগোয়া সুলতানপুরের পঞ্চায়েত প্রধান সুকুর শেখের বক্তব্য, ‘‘ওঁরা আমার কাছে এসেছিলেন। এই কাজ যারা করেছে, আমরাও তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাইছি। পুলিশকে রাজনৈতিক রং না দেখে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে।’’ দোষীদের শাস্তির দাবি করেছেন বাঘনাপাড়ার তৃণমূল পঞ্চায়েত প্রধান জয়দেব পাত্র। এসডিপিও (কালনা) ওয়াই রঘুবংশী বলেন, ‘‘মামলা দায়ের করে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে। অভিযুক্তদের ধরার চেষ্টা চলছে।’’ অভিযুক্তদের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি। কারও মোবাইল বন্ধ। কারও ফোন বেজে গিয়েছে।

Miscreants acid
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy