আততায়ী এই চেন গলায় পেঁচিয়ে ধরে বলে অভিযোগ। নিজস্ব চিত্র
আবারও চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টার অভিযোগ কালনায়। বাড়িতে একা থাকা তরুণীর উপরে চড়াও হল দুষ্কৃতী। রবিবার বিকেলে হাটকালনা পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙা গ্রামে তাঁর চিৎকারে ছুটে যান প্রতিবেশীরা। তখন চেন ফেলে রেখেই আততায়ী পালিয়ে যায় বলে জানান স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই তরুণীকে কালনা মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। গত তিন মাসে এ নিয়ে তৃতীয় বার কালনায় এই রকম চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টার ঘটনা ঘটল বলে পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে। একটি ক্ষেত্রে নিহত হন এক মহিলা।
কালনা শহর থেকে কিছুটা দূরেই ধর্মডাঙা এলাকা। সেখানে রেলগেট থেকে প্রায় আধ কিলোমিটার দূরে এ দিন বিকেলে মাস দুয়েকের শিশুকে নিয়ে বাড়িতে ছিলেন বছর উনিশের বধূ ইতি হাওলাদার। আশপাশের বাসিন্দারা জানান, বিকেল ৪টে নাগাদ ওই বধূর চিৎকার শুনতে পান তাঁরা। কয়েকজন সেখানে ছুটে গিয়ে মাথায় হেলমেট পরা এক ব্যক্তিকে পালিয়ে যেতে দেখেন। প্রতিবেশীদের কাছে ইতিদেবী অভিযোগ করেন, তাঁর গলায় চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা করে ওই ব্যক্তি। তাঁর ঠোঁট ও কান কেটে যায়।
ইতিদেবী জানান, তাঁর স্বামী সমীর হাওলাদার ও শ্বশুর গণেশ হাওলাদার মাঠের কাজে বাড়ির বাইরে গিয়েছিলেন। বিকেল সাড়ে ৩টে নাগাদ তিনি যখন বারন্দায় খেতে বসেছিলেন, সেই সময়ে এক জন এসে জানায়, বিদ্যুতের মিটার দেখা হবে। বাড়ির লোকজন কোথায়, তা জিজ্ঞাসা করে। বাড়িতে কেউ নেই শুনে তখন চলে যায়। কিন্তু আধ ঘণ্টা পরে ফিরে এসে সে মিটার দেখতে চায়।
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
ইতিদেবীর অভিযোগ, ‘‘বাইরের মিটার বাক্স দেখার ফাঁকে ওই ব্যক্তি ঘরে কতগুলি আলো জ্বলে তা দেখতে চায়। তাকে ঘরে নিয়ে যেতেই পিছন থেকে গলায় চেন পেঁচিয়ে ধরে। অবশ হয়ে যাওয়ার ভান করতেই সে চেনের কিছুটা রাশ আলগা করে। এর পরেই প্রান বাঁচাতে চিৎকার শুরু করি। তখন ওই ব্যক্তি পালিয়ে যায়।’’ এ দিন বিকেলে ওই বাড়ির সামনেই কাজ করছিলেন নির্মান শ্রমিক কার্তিক বাগ। তিনি দাবি করেন, ‘‘আমি মাঝবয়সী ওই লোকটিকে দেখেছি। গালে দাড়ি রয়েছে। মোটরবাইক নিয়ে পাকা রাস্তা ধরে পালিয়ে যায়।’’
কালনা মহকুমায় চেন পেঁচিয়ে খুনের চেষ্টা শুরু হয় ২০১৫ সালে। সে বছর মহকুমার তিন জায়গায় তিন জন মহিলা আক্রান্ত হন। দু’জনের মৃত্যু হয়। আনুখালের কদম্বা গ্রামে এক মহিলার প্রতিরোধের মুখে পড়ে পালায় আততায়ী। সব ক্ষেত্রেই চেন ফেলে রেখে যায় দুষ্কৃতী। তার পরে বেশ কিছু দিন বন্ধ থাকলেও এ বছর ২৭ জানুয়ারি ফের এমন হামলা হয়। সে দিন আনুখালে বছর আটচল্লিশের এক মহিলা ও তার পরে ১ ফেব্রুয়ারি সুলতানপুরের উপলতি গ্রামে এক বৃদ্ধা আক্রান্ত হন। আনুখালে মৃত্যু হয় মহিলার। উপলতিতে বৃদ্ধার ছেলে সেই সময়ে বাড়ি ফিরে আসায় পালিয়ে যায় আততায়ী।
এ দিন ঘটনার খবর পেয়েই ধর্মডাঙায় পৌঁছন কালনার এসডিপিও শান্তনু চৌধুরী, কালনা থানার ওসি রাকেশ সিংহ। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি মেমারি থানা এলাকাতেও একই কায়দায় দু’টি খুনের চেষ্টা হয়। দুষ্কৃতীর হাত থেকে বেঁচে যাওয়া মহিলাদের বয়ান শুনে আততায়ীর ছবি আঁকানো হয়েছে। কালনার এক পুলিশকর্তা বলেন, ‘‘আততায়ীকে ধরার সব রকম চেষ্টা চলছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy