Advertisement
E-Paper

ফলাফল কেমন হল, চিন্তায় ‘মোবাইলহীন’ ছাত্রছাত্রীরা

ধবনি গ্রামের বাসিন্দা বিপিন বাউড়ি, আকাশ বাউড়ি, শেখ মহিদ্দুল্লা, রিম্পা শেখরা দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক দিয়েছিল। তারা বলে, ‘‘আমাদের কারও বাবা দিনমজুর, কেউ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অনেকে কিছুই করেন না।

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৬ জুলাই ২০২০ ০৫:৪৯
প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

ওয়েবসাইটে, এসএমএস-এর মাধ্যমে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশিত হয়েছে বুধবার। কিন্তু স্কুলের কাছে কোনও তথ্য নেই। পাশাপাশি, জেলার নানা প্রান্তের পড়ুয়ারা জানিয়েছে, স্মার্টফোন তো দূরঅস্ত্, মোবাইলই নেই বাড়িতে। বহু গ্রামেই নেই সাইবার ক্যাফেও। এই পরিস্থিতিতে ফলাফল জানতে অনেক পড়ুয়াই সমস্যায় পড়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে জেলায়।

ধবনি গ্রামের বাসিন্দা বিপিন বাউড়ি, আকাশ বাউড়ি, শেখ মহিদ্দুল্লা, রিম্পা শেখরা দুর্গাপুরের বিজড়া হাইস্কুল থেকে এ বার মাধ্যমিক দিয়েছিল। তারা বলে, ‘‘আমাদের কারও বাবা দিনমজুর, কেউ বা রাজমিস্ত্রির কাজ করেন। অনেকে কিছুই করেন না। অনেকের কাছেই স্মার্টফোন, মোবাইল নেই। ক্যাফেতে গিয়ে ফলাফল জানার টাকা নেই। ফল কেমন হল, তা নিয়ে খুব চিন্তায় ছিলাম।’’ তবে বেশ কয়েক ঘণ্টা পরে দুপুরের দিকে বন্ধুদের পাশে দাঁড়ায় সহপাঠী শেখ তামিম, শেখ বাদশা, শেখ দানিশ ও শেখ ফিরোজেরা। তারা বলে, ‘‘নিজেদের ফল জেনেই মনে হয়, বন্ধুরা রেজাল্ট জানতে পারেনি নিশ্চয়। তাই সাইকেল নিয়ে বন্ধুদের বাড়ি গিয়ে ফল জানিয়েছি।’’ সমস্যার কথা জানিয়েছেন শিক্ষকেরাও। জেমুয়া ভাদুবালা বিদ্যাপীঠের প্রধান শিক্ষক জইনুল হক জানান, তাঁর স্কুলের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীদের মধ্যে ২৭ জনের বাড়িতে মোবাইল ফোন নেই। তাদের কথা ভেবে স্কুলে গিয়ে ইন্টারনেটে ফল দেখে তার ‘প্রিন্ট আউট’ পড়ুয়াদের দেওয়া হয় বলে জানান তিনি। ততক্ষণে স্কুলে এসেছিল ওই পড়ুয়ারাও। ভুরকুণ্ডা এনসি ইনস্টিটিউশনের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ আলির আক্ষেপ, ‘‘আমাদের স্কুলের পড়ুয়ারা বেশির ভাগই প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে আসে। মাধ্যমিকের ফল জানতে খুবই সমস্যায় পড়েছে তারা।’’ স্কুল সূত্রে জানা গেল, তাদের অন্তত ২০ শতাংশ পরীক্ষার্থীর বাড়িতে মোবাইল নেই। ফলে, বিকেল পর্যন্ত তারা ফল জানতে পারেনি। শেষমেশ, শিক্ষক ও আত্মীয়দের চেষ্টায় কেউ-কেউ জানতে পেরেছেন মাধ্যমিকের প্রাপ্ত নম্বর!

এই পরিস্থিতির সমালোচনা করেছেন জেলার প্রবীণ শিক্ষকেরাও। দুর্গাপুরের রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত প্রবীণ শিক্ষক সুশীল ভট্টাচার্য জানান, ফলাফল প্রকাশের বিষয়ে পর্ষদকে আরও ‘কৌশলী’ পথ নিতে হত। ২২ জুলাই ‘মার্কশিট’ পাওয়া যাবে। সে দিনই ফল প্রকাশ করা যেত বলে মনে করছে শিক্ষক সমাজের একাংশ। সুশীলবাবুর ক্ষোভ, ‘‘এই পরিস্থিতিটা কার্যত শহর আর গ্রামের বিভাজন করে দিল। এক শ্রেণির পড়ুয়া মাধ্যমিকের ফল জানতে পারল না!’’ জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) অজয় পাল অবশ্য বলেন, ‘‘রেজাল্ট দেখতে পায়নি কেউ, এমন বিষয়ে আমাদের কাছে কোনও তথ্য নেই। বহু শিক্ষক পড়ুয়াদের ফল জানতে সাহায্য করেছেন।’’

উচ্চমাধ্যমিকের ফলাফল সম্পর্কিত যাবতীয় আপডেট পেতে রেজিস্টার করুন এখানে |

Education
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy