সামনে হরেক রকমের খাবার সাজানো। চারপাশে উৎসাহী মানুষের ভিড়। যদিও সে দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই তাঁর। এক হাতে স্মার্ট ফোন, অন্য হাতে খাবার নিয়ে আপন মনে খেয়ে চলেছেন তিনি! ফোনটি ফেরত দেওয়ার জন্য এক টানা কাকুতিমিনতি করে চলেছেন ফোনের মালিক। কিন্তু চিঁড়ে ভিজছে না! শনিবার এমনই ঘটনা ঘটল পূর্ব বর্ধমানের গুসকরায়।
আরও পড়ুন:
গুসকরার বাসস্ট্যান্ডের একটি হোটেলে কাজ করেন পূর্ব বর্ধমানের মঙ্গলকোটের পালিগ্রামের বাসিন্দা সোনালি চক্রবর্তী। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার হোটেলে কাজ করার সময় তাঁর মোবাইলটি পাশেই রাখা ছিল। আচমকা একটি হনুমান হোটেলে ঢুকে সোনালির মোবাইলটি ছোঁ মেরে তুলে নিয়ে চলে যায়। কিছু ক্ষণ পর বিষয়টি বুঝতে পারেন সোনালি। এর পরেই শুরু হয় মোবাইলটি ফিরে পেতে কাকুতিমিনতি। তাতেও কাজ না হলে বিস্কুট, চপ, ফুলুরি, কেক, কলা ইত্যাদি নানা রকমের খাবার নিয়ে হনুমানটিকে ভোলানোর চেষ্টা করেন সোনালি-সহ বাজারের অন্য ব্যবসায়ীরা। সকলে মিলে বহু সাধ্যসাধনা করলেও হনুমানের সে দিকে ভ্রুক্ষেপ নেই! বাঁ হাতে সযত্নে মোবাইলটি ধরে ডান হাত দিয়ে খাবার খেতে থাকে সে।
আরও পড়ুন:
তবে ঘণ্টাখানেক এ ভাবে চলার পর শেষে ক্লান্ত হয়ে মোবাইলটি বাড়ির চালে রেখে দিয়ে চলে যায় হনুমানটি। তবে সোনালির মোবাইল ফেরত পেতে দীর্ঘ ক্ষণ ধরে অনেক কসরত করতে হয়েছে গুসকরা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন ব্যবসায়ীদের। সোনালির কথায়, ‘‘রোজকার মতো হনুমানটা আজও হোটেলের সামনে এসেছিল। খাবার, জল খেয়ে বেরোনোর সময় আমার মোবাইল নিয়ে চলে যায় ও। সঙ্গে সঙ্গে আমি বেরিয়ে এসে বাকিদের সবটা বলি। সকলে মিলে মোবাইল ফেরত দেওয়ার জন্য হনুমানের কাছে গিয়ে কাকুতিমিনতি করতে শুরু করে! আমি গরিব মানুষ। মোবাইল না-পেলে আমার ক্ষতি হয়ে যেত।’’ স্থানীয় ব্যবসায়ী পাঞ্জাব শেখ বলেন, ‘‘আমরা সবাই মিলে অনেক খাবার দিলেও মোবাইলটি হাত ছাড়া করতে চাইছিল না হনুমানটি। শেষে অনেক কষ্টে মোবাইল ফেরত পাওয়া গিয়েছে।’’ তাই ঘণ্টাখানেকের যুদ্ধ শেষে মুখে হাসি ফুটেছে সকলেরই।