Advertisement
E-Paper

ছেলে খুনই হয়েছে স্কুলে, দাবি মায়ের

অন্য দিনের মতোই সাইকেল নিয়ে সকালে স্কুলে গিয়েছিল ছেলে। দুপুরে স্কুল থেকে আসে দুঃসংবাদ।

সুচন্দ্রা দে

শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:৩৫
কলিম শেখের মা। নিজস্ব চিত্র

কলিম শেখের মা। নিজস্ব চিত্র

অন্য দিনের মতোই সাইকেল নিয়ে সকালে স্কুলে গিয়েছিল ছেলে। দুপুরে স্কুল থেকে আসে দুঃসংবাদ। তখন বাড়িতে রান্না করছিলেন মোসলেমা বিবি। গুলিতে মৃত্যু হয়েছে ছেলের, এ কথা শুনেই পড়িমরি দৌড়ন তিনি। স্কুলে পৌঁছে কান্নায় ভেঙে পড়েন কেতুগ্রামের দধিয়া গোপালদাস হাইস্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্র কলিম শেখের (১৫) মা মোসলেমা। তাঁর অভিযোগ, বন্ধুরাই খুন করেছে ছেলেকে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৫৫ মিনিট নাগাদ স্কুলের শৌচাগারে মাথায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় কলিমের দেহ মেলে। সেই সময়ে স্কুলের প্রার্থনা শেষ হয়েছে। কলিম এ দিন প্রার্থনায় যোগ দেয়নি বলে সহপাঠীরা জানায়। প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ ঘোষ বলেন, ‘‘হঠাৎ আওয়াজ শুনে নীচে গিয়ে দেখি, শৌচাগারের দরজার নীচ দিয়ে রক্ত গড়াচ্ছে। দরজা ঠেলতেই দেখা যায়, স্কুলের পোশাক পরা একটি ছেলে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে। পাশে পড়ে রয়েছে একটি পিস্তল।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, কলিমের মাথার ডান দিকে গুলি লেগেছে। ঘটনাস্থল থেকে ৭ এমএম পিস্তল ও গুলির খোল উদ্ধার করে পুলিশ। দেহ পাঠানো হয় ময়না-তদন্তে। শৌচগার লাগোয়া জায়গাটি দড়ি দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ। স্কুলে পঠনপাঠন বন্ধ হয়ে যায় এ দিনের মতো।

প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের ধারণা, ছাত্রটি আত্মঘাতী হয়েছে। ঘটনাস্থল ঘুরে দেখে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রাজনারায়ণ মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফরেন্সিক পরীক্ষা, আঙুলের ছাপ পরীক্ষা— সবই করানো হবে। খুন কি না তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ ঘটনার পিছনে প্রণয়-সংক্রান্ত কারণ রয়েছে বলে পুলিশের প্রাথমিক অনুমান। কাঁচড়ার একটি মেয়ের সঙ্গে কলিমের সম্পর্ক তৈরি হয়েছিল বলে জেনেছে পুলিশ। পিস্তলটি কোথা থেকে পেয়েছিল ছাত্রটি, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় পুলিশ।

মোসলেমা যদিও মানতে নারাজ, ছেলে আত্মঘাতী হয়েছে। তাঁর স্বামী সেলিম শেখ চেন্নাইয়ে ইলেকট্রিক মিস্ত্রির কাজ করেন। রতনপুরে আস্তানাপাড়ের বাড়িতে বসে মোসলেমা বলেন, ‘‘স্কুল যাওয়ার আগে ছেলেকে টিফিনের জন্য ৫ টাকা দিতাম। সে জন্যও ধারদেনা করতে হত। আমাদের দু’বেলা পেট ভরে খাবার জোটে না, ও পিস্তল কোথায় পাবে?’’ তিনি দাবি করেন, ‘‘রতনপুর ও কাঁচড়ার কয়েকটি ছেলের সঙ্গে মেলামেশা করত আমার ছেলে। ওদের সঙ্গেই স্কুলে যেত, আড্ডা দিত। ওরা নিশ্চয় এ ব্যাপারে কিছু জানবে।’’ পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বিকেলে মোসলেমার বাড়ি গিয়ে তাঁর সঙ্গে কথা বলে কিছু তথ্য জোগাড় করা হয়েছে।

ঘটনার পরে এ দিন স্কুলেই পড়েছিল কলিমের নীল রঙের সাইকেলটি। তার পিসতুতো বোন, ওই স্কুলেরই সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী সানিয়া খাতুন কলিমের ব্যাগটি বাড়ি নিয়ে যায়। সানিয়া দাবি করে, ‘‘দাদার কয়েকজন বন্ধু ভাল ছিল না।’’ স্কুল কর্তৃপক্ষ পুলিশের কাছে অস্বাভাবিক মৃত্যুর অভিযোগ করেছেন।

Mother Accusation Murder
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy