চিনাকুড়ির যুবক খুনের ঘটনায় এক মহিলা-সহ দু’জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। নিহত সঞ্জিত পাসোয়ান গত বছর এলাকায় রাজকাপুর সিংহ নামে এক ব্যক্তিকে খুনের মামলায় মূল অভিযুক্ত ছিলেন। সঞ্জিতকে খুনে সেই রাজকাপুরের স্ত্রী বাসন্তী দেবীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। অপর ধৃত মুকেশ মণ্ডল তাঁদের পরিবারের ঘনিষ্ঠ বলে দাবি পুলিশের। বুধবার ধৃতদের আসানসোল আদালতে তোলা হলে আট দিন পুলিশি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়। পুলিশ জানায়, খুনে ব্যবহৃত রিভলবার ও অন্য অস্ত্রের খোঁজ চলছে। আরও চার জনের খোঁজ চলছে। তারা পলাতক।
মঙ্গলবার চিনাকুড়ির মহাবীর ধাওড়ার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয় বাসন্তীদেবীকে। পুলিশ জানায়, তাঁকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ধরা হয় প্রতিবেশী মুকেশকে। তদন্তকারীদের দাবি, খুনের ঘটনার মূল ষড়যন্ত্রকারী বাসন্তী ও তাঁর দেওর রাজকুমার সিংহ। তাঁদের সাহায্য করেছিল মুকেশ, মিথিলেশ রাম-সহ চার জন। বাসন্তী ও মুকেশ গ্রেফতার হলেও বাকিরা পালিয়েছে। টানা জেরায় ধৃতেরা অপরাধ স্বীকার করেছে বলেও দাবি পুলিশের।
প্রাথমিক তদন্তের শেষে পুলিশ মনে করছে, স্বামীর খুনের বদলা নিতেই দেওরকে সঙ্গে নিয়ে সঞ্জিতকে খুনের পরিকল্পনা করেন বাসন্তী। গত বছর ১৩ মে মহাবীর ধাওড়ার কাছেই তাঁর স্বামী রাজকাপুরকে প্রথমে ভোজালির কোপ, তার পরে গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয়। সঞ্জিতকেও অনেকটা একই রকম ভাবে খুন করা হয়েছে। প্রথমে গুলি, তার পরে হাত-পা কেটে, চোখ ক্ষতবিক্ষত করা হয়।
এডিসিপি (পশ্চিম) অনমিত্র দাস বলেন, ‘‘ওই দুই পরিবারের মধ্যে বিবাদ রয়েছে। সেই আক্রোশ থেকেই এই খুনের ঘটনা বলে মনে করা হচ্ছে।’’ তিনি জানান, তদন্তে জানা গিয়েছে, সোমবার খুনের পরে সঞ্জয়কে মোটরবাইকে তুলেই চিনাকুড়ি বাজার হয়ে বিনোধবাঁধের জঙ্গলে নিয়ে যাওয়া হয়। সঞ্জয়ের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করে কললিস্ট যাচাই করা হচ্ছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদেরও দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে আশ্বাস এডিসিপি-র।
বুধবার সকালে এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, খুনের ৪৮ ঘণ্টা পরেও আতঙ্কের রেশ রয়েছে। রাস্তাঘাট সুনসান। পরপর খুনের ঘটনায় তাঁরা ভয়ে রয়েছেন বলে জানান বাসিন্দাদের একাংশ। নামপ্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজনের দাবি, উপযুক্ত ব্যবস্থা না নেওয়া হলে এলাকায় অশান্তি থামবে না। এলাকায় পুলিশি টহল চলছে।