বর্ষশেষে শেয়ার বাজারে লগ্নিকারীদের জন্য সুখবর। এ বার ‘ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং’ বা আইপিও আনতে চলেছে জ়েপ্টো। এর মাধ্যমে বাজার থেকে ১১ হাজার কোটি টাকা তোলার পরিকল্পনা রয়েছে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সংস্থার। কেমন হবে জ়েপ্টোর আইপিও-র দাম? প্রতি লটে থাকব কতগুলি স্টক? বছরের শেষে এই ইস্যুতে দেশের তাবড় ব্রোকারেজ ফার্মগুলির মধ্যে তুঙ্গে উঠেছে জল্পনা।
চলতি বছরের ২৮ ডিসেম্বর, রবিবার জ়েপ্টো আইপিও সংক্রান্ত খবর প্রকাশ করে সংবাদসংস্থা পিটিআই। তাদের দাবি, এর জন্য নিয়ম মেনে বাজার নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা ‘সিকিউরিটিজ় অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া’ বা সেবির কাছে খসড়া নথি জমা করেছে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সংস্থা। স্টকের দুনিয়ায় এর পোশাকি নাম ‘ড্রাফট রেড হেরিং প্রসপেক্টাস’ বা ডিআরএইচপি। এই নথির উপর সেবি সবুজ সঙ্কেত দিলেই আইপিও মূল্য থেকে শুরু করে আবেদনের সময়সীমা, লটের আকার ঘোষণা করতে পারবে জ়েপ্টো। একই সঙ্গে জানা যাবে তালিকাভুক্তির তারিখও।
আরও পড়ুন:
ভারতীয় স্টার্টআপগুলির মধ্যে বয়সের দিক থেকে জ়েপ্টোকে বেশ নবীন বলা যেতে পারে। দ্রুত গ্রাহকের হাতে পণ্য পৌঁছে দেওয়ার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সংস্থাটির সুনাম রয়েছে। সূত্রের খবর, নতুন বছরের গোড়ার দিকেই শেয়ারের দুনিয়ায় পা রাখার ইচ্ছা রয়েছে তাদের। এই আইপিওতে জ়েপ্টোর মূল বোর্ডের হাতে থাকা স্টকের জন্যেও আবেদন করা যাবে বলে খবর পাওয়া গিয়েছে। পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে শেয়ার বাজারে আত্মপ্রকাশকারী সবচেয়ে কমবয়সি স্টার্টআপগুলির মধ্যে জায়গা পাবে এই ই-কমার্স সংস্থা।
তালিকাভুক্তির পর ফুড ডেলিভারি সংস্থা জ়োম্যাটো এবং সুইগির সঙ্গে একই শ্রেণিতে জায়গা পাবে জ়েপ্টো। এই দুই ফুড ডেলিভারি সংস্থারও ই-কমার্স ব্যবসা রয়েছে। সেই প্ল্যাটফর্মগুলির নাম যথাক্রমে ব্লিঙ্কইট এবং ইনস্টামার্ট। খুচরো বাজারে এরাই জ়েপ্টোর মূল প্রতিদ্বন্দ্বী। ২০২১ সালে শেয়ারের দুনিয়ায় পথচলা শুরু করে জ়োম্যাটো। আর সুইগির তালিকাভুক্তি হয় ২০২৪ সালের নভেম্বরে।
বর্তমানে জ়েপ্টোর বাজারমূল্য প্রায় ৭০০ কোটি ডলার। জন্মের পর থেকে এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সংস্থাটি লগ্নিকারীদের থেকে মোট ১৮০ কোটি ডলার সংগ্রহ করেছে, ভারতীয় মুদ্রায় যেটা প্রায় ১৬ হাজার কোটি টাকা। এ বছরের অক্টোবরে শেষ বার তহবিল সংগ্রহ করে জ়েপ্টো। ওই সময়ে এতে ৪৫ কোটি ডলার বিনিয়োগ করে মার্কিন আর্থিক সংস্থা ক্যালপিয়ার্স। ভারতীয় মুদ্রায় লগ্নির অঙ্কটা প্রায় ৩,৭৫৭ কোটি টাকা।
স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী আদিত পালিচা এবং কৈবল্য ভোহরার হাত ধরে ভোক্তা বাজারে পথচলা শুরু করে জ়েপ্টো। মাত্র ১০ মিনিটে মুদিখানার সামগ্রী গ্রাহকের কাছে পৌঁছে দেওয়ার মডেলকে সামনে রেখে ব্যবসা চালাতে থাকেন তাঁরা। কিছু দিনের মধ্যেই এ দেশের শহরগুলিতে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে সংশ্লিষ্ট ই-কমার্স সংস্থা। এ বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাদের হাতে ৯০০টির বেশি গুদাম আছে বলে জানা গিয়েছে।
আরও পড়ুন:
২০২৩ সালের অগস্টে লগ্নিকারীদের থেকে ২০ কোটি ডলার সংগ্রহের পর জ়েপ্টো স্টার্টআপের গায়ে পড়ে ইউনিকর্নের ট্যাগ। ওই সময় এর বাজারমূল্য ছিল ১৪০ কোটি ডলার, যা এ দেশের ভোক্তা বাজারের দ্রুততম ই-কমার্স সংস্থাগুলির মধ্যে অন্যতম। এখনও পর্যন্ত ৩০০ কোটি ডলার মূল্যের সামগ্রী বিক্রি করেছে জ়েপ্টো, ভারতীয় মুদ্রায় যেটা প্রায় ২৬ হাজার কোটি টাকা।