E-Paper

আসেননি বাড়ির পুজোয়, মন্ত্রীর ধরা পড়ায় অবাক গ্রাম

বাসস্থান, রাজনৈতিক ক্ষেত্র আলাদা হলেও গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে ওই পরিবার। মন্ত্রীর দাদা, পেশায় চিকিৎসক দেবপ্রিয় মল্লিক প্রতি মাসেই বিনা পয়সায় রোগী দেখেন গ্রামে।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য

শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২৩ ০৯:৪১
তালাবন্ধ মন্ত্রীর বাড়ি। মন্তেশ্বরের পূর্ব খাঁপুর গ্রামে।

তালাবন্ধ মন্ত্রীর বাড়ি। মন্তেশ্বরের পূর্ব খাঁপুর গ্রামে। ছবি: সুদিন মণ্ডল

কংক্রিটের রাস্তার পাশে ঝাঁ চকচকে দোতলা বাড়ি। তালা বন্ধ বাড়ির দেওয়ালের ফলকে লেখা, ‘নবশক্তি ভবন’। বাড়ির নামের নীচে জ্বলজ্বল করছে প্রয়াত পিতা শক্তিপদ মল্লিক ও মাতা নবনলিনী মল্লিকের নাম। মন্তেশ্বরের বামুনপাড়া পঞ্চায়েতের পূর্ব খাঁপুর গ্রামের এই বাড়ির মালিক প্রাক্তন খাদ্যমন্ত্রী তথা বর্তমান বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।

গ্রামবাসীরা জানান, বছর আটেক আগে পৈতৃক ভিটার পাশে তিনি এই ভবনটি তৈরি করান। বছরে দু’এক বার আসাযাওয়া করতেন। পারিবারিক দুর্গাপুজোয় নবমীর দিন কয়েক ঘণ্টার জন্য হলেও আসতেন তিনি। যদিও এ বার আসেননি তিনি। পুজো মিটতেই ইডির হাতে তাঁর গ্রেফতারে অবাক হয়েছেন অনেকেই।

এই গ্রামে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের পরিবারের নামে প্রায় ৪০ বিঘা জমিজমা ছিল। এখন পনেরো বিঘা মতো রয়েছে। গ্রামে পাকাপাকি বাস না করলেও আইটিআই কলেজ, জনস্বাস্থ্য কারিগরি প্রকল্প, বিদ্যুৎ দফতরের সাবস্টেশন, খেলার মাঠ, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, বাসস্ট্যান্ড তৈরিতে জমিদান করেছেন এই পরিবারের সদস্যেরা। এছাড়াও গ্রামের পাকা রাস্তা, উচ্চবিদ্যালয়কে দ্বাদশ শ্রেণিতে উন্নীত করা, স্কুলের পাঁচিল দেওয়ার মতো কাজেও নানা সময়ে এগিয়ে এসেছেন তাঁরা।

বাসস্থান, রাজনৈতিক ক্ষেত্র আলাদা হলেও গ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলে ওই পরিবার। মন্ত্রীর দাদা, পেশায় চিকিৎসক দেবপ্রিয় মল্লিক প্রতি মাসেই বিনা পয়সায় রোগী দেখেন গ্রামে। প্রয়োজনে কলকাতার হাসপাতালে ভর্তির ব্যবস্থাও করে দেন। তাঁদের বাবা শক্তিপদবাবু স্বাধীনতা সংগ্রামী ছিলেন। পরে ব্যবসার প্রয়োজনে কলকাতায় থাকতে শুরু করেন বলে জানা গিয়েছে। গ্রামবাসী ধুলু ঘোষ, সুচাঁদ দাস, তমাল ঘোষ, গোপাল দাসেরা বলেন, ‘‘বালুদা গ্রেফতার হয়েছে শুনে অবাকই হয়েছিল। গ্রামের অনেক কিছুতে ওঁদের অবদান আছে।’’ পতিতপাবন চৌধুরী নামে এক বাসিন্দার দাবি, ‘‘এখনও কিছু প্রমাণ হয়নি। বিজেপি প্রতিহিংসার জেরে এ সব করতে পারে।’’ তবে মন্ত্রী কলকাতায় কী করেন, সেই খবর গ্রামে পৌঁছয় না বলেও জানান তাঁরা।

জেলা তৃণমূল সভাপতি রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘নিজের গ্রামের উন্নয়নে জ্যোতিপ্রিয় অনেক কাজ করেছেন। ওই পরিবারের সুনাম রয়েছে গ্রামে। লোকসভা নির্বাচনের আগে অন্যায় ভাবে মন্ত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’ যদিও বিজেপির কাটোয়া সাংগঠনিক জেলার সভাপতি গোপাল চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ‘‘দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বলেই মন্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে ইডি।’’

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Manteshwar

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy