Advertisement
১১ মে ২০২৪

সালানপুরে জলের সমস্যা মেটাতে ইসিএলের পরিত্যক্ত খনিতে প্রকল্প

জলভর্তি পরিত্যক্ত খোলামুখ খনির জল শোধন করে এলাকায় সরবরাহের আরও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। সালানপুরে ওই খনিটির জল ব্যবহার করার নো-অবজেকশান শংসাপত্রও ইসিএলের কাছ থেকে পেয়ে গিয়েছে মহকুমা প্রশাসন।

পরিত্যক্ত খনির জলাধার। —নিজস্ব চিত্র।

পরিত্যক্ত খনির জলাধার। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ১০ অগস্ট ২০১৫ ০২:০৭
Share: Save:

জলভর্তি পরিত্যক্ত খোলামুখ খনির জল শোধন করে এলাকায় সরবরাহের আরও একটি প্রকল্প হাতে নিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর। সালানপুরে ওই খনিটির জল ব্যবহার করার নো-অবজেকশান শংসাপত্রও ইসিএলের কাছ থেকে পেয়ে গিয়েছে মহকুমা প্রশাসন। প্রকল্পটি রূপায়ণের জন্য প্রায় আট কোটি টাকা মঞ্জুর করেছে রাজ্য সরকার। চলতি অর্থবর্ষেই কাজ শুরু হবে বলে প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে।

আসানসোল মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, প্রকল্পটি হবে সালানপুরের পরিত্যক্ত ডালমিয়া খনিতে। গত জানুয়ারিতে আসানসোলে একটি সরকারি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার শিলান্যাসও করেছেন। জনস্বাস্থ্য করাগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রকল্পটি হলে প্রায় ১৫ হাজার বাসিন্দা উপকৃত হবেন। আসানসোলের মহকুমাশাসক অমিতাভ দাস বলেন, ‘‘সালানপুরের বিস্তীর্ণ অঞ্চল ছাড়াও পার্শ্ববর্তী ধুন্ডাবাদ, বনবিড্ডি, ক্ষুদিকা, সবনপুর গ্রামের বাসিন্দারাও এই জল পাবেন।’’

জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, সাবমার্সিবল পাম্প বসিয়ে খনির জল তুলে প্রথমে তা নিয়মমাফিক ক্লোরিনের মাধ্যমে শোধন করে একটি উচ্চ জলাধারে সঞ্চয় করা হবে। এর পরে পাইপলাইনের মাধ্যমে এলাকায় তা সরবরাহ করা হবে। এর জন্য বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রায় ১৯ কিলোমিটার পাইপ পাতা হবে। মহকুমাশাসক অমিতাভবাবু বলেন, ‘‘এই খনির জল ব্যবহারের জন্য আমরা ইসিএলের কাছ থেকে নো-অবজেকশান পেয়েছি।’’

ইসিএলের এক আধিকারিক জানান, সামাজিক দায়িত্ব পালন প্রকল্পে সংস্থার তরফে খনির জল ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে। এর আগে সালানপুরের আলকুষায় এবং বারাবনির ইটাপাড়ায় এ রকম দু’টি জলভর্তি পরিত্যক্ত খোলামুখ খনির জল ব্যবহার করতে দেওয়া হয়েছে মহকুমা প্রশাসনকে। নতুন এই জল প্রকল্পটি নিয়ে সালানপুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি শ্যামল মজুমদারের বক্তব্য, ‘‘ওই এলাকায় জলের সমস্যা দীর্ঘ দিনের। যথেষ্ট জলের উৎস থাকলেও তা আগে কাজে লাগানো হয়নি। বর্তমান সরকার তা কাজে লাগিয়েছে। এ বার এলাকার বাসিন্দারা তার সুফল পাবেন।’’

ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০২ সালে এই খনি থেকে কয়লা তোলা বন্ধ হয়ে গিয়েছে। খনিটি প্রায় সাড়ে সাতশো মিটার লম্বা, সাড়ে তিনশো মিটার চওড়া ও প্রায় একশো মিটার গভীর। কয়লা তোলা বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এত বড় খনিগর্ভ জলে ভরে যায়। সেই থেকে খনিটি এই অবস্থায় পড়ে আছে। তবে মহকুমা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০৯ সালে এক বার এই খনির জল সেচের কাজে ব্যবহারে উদ্যোগী হয়েছিল পঞ্চায়েত সমিতি। সেই সময়ে রাজ্যের ক্ষুদ্র সেচ দফতরের কারিগরি সহায়তায় খনির জল পাম্পের মাধ্যমে তুলে পার্শ্ববর্তী দেড়শো একর জমিতে সরবরাহ করা হয়েছিল। প্রকল্পটির জন্য খরচ হয়েছিল প্রায় ৩৩ লক্ষ টাকা। উপকারও পেয়েছিলেন আশপাশের চাষিরা। রুক্ষ্ম জমিতে ধান, গম, সব্জি ফলতে শুরু করেছিল। কিন্তু ২০১১ সালের ১৩ অগস্ট প্রকল্পটি হঠাৎ বন্ধ হয়ে যায়। সেই অভিজ্ঞতা স্মরণ করে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আবার এই খনিতে প্রকল্পের উদ্যোগ হয়েছে। তবে তা স্থায়ী হয় কি না, সে দিকেই এখন তাঁদের নজর।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Salanpur water project Asansol ECL
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE