Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ডাক্তার নেই, ক্ষোভ অগ্রদ্বীপে

দরজার তালায় মরচে ধরেছে। ভিতরে কয়েকটা শয্যা, মেশিনপত্র ইতিউতি ছড়ানো।—অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে এক ঝলক দেখলে ‘ভূত বাংলো’ হিসেবে ভুল হতে পারে। সোমবার সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত মারা যান এক বৃদ্ধ। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভও দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ।

সোমবার অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

সোমবার অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে বিক্ষোভ। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কাটোয়া শেষ আপডেট: ০৪ অক্টোবর ২০১৬ ০২:৫৩
Share: Save:

দরজার তালায় মরচে ধরেছে। ভিতরে কয়েকটা শয্যা, মেশিনপত্র ইতিউতি ছড়ানো।—অগ্রদ্বীপ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে এক ঝলক দেখলে ‘ভূত বাংলো’ হিসেবে ভুল হতে পারে। সোমবার সেই স্বাস্থ্যকেন্দ্রে এসে চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত মারা যান এক বৃদ্ধ। এই অবস্থায় স্বাস্থ্যকেন্দ্রের হাল ফেরানোর দাবিতে বিক্ষোভও দেখালেন গ্রামবাসীদের একাংশ।

প্রায় ১০ বিঘে জমির উপরে তৈরি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির তিনটি ভবনের কোথাও ‘চিকিৎসা পরিষেবা’ মেলে না বলে দেখা গেল। কোথাও আবার ভবনের জানলাও ভাঙা। সেই জানলা দিয়ে অবশ্য কুকুরদের অবাধ যাতায়াত নজরে পড়ে। বছর তিনেক আগে নতুন ভবন তৈরি হলেও সেটি এখনও তালাবন্ধ। স্বাস্থ্যকেন্দ্রের ঢোকার মুখেই দেওয়ালে সাঁটা বিজ্ঞত্তি জানা দিচ্ছে ‘অনির্দিষ্ট কালের জন্য রাত্রীকালীন পরিষেবা বাতিল’। পরাণ দত্ত, মনোরঞ্জন রায়, চন্দন রাহাদের মতো গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ‘‘রাত কেন, দিনের বেলাতেও পরিষেবা মেলে না। বছরখানেক আগে চিকিৎসক ছিলেন। তিনি বদলির পরে সব ফাঁকা।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির উপরেই ২৫টি গ্রামের প্রায় হাজার পঞ্চাশেক বাসিন্দা নির্ভর করেন। এ দিন সকালে পূর্বস্থলীর বাসিন্দা, ৬৫ বছরের চিন্তা বিশ্বাস নামে এক জন চিকিৎসা করতে আসেন। কিন্তু তিনি কোনও চিকিৎসা পরিষেবা পাননি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। শেষমেশ বিনা চিকিৎসাতেই তাঁর মৃত্যু হয় বলে দাবি।

অথচ চিকিৎসক থাকার সময়ে ফি দিন প্রায় পাঁচশো রোগী এখানে আসতেন। বর্তমানে প্রাথমিক চিকিৎসা পরিষেবা পেতে একজন ফার্মাসিস্ট, দু’জন চতুর্থ শ্রেণির কর্মী এবং এক জন ঝাড়ুদারের উপরেই ভরসা করতে হয় বলে জানান মদন পাল, বদর শেখরা। স্থানীয় বাসিন্দা প্রিয়ব্রত ঘোষ, সম্রাট হাটুইদের অভিযোগ, ‘‘মাসতিনেক স্বাস্থ্য দফতরের দ্বারস্থ হয়েও হাল ফেরানো যায়নি স্বাস্থ্যকেন্দ্রটির।’’

এ দিন ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেন সিভিক ভলান্টিয়ারেরা। মহকুমা অতিরিক্ত মুখ্য স্বাস্থ্য অধিকর্তা কবিতা শাসমল অবশ্য জানিয়েছেন, ‘‘বিষয়টি খোঁজ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হবে।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

agitation doctor
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE