দিনের পর দিন ডাকঘরে এসে ফিরে যাচ্ছেন লোকজন। কিন্তু কাজ হচ্ছে না। কারণ, লিঙ্ক ফেলিওর।
জেলার আরও অনেক জায়গার মতোই কালনার আশপাশের বাসিন্দারা জেরবার এই সমস্যায়। তাঁদের অভিযোগ, ভোর থেকে এসে লাইন দিচ্ছেন অনেকে। তাতেও কাজ মিটছে না। কোনওদিন দু’ঘণ্টা, কোনওদিন আর একটু বেশি কাজ এগোতেই লিঙ্ক হাওয়া। ফলে ডাকঘর নিয়ে ক্ষোভ বেড়েই চলেছে। ডাকঘর চত্বরে মারামারির ঘটনাও ঘটেছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ভোর চারটে থেকেই চকবাজার এলাকার মুখ্য ডাকঘরের সামনে লাইন পড়ে যাচ্ছে। অনেকে অশক্ত শরীরেও ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে থাকছেন। রোদেও লাইন চলছে। তার মধ্যে লিঙ্ক না থাকায় আটকে যাচ্ছে নানা সঞ্চয় প্রকল্প বা অবসরকালীন টাকা সংক্রান্ত কাজ। গ্রাহকদের দাবি, এ বছরের গোড়া থেকেই ডাকঘরের সমস্ত কাজ অনলাইন হয়ে গিয়েছে। তারপর থেকেই হয়রানি বেড়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। গ্রাহকদের দাবি, কোনও দিন শুরু থেকেই লিঙ্ক থাকে না, আবার কোনও দিন কয়েকজন পরিষেবা পাওয়ার পরেই চলে যায় লিঙ্ক। ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করেও আর কাজ হয় না। ফলে প্রয়োজন মেটাতে কারও লেগে যাচ্ছে মাসখানেক। আবার কারও সপ্তাহ খানেক। বিশেষত, মুশকিলে পড়েছেন বয়স্ক গ্রাহকেরা। কালনা শহরের এক প্রবীণ বাসিন্দার কথায়, ‘‘জমানো টাকার সুদ থেকেই ওষুধ, দুধ, বাড়িভাড়া, বাজার খরচের টাকা আসে। কিন্তু টাকা তুলতে এসেই অসুস্থ হয়ে পড়ছি ইদানিং। এমনকী, লাইনে দাঁড়িয়ে ধাক্কা খেতে হচ্ছে, চলছে ঝগড়া অশান্তি।’’ কালনা মুখ্য ডাকঘরের আর এক গ্রাহক সুশান্ত গুইয়ের বক্তব্য, ‘‘দিনের পর দিন পরিষেবা পেতে এসে গ্রাহকদের হয়রানি বাড়ছে। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ ডাকঘরে আর টাকা জমাবেন না।’’
পরিষেবা না পাওয়ার অভিযোগ রয়েছে পূর্বস্থলী এলাকার ডাকঘরেও। গ্রাহকদের অভিযোগ, এই ডাকঘরটি এখনও কোর ব্যাঙ্কিং-এর আওতায় আসেনি। একটি নিদিষ্ট সার্ভারের মাধ্যমেই কাজকর্ম চলে। কিন্তু ওই সার্ভারের গোলমাল দেখা দেওয়াই ১৩ থেকে ২৭ এপ্রিল পর্যন্ত গ্রাহকেরা পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন। এলাকার বাসিন্দা প্রদীপ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য, ‘‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ জানানোর পর একটি বিশেষজ্ঞ দল এসে সমস্যা মিটিয়ে দেয়। নাহলে খুবই মুশকিলে পড়েছিলাম।’’ অন্যদেরও দাবি, একটা আধ ঘণ্টার কাজের জন্য এত দিন ধরে ঘুরছিলেন গ্রাহকেরা।
কালনা মুখ্য ডাকঘরের গ্রাহকদের দুর্ভোগের কথা স্বীকার করেছে কর্তৃপক্ষ। ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক শ্রীকান্ত ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘বিষয়টি কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছে। আশা করছি খুব তাড়াতাড়ি সমস্যা মিটবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy